শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

নিয়মের বেড়াজালে মেসিরা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

ফুটবলপ্রেমীদের মোটামুটি মুখস্থ হয়ে গেছে ১১ জুন তারিখটি। হওয়ারই কথা। মাসের হিসাবে প্রায় তিন, দিনের হিসাবে ৯৩ দিন পর যে ফিরছে লা লিগা! অপেক্ষার অবসান হচ্ছে মেসি-সুয়ারেস-বেনজেমা-রামোসদের; স্পেন তো বটেই, সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদেরও।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে প্রায় তিন মাস স্থগিত থাকা স্প্যানিশ লা লিগা পুনরায় মাঠে ফিরেছে গতরাতেই। এদিন সেভিয়া ও রিয়াল বেতিসের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আবার চালু হয়েছে স্পেনের শীর্ষ ফুটবল আসর। খেলা শুরু হয় বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২টায়। তবে আসল লড়াইটা শুরু হবে আজ রাত থেকেই। দিবাগত রাত ২টায় পয়েন্ট তালিকার ১৮ নম্বরে থাকা রিয়াল মায়োর্কার মাঠে খেলতে নামবে লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। পরদিন রাত সাড়ে ১১টায় ঘরের মাঠে লেগানেসের মুখোমুখি হবে স্পেনের সফলতম ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। কেননা শিরোপা রেস যে এবারও বেশ জমিয়ে তুলেছে দুই চীরপ্রতিদ্ব›দ্বী।
গত ১০ মার্চে এইবার-রিয়াল সোসিয়েদাদ ম্যাচের পর করোনাভাইরাসের কারণে স্থগিত হয়েছিল লা লিগা। যার শিরোপা লড়াইটা থাকছে দুই বড় দল বার্সেলোনা ও রিয়ালের মধ্যেই। ২৭ ম্যাচে ১৮ জয় ও ৪ ড্রয়ে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনা মুকুট ধরে রাখার পথে ছুটছে। পিছু নেওয়া রিয়ালের পয়েন্ট ৫৬। ১৬ জয় ও ৮ ড্রয়ে মুকুট ফিরে পাওয়ার আশা ভালোভাবে বাঁচিয়ে রেখেছে জিনেদিন জিদানের দল। সেভিয়া (৪৭ পয়েন্ট), সোসিয়েদাদ (৪৬), গেতাফে (৪৬) ও আতলেতিকো মাদ্রিদের (৪৫) নতুন শুরু হবে মূলত ‘সেরা চারে’ থাকার লক্ষ্য নিয়ে। অবনমন অঞ্চলে ঘুরপাক খাচ্ছে মায়োর্কা, লেগানেস ও এস্পানিওল।
সেরা গোলদাতার দৌড়েও লড়াইটা স্পেনের দুই বড় দল বার্সেলোনা ও রিয়ালের ফরোয়ার্ডদের মধ্যে। ২২ ম্যাচে ১৯ গোল নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনার লিওনেল মেসি। ১২ টি অ্যাসিস্টও আছে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়ালের করিম বেনজেমার ২৬ ম্যাচে গোল ১৪টি, অ্যাসিস্ট ৬ টি। ১১টি করে গোল আছে বার্সেলোনার লুইস সুয়ারেস, ভিয়ারিয়ালের জেরার্দ মোরেনো, আলাভেসের লুকাস পেরেস মার্তিনেস ও লেভান্তের মার্তি সালভাদোরের। বাকি ১১ রাউন্ডে গোলের ধারাবাহিকতায় থাকলে দারুণ দুটি রেকর্ড এবারই নিজের করে নিতে পারেন মেসি। আথলেতিক বিলবাও কিংবদন্তি তেলমো সাররাকে পেছনে ফেলে সর্বোচ্চ সপ্তমবারের মতো জিতে নিতে পারেন স্পেনের সর্বোচ্চ গোলদাতা পিচিচি অ্যাওয়ার্ড। ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের এক ক্লাবের (সান্তোস) হয়ে গড়া ৬৪৩ গোলের রেকর্ডও ছাপিয়ে যেতে পারেন আর্জেন্টাইন তারকা। বার্সেলোনার হয়ে মেসির বর্তমান গোলসংখ্যা ৬২৭টি।
মাঝের দীর্ঘ বিরতির কারণে আঁটসাঁট সূচিতে খেলতে হবে দলগুলোকে। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে বাতিল করা হয়েছে ফরাসি লিগ ওয়ানের ২০১৯-২০ মৌসুম। তবে গেল মাসে নিয়মের কড়াকড়ি নিয়ে প্রথম শীর্ষ লিগ হিসেবে শুরু হয়েছে জার্মান বুন্দেসলিগা। লা লিগাও ফিরছে একই কায়দায়, নানা ধরনের বাধ্যবাধকতা নিয়ে। চলুন একটু জেনে নেই করোনা পরবর্তি ফুটবল কিভাবে চলবে!

* বৈশ্বিক মহামারির কারণে গেল ১২ মার্চ থেকে লা লিগার কোনো ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি।

* মোট ২৭ রাউন্ডের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অংশগ্রহণকারী ২০ দলের আরও ১১টি করে ম্যাচ বাকি। এক মাসের একটু বেশি সময়ের মধ্যে এই ম্যাচগুলো আয়োজন করে আসর শেষ করতে চায় লিগ কর্তৃপক্ষ।

* ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে লিওনেল মেসির বার্সেলোনা। ২ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে সার্জিও রামোসের রিয়াল।

* লা লিগার চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বার্সার আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মেসি। ১৯ গোল নিয়ে তালিকায় শীর্ষে অবস্থান তার। ১৪ গোল নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন রিয়ালের ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা।

* লিগের বাকি ম্যাচগুলো হবে দর্শকশ‚ন্য স্টেডিয়ামে। পাশাপাশি নতুন কিছু স্টেডিয়ামেরও দেখা মিলবে। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সংস্কার কাজ চলায় মৌসুমের বাকি সময়টাতে আলফ্রেড ডি স্টেফানো ট্রেনিং গ্রাউন্ডকে ঘরের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করবে রিয়াল।

* জার্মান বুন্দেসলিগা ও ইতালিয়ান সিরি আ’র মতো লা লিগাতেও বদলি খেলোয়াড় তিন জন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ জন করা হয়েছে।

* ম্যাচ শুরুর আগের ২৪ ঘন্টার মধ্যে খেলোয়াড়দের করোনভাইরাস পরীক্ষা করাতে হবে। সফরকারী দল সামাজিক দ‚রত্ব বজায় রাখার স্বার্থে দুটি বাসে করে স্টেডিয়ামে যাবে। তারা বিশেষ বিমান এবং হোটেল ব্যবহার করবে। স্বাগতিক খেলোয়াড়রা তাদের নিজস্ব গাড়িতে করে মাঠে উপস্থিত হবেন।

* প্রতিটি ম্যাচের আগে উভয় দলের খেলোয়াড়দের তাপমাত্রা মাপা হবে এবং তারা মাস্ক ও গ্লাভস পরে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করবেন।

* খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নিরাপত্তাকর্মী, ম্যাচ অফিশিয়াল, গণমাধ্যমকর্মী ও টেকনিশিয়ান মিলিয়ে স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ ২৭০ জন ঢুকতে পারবেন।

* মাঠে থুতু ফেলা ও গোল উদযাপনে আলিঙ্গন করার ক্ষেত্রে কোনো শাস্তির ব্যবস্থা থাকছে না। অর্থাৎ মাঠে এ ধরনের আচরণ করলেও ফুটবলারদের হলুদ কার্ড দেখতে হবে না।

* টেলিভিশনের পর্দায় স্পেনের বাইরের যেসব দর্শক খেলা উপভোগ করবেন, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফুটবল মাঠের প্রকৃত আবহ যেন পাওয়া যায় সেজন্য ‘ভার্চুয়াল’ দর্শক ও শব্দ সংযোজন করে ম্যাচগুলো সম্প্রচার করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন