বান্দরবানের সদর উপজেলা, পৌর এলাকা ও রুমা উপজেলায় লক ডাউন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বুধবার (১০জুন) দুপুর ১২টার পর থেকে এই লক ডাউন কার্যকর করতে নানা কার্যক্রম শুরু করেছে প্রশাসন। গত ৬জুন বান্দরবানের লামা উপজেলা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাকে রেড জোন ঘোষনা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। উক্ত দুই উপজেলায় লকডাউন অব্যাহত রয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার পৌর ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিল শেখর দাশসহ ১০জনের নমুনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এছাড়াও এরআগের দিন সোমবার বান্দরবান সদর ও রুমা উপজেলায় আরও ১৪জন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে বান্দরবান জেলায় মোট ৭১জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এঘটনায় বান্দরবান পাঁচ উপজেলা ও দুই পৌরসভা এলাকাকে রেড জোন ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন।
এঘটনায় মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন সদর উপজেলা, বান্দরবান পৌর এলাকা ও রুমা উপজেলাকে রেড জোন হিসেবে চিহিৃত করে লকডাউনের ঘোষনা দেন। উক্ত ঘোষিত লকডাউন বুধবার দুপুর ১২টার পর থেকে কার্যকরের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন।
বান্দরবান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন রেড জোন ঘোষিত এলাকায় প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, চিকিৎসক, মানবিক সহায়তা/ত্রান কার্যক্রম বাস্তবায়ন, জরুরী ঔষধ, চিকিৎসা উপকরণ, কৃষি উপকরণ ও পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই লক ডাউল পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে এর আগে বুধবার ভোর সকাল থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য হাট-বাজার ও দোকানপাটগুলোতে স্থানীয়দের উপচে পড়া ভীড় পড়ে যায়। লোকজনের কেনাকাটার ভীড় এতই তীব্র ছিল সকাল ১০টার মধ্যে কাঁচা শাক-সবজি শেষ হয়ে যায়। ১০টার পরে যারা বাজারে শাক-সবজি ক্রয় করতে এসেছ তাদের খালি হাতে বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে।
দুপুর ১২টার পর থেকে রেড জোন ঘোষিত এলাকাগুলোতে হাট-বাজার, দোকানপাট ও সকল ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। লোকজন চলাচল থাকলেও খুবই সীমিত। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে তেমন দেখা যায়নি। হাট-বাজার ও প্রধান সড়কগুলো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের টহল অব্যাহত রয়েছে।
এব্যাপারে বান্দরবান বাজারে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট রাজিব আসরাফ জানান, জেলা করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনের ঘোষিত লক ডাউন কার্যকর করতে তারা কাজ করছেন। দুপুর ১২টার পর থেকে দোকানপাট, সকল প্রকার যান চলাচল ও লোকজন চলাচল সীমিত পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
এবিষয়ে বান্দরবানে লক ডাউন কার্যকরে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিদুয়ানুল হালিম জানান, সম্প্রতি সময়ে করোন ভাইরাস সংক্রমন বান্দরবানে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে কাজ করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে শহরের যানচলাচল, দোকানপাট বন্ধ করে লোকজনের চলাফেরা সীমিত করা হয়েছে।
করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান সিভিল সার্জন ডা: অং সুই প্রু মারমা জানিয়েছেন, বান্দরবান সদরে সোমবার নতুন করে ১৪জন ও মঙ্গলবার ১০জন করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। এপর্যন্ত জেলায় ৭১জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ১৫জন।
স্থানীয় ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ঘোনারপাড়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ছৈয়দ আলমের ৭০বছরের বৃদ্ধা মা রাশেদা বেগমকে সোমবার হার্টের সমস্যা নিয়ে কক্সবাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় নমুনা সংগহ করে পরীক্ষা করলে তার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। কিন্তু সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর তার মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন