মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। মার্কিন রিপোর্টে তা-ই বলা হয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের পাচারের ঘটনাগুলোর তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের তাগিদ দিয়েছে ওয়াশিংটন। রয়টার্স জানিয়েছে, মানবপাচার বিরোধী যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক প্রতিবেদন বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশ পেয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও তার মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প যৌথভাবে এটি উদ্বোধন করেন। আভ্যন্তরীণ এবং বিদেশে বিভিন্ন মানবপাচারের ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশিদের জড়িত থাকার কারণে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় গত তিন বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার রিপোর্টে 'নজরদারি' তালিকায় ছিল বাংলাদেশ। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর তার ২০২০ সালের ট্র্যাফিকিং ইন পারসনস (টিআইপি) প্রতিবেদনে এ বছর মানবপাচার রোধে বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বলা হয়, নজরদারি বা ওয়াচলিস্ট থেকে উন্নীত হয়ে দ্বিতীয় স্তরে এসেছে বাংলাদেশ।
এদিকে মার্কিন প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সাধারণত এমন অন্য প্রতিবেদন নিয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের প্রতিক্রিয়া পেতে বিলম্ব, তীর্যক মন্তব্য বা সমালোচনা করলেও এবারের বিষয়টি পুরোপুরি ব্যতিক্রম। তাৎক্ষণিক এক ভিডিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, টায়ার টু ওয়াচ লিস্টে চলে যাওয়ায় আমাদের অনেক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। আমরা মার্কিন এইড এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও আইএমএফ এর সহজশর্তের ঋণ থেকে বঞ্চিত হতাম। সুখের খবর আমাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব আমরা মানবপাচার রোধে জিরো টলারেন্স দেখানোর কারণে। আগামীতে আমাদের আরও অগ্রগতি হবে।
মার্কিন রিপোর্টে চারটি ক্যাটাগরিতে দেশগুলোকে ভাগ করা হয়। ক্যাটাগরিগুলো হচ্ছে- প্রথম স্তর, দ্বিতীয় স্তর, নজরদারি বা ওয়াচলিস্ট এবং তৃতীয় স্তর। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে কমপক্ষে ৪ হাজার ৪০৭টি মানবপাচার বিষয়ক মামলা ছিল, যা ২০১৯ সালের শেষের দিকে তদন্ত বা বিচারের বিচারাধীন ছিল এবং দন্ডিত হওয়ার হার ১.৭ শতাংশ। ২০১৮ সালে মোট মামলা হয় ৫৪৭টি আর পরের বছর মামলা হয় ৬৪৪টি।
লিবিয়ায় ৩০ জন অভিবাসী শ্রমিককে হত্যার পর মানবপাচারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযানে অন্তত ৫০ জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি উঠে আসে মার্কিন রিপোর্টে। গ্রেপ্তারকৃতরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশে পাঠানো নামে মানুষ থেকে অর্থ আদায় করতো। তবে রোহিঙ্গাদের পাচার নিয়ে 'শত শত বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন' তদন্তের আহবান করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে নৌকা বোঝাই করে মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গা পাচারের বিষয়টি। মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করা অনেক শরণার্থীকে জিম্মি করা হচ্ছে এবং তাদের আত্মীয়দের মুক্তপণ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন