মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

নবী না মানে যারা

মুনশী আবদুল মাননান | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

মরমী কবি লালন শাহের একটি গানে আছে:
‘নবী না মানিল যারা
মোয়াহেদ কাফের তারা
সেই মোয়াহেদ দায়মাল হবে
বেহিসাবে দোজখে যাবে।’
এ কথার মর্মার্থ হলো: একক সত্তা হিসাবে আল্লাহকে মানলেই হবে না, তাঁর নবী-রাসুলদের মান্য করা ঈমানের অপরিহার্য শর্ত। কেউ আল্লাহকে মানল; কিন্তু তাঁর নবী-রাসুলদের মানলোনা, তাকে ঈমানদার বা মুসলমান বলা যাবে না। আখেরাতে তার ও কাফেরদের পরিণতি হবে অভিন্ন।

একেশ্বরবাদী ব্রাহ্ম ধর্মের প্রবর্তক রাজা রামমোহন রায় ‘তুহফাত-উল-মুআহহিদীন’ বা ‘একেশ্বর বিশ্বাসীদের প্রতি’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা প্রণয়ন করে তাঁর ধর্মমত ব্যক্ত করেন। তাঁর এই একেশ্বরবাদী ধর্মমত পবিত্র কোরাআন থেকে নেয়া হলেও তাতে মহানবী (সা.)-এর কোনো স্থান নেই। এরই প্রতিবাদ স্বরূপ লালন শাহ ওই গানে বলেন, যারা মহানবী (সা.)-কে মানে না, তাদের স্থান হবে দোজখে। বলা দরকার, লালন শাহ ও রামমোহন সমসাময়িক, এমনকি তাদের জন্ম সাল এক- ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দ। ফলে রামমোহনের নব্য ধর্মমত সম্পর্কে লালন শাহ সম্যক অবহিত ছিলেন বলেই মনে করা হয়। তার এ প্রতিবাদ ছিল যথাযথ।
ইসলামে আল্লাহকে লা-শরীক বলে স্বীকার করা এবং তাঁর আনুগত্য ও মান্য করার সঙ্গে সঙ্গে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে তাঁর বান্দাহ ও রাসুল বলে স্বীকার করা এবং তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা বা তাকে মান্য করাকে আবশ্যক করে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ আছেন, রাসুল (সা.) নেই, সেটা ইসলাম হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেছেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসুলের আনুগত্য করো। অনন্তর তোমাদের আমলসমূহ বরবাদ করো না। (সুরা মুহম্মদ: ৩৩)। বলাই বাহুল্য, আল্লাহ এবং রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য না করলে কোনো আমলই আল্লাহর কাছে গৃহীত ও ফলপ্রসূ হবে না। আনুগত্য শব্দটি অনুগত হওয়া, মান্য করা, মেনে চলা, আদেশ-নিষেধ পালন করা প্রভৃতি অর্থে ব্যবহৃত হয়। ইসলামের পরিভাষায়, আল্লাহ-রাসুল (সা.)-কে নিরঙ্কুশভাবে মেনে নিয়ে তাদের হুকুম বা আদেশ-নিষেধ মেনে চলাকে আনুগত্য বুঝায়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে: আর আল্লাহ ও রাসুলের হুকুম মেনে নাও। আশা করা যায়, তোমাদের ওপর দয়া করা হবে। (সুরা আল ইমরান: ১৩২)।

মহা মহিম আল্লাহ মানবজাতিকে নির্দেশ দিয়েছেন এই বলে, (হে রাসুল) আপনি বলুন, হে মানবজাতি, আমি তোমাদের জন্য ওই আল্লাহর তরফ থেকে রাসুল, যিনি আসমান ও জমিনের বাদশাহীর মালিক। তিনি ছাড়া আর কোনো মালিক নেই। তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। তাই ঈমান আনো আল্লাহর ওপর এবং ওই উম্মী নবীর প্রতি, যিনি তাঁর রাসুল, যিনি আল্লাহ ও তাঁর বাণীকে মানেন এবং তোমরা তাঁর অনুসরণ করো। আশা করা যায়, তোমরা হেদায়েত পাবে। (সুরা আরাফ: ১৫৮)।

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করলো সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি আমার অবাধ্য হলো, সে আল্লাহর অবাধ্য হলো। (ইবনে মাজাহ)।
আল্লাহতায়ালা ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্য যারা করবে না তাদের পরিণতি সম্পর্কে বলা হয়েছে: যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, যেখানে তারা থাকবে চিরকাল। (সুরা জিন: ৩৩)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
মনিরুজ্জামান ৮ জুলাই, ২০২০, ১:৩৬ এএম says : 0
ব্যতিক্রমধর্মী একটি লেখা। খুব ভালো লাগলো
Total Reply(0)
রফিক ৮ জুলাই, ২০২০, ১:৩৬ এএম says : 0
তথ্যভিত্তিক এই সুন্দর লেখাটির জন্য লেখক মুনশী আবদুল মাননান সাহেবকে অসংখ্য মোবারকবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)
শফিক রহমান ৮ জুলাই, ২০২০, ১:৩৭ এএম says : 0
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করলো সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি আমার অবাধ্য হলো, সে আল্লাহর অবাধ্য হলো।
Total Reply(0)
জান্নাতুল নাঈম মনি ৮ জুলাই, ২০২০, ১:৩৮ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদের সবাইকে নবী (স.) -এর দেখানো পথে চলার তৌফিক দান করুক।
Total Reply(0)
কামরুজ্জামান ৮ জুলাই, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
আমাদের সকলের উচিত নবীজীর প্রতিটি কথা মেনে তার প্রিয় উম্মত হওয়ার চেষ্টা করা।
Total Reply(0)
Monzoor ৮ জুলাই, ২০২০, ৯:০৯ এএম says : 0
Need to make sure - believe him as a Messenger (Peace Be Upon Him) not to worship him
Total Reply(0)
saif ৮ জুলাই, ২০২০, ১০:০৬ এএম says : 0
আল্লহ সন্মানিত লেখক সাহেব এনবং ইনকিলাব সংশ্লিষ্ট সকলকে এর উত্তম প্রতিদান অবশ্যই দেবেন। খুবই গুরুত্ব পূর্ন ও মহা মুল্যবান এই লেখা যা মুসলমান হওয়ার জন্য যেমন জরুরী তেমনি মুসলমান থাকার জন্যও অত্যান্ত জরুরী। আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের সকলকে বোঝার ও মানার তৌফিক প্রধান করুণ।
Total Reply(0)
মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান ১০ জুলাই, ২০২০, ১১:১৩ এএম says : 0
লেখক যথাযথ বলেছেন । কারণ ইমানের মূল হল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদূর রসুল্ল্লাহ ( স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা)
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন