করোনা এখন বৈশ্বিক সঙ্কট। মানব জাতি তার স্মরণকালে এ ধরনের সঙ্কটে আর পড়েছে বলে জানা নেই। আজ কয়েক মাস যাবত পৃথিবী বলতে গেলে পুরাই থেমে আছে।
কোভিড-১৯ এর মতো অভিনব সংক্রামক ব্যাধি মানব জীবনকে চরম হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। জীবন বাচাতে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছলছে, সুরক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করছে। আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রেখে জরুরি সতর্কতা অবলম্বন ধর্মেরও বিধান। বিশ্বজুড়ে দেশে দেশে সুরক্ষাবস্তু ও সামগ্রী মানুষ ব্যবহার করছে। কিন্তু আমাদের দেশের মতো মিথ্যা প্রতারণা বা জীবনের ঝুঁকির সামনে আর কোনো জাতিকে পড়তে হয়েছে কি না জানা নেই। আন্তর্জাতিক মানের কেএন-৯৫ মাস্ক কেনার দুর্নীতি থেকে এই মাস্ক নকল তৈরি পর্যন্ত কি না হয়েছে বাংলাদেশে? এরপর স্যানিটাইজার নিয়ে নকলের খেলা শুরু হয়।
মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, তোমরা আন্যায়ভাবে একে অপরের অর্থ সম্পদ গ্রাস করো না। (সূরা নিসা : আয়াত ০১)। নবি করিম (সা.) বলেছেন, যে প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়। (মুসলিম)।
নকল মাস্ক ব্যাবহার করে যখন একজন মানুষ আক্রান্ত হয়, যখন ত্রুটিযুক্ত পিপিই ব্যাবহার করায় একজন ডাক্তার মারা যান, তখন এর গুনাহের দায় কে নিবে? লিকুইড সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্রান্ডের হেক্সিসল, ডেটল আর স্যাভলন যখন নকল করে বিক্রি হয় তখন মানুষ কিভাবে রোগ বালাই ও জিবানু থেকে রক্ষা পাবে? বিশেষ করে চলমান কোভিড-১৯ এর মহামারির সময় বিপন্ন মানুষকে প্রতারিত করা কতটুকু আমানবিক তা চিন্তাও করা যায় না। এরকম আপরাধ নিঃসন্দেহে মানুষের জীবন নিয়ে খেলা। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে মানবহত্যার শামিল।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন, যে ব্যক্তি জেনেশুনে একজন মানুষ কে হত্যা করল সে যেন গোটা মানবজাতিকে হত্যা করল .......। (সূরা মায়েদা : আয়াত ৩২)। কেউ কাউকে ইচ্ছাকৃত হত্যা করলে এর পরিণাম কি, এ সম্পর্কে বলতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, এর শাস্তি আনন্ত কাল জাহান্নামে থাকা, যেখান থেকে কোনোদিন তাকে বের করা হবে না। (সূরা নিসা : আয়াত ৯৩)।
বিষ খাইয়ে মানুষ মারা আর খাদ্যে বা ওষুধে ভেজাল দিয়ে মানুষ মারার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। খাদ্যে ভেজাল বাংলাদেশে খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। করোনার এ সময় খোলা বাজারে কিছু ওষুধ, মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি পাওয়া যাচ্ছে যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু লোক ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক ইত্যাদি বিক্রি করছে বলেও মিডিয়ায় এসেছে। রঙ মেশানো পানি স্যানিটাইজার বলে বিক্রি করছে কেউ কেউ। এসব কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
সবাইকে একদিন আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে, এ কথাটি মাথায় থাকলে এমন নীরব খুন থেকে মানুষ বাঁচতে পারবে। আল্লাহর ভয় ছাড়া মানুষ কোনোদিন প্রকৃত দায়িত্বশীল মানুষ হতে পারে না। জিবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাই আমাদের সকলের আল্লাহভিরু হওয়ার বিকল্প নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন