মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের আসল পরিচয়

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৬ এএম, ১৯ জুলাই, ২০২০

‘ইয়াহুদী’ শব্দটি ‘হুদ’ শব্দ হতে গৃহীত। যার অর্থ তাওবাহ করা, অনুশোচনা করা। অথবা ইয়াহুদী শব্দটি ‘ইয়াহুদা’ শব্দ হতে গৃহীত। ইয়াহুদা ছিলেন হযরত ইউসুফ (আ.)-এর ভাই। বনী ইসরাঈলের একজন সদস্য। সাধারণত : সকল বনী ইসরাঈলের ওপর শব্দটির প্রয়োগ হয়ে থাকে। লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, বণী ইসরাঈলের অসদাচরণের কথা আল কোরআনে ৪৯ বার উল্লেখ করা হয়েছে। এবং ইয়াহুদী শব্দটি কোরআনুল কারীমে ৯ বার উল্লেখ করা হয়েছে। এতে করে এই সম্প্রদায়ের স্বভাব চরিত্র ও আল্লাহ দ্রোহীতার ফিরিস্তি এতই দীর্ঘ যে, কালের খাতায়, ইতিহাসের পাতায় তারা একটি অভিশপ্ত সম্প্রদায় বলে চিরকাল চিহ্নিত হয়ে আছে। এই সম্প্রদায়ের লোকেরা পাঁচ শতাধিক নবী ও পয়গাম্বর হত্যা করেছে। নবী ও পয়গাম্বরদের হত্যাকারীদের তালিকায় ইয়াহুদীরা নিজেদের অবস্থানকে মজবুত করে ধরে রেখেছে। শুধু তাই নয়, শেষ যমানায় খালিফাতুল্লাহ আল মাহদী (আ.)-এর সাথে যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর ইয়াহুদীদের সকল অপতৎপরতার চিরঅবসান ঘটবে। (ইনশাআল্লাহ)।

ইয়াহুদীগণ তাদের ধারণা মতে হযরত মূসা (আ.)-এর অনুসারী। তাওরাত তাদের আসমানীগ্রন্থ। হযরত মূসা (আ.)-এর কালে তাদেরকে বনী ইসরাঈল বলা হতো। হযরত মূসা (আ.) তাদেরকে ফিরাউনের কবল হতে উদ্বার করেছিলেন। তারা বারটি দলে বিভক্ত ছিল। তারা সর্বদাই হযরত মূসা (আ.) ও হযরত হারূন (আ.)-এর বিরোধীতায় বদ্ধপরিকর ছিল। মূল তাওরাত গ্রন্থকে তারাই বিকৃত করেছিল এবং নিজেদের মনগড়া তাওরাত গ্রন্থ রচনা করেছিল। তবে, কোন্ সময় হতে তারা ইয়াহুদী নামে আখ্যায়িত হলো এ সম্পর্কে নিশ্চিতরূপে কিছু বলা যায় না। ইয়াহুদীরা তাদের মনগড়া ও বানোয়াট ধর্ম মতে বেশকিছু অদ্ভুত ও অভিনব বাতিল বিশ্বাস লালন করে থাকে।

যেমন : (ক) ইয়াহুদীরা বলে, নাসারাদের কোনো মূল ধর্ম নাই (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১১৩)। (খ) ইয়াহুদী ও নাসারাগণ বলে থাকে, আমরা আল্লাহর পুত্র এবং তাঁর প্রিয় পাত্র। (সূরা মায়িদাহ : আয়াত ১৮)। (গ) ইয়াহুদীরা বলে আল্লাহর হাত বখিলীতে পূর্ণ। (সূরা মায়িদাহ : আয়াত ৬৪)। (ঘ) ইয়াহুদীরা বলে যে ওজায়ের আল্লাহর পুত্র। (সূরা তাওবাহ : আয়াত ৩০)। (ঙ) হযরত ইব্রাহীম (আ.) ইয়াহুদী ছিলেন না, নাসারও ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন সরলপন্থী মুসলমান, তিনি অংশীবাদী ছিলেন না। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ৬৭)।

(চ) এই পৃথিবীতে ইয়াহুদী না থাকলে এই দুনিয়ার সকল বরকত ও কল্যাণ তুলে নেয়া হতো। সূর্য আচ্ছাদিত হয়ে পড়ত। বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ হয়ে যেত। তাদের ধারণায় অইয়াহুদীদের তুলনায় ইয়াহুদীরা এতই উত্তম, যেমন মানুষ অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় উত্তম। ইয়াহুদী নয় এমন ব্যক্তির সাথে ইয়াহুদীদের বিনয়-নম্র আচরণ নিষিদ্ধ। বরং ইয়াহুদী নয় এমন ব্যক্তির সাথে নম্র-ভদ্র ব্যবহার করা সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। পৃথিবীর সকল ধর্ম ভান্ডার ইয়াহুদীদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এটা তাদের অধিকার। সুতরাং যেভাবেই হোক পৃথিবীর সম্পদ হস্তগত করা ইয়াহুদীদের জন্য বৈধ। আল্লাহপাক শুধু ইয়াহুদীদের উপাসনা কবুল করেন। (আল আদইয়ান ওয়াল ফিরাক : উদ্ধৃতি আল আকীদাতুল হানাফিয়্যাহ : পৃষ্ঠা ১৪০)।

(ছ) তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী নবীগণ নিষ্পাপ নন। বরং তারাও আল্লাহর ফাঁদে আটকা পড়েন। (আল আকীদাতুল হানাফিয়্যাহ : পৃষ্ঠা ১৪১)। (জ) ইয়াহুদীদের ধারণায় দাজ্জাল হবে ন্যায়পরায়ণ শাসক। তাঁর আগমনের পর সারা বিশে^ তার ক্ষমতা ও রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। (আল আদইয়ান ওয়াল ফিরাক : পৃষ্ঠা ১৪০)। (ঝ) ইয়াহুদীরা হযরত ঈসা (আ.) ও বিশ^নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর নাবুওয়্যাত স্বীকার করে না, আল কুরআন মানে না। হযরত মারইয়াম (আ.)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে। শুধু তাই নয়, হযরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে তাদের ধারণা হলো এই যে, তাঁকে শূলিতে চড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। (আল আকীদাতুল হানাফিয়্যাহ : পৃষ্ঠা ১৪১)। (ঞ) তারা এই ধারণাও পোষণ করে যে, আল্লাহপাক আসমান যমিন সৃষ্টি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। কাজেই সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম নিতে বাধ্য হন। (আল আদইয়ান ওয়াল ফিরাক : পৃষ্ঠা ১৪২)।

মোটকথা, এ জাতীয় আরও অসংখ্য ভ্রান্ত আকীদা তাদের মনগড়া ধর্মের অঙ্গ। ইয়াহুদীরা আহলে কিতাব নামধারী হলেও এসকল ভ্রান্ত আকিদা বিশ্বাসের কারণে তাদেরকে আল কোরআনে কাফির ও মুশরিক বলে গণ্য করা হয়েছে এবং কোরআন মাজীদের বিভিন্ন যায়গায় ইয়াহুদীদের এসকল আকীদা বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করা হয়েছে।
যেমন : (ক) হে আহলে কিতাব কেন তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত কর এবং সত্য গোপন করছ? অথচ তোমরা জান। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ৭১)। (খ) হে আহলে কিতাব! তোমরা নিজেদের ধর্মে সীমা অতিক্রম করো না, এবং আল্লাহ সম্বন্ধে সত্য ছাড়া উক্তি করো না। (সূরা নিসা: আয়াত ১৭১)। সুতরাং বর্তমান বিশে^র প্রতিটি বুঝ-জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তির উচিত মূল সত্যকে উপলদ্ধি করে তদনুসারে আমল করা। অন্যথায় আমও যাবে, ছালাও হারাবে। এতে কোনোই সন্দেহ নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
মেহেদী ১৯ জুলাই, ২০২০, ১:০০ এএম says : 1
আমরা যখন দেখি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে একজন জনসংখ্যা কমলো! বিধর্মীরা তখন দেখে দেশে একজন ঈমানদার কমলো!
Total Reply(0)
হাসান মুনাব্বেহ সাআদ ১৯ জুলাই, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
হে আল্লাহ এই অভিশপ্ত জাতি হতে আমাদের হেফাজত করো।
Total Reply(0)
দর্শন ই ইসলাম ১৯ জুলাই, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
ইহুদিদের থেকে সবসময় দূরে থাকতে হবে। এরা ‍মুসলিমদের প্রকাশ্য শত্রু।
Total Reply(0)
কামাল ১৯ জুলাই, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
হে আল্লাহ তুমি ইহুদিদেরহাত থেকে মুসলিমদের হেফাজত করো।
Total Reply(0)
Md Ibrahim ১৯ জুলাই, ২০২০, ৫:৩৪ এএম says : 0
হে আল্লাহ আপনি এই ইয়াহুদী এবং নাসারাদের কবল হতে তামাম বিশ্বের মুসলমান নর-নারীকে হেফাজত কর।।
Total Reply(0)
Mzaman ১৯ জুলাই, ২০২০, ৭:৪৭ এএম says : 0
Musrik Kara Tader porichoy ki?ader 1ti Lekha asha kori.
Total Reply(0)
aklasur rahman ১৯ জুলাই, ২০২০, ৮:৪৪ এএম says : 0
আলোচনাটি চমৎকার সুন্দর হয়েছে।
Total Reply(0)
md. Younus biswas ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০৪ পিএম says : 0
আল্লাহর অভিশপ্ত জাতি, এই অভিশপ্ত ইয়াহুদিরা, এদের ধ্বংস অনিবার্য, দাজ্জাল কে যুদ্ধের মাধ্যমে ইমাম মাহাদী আলাই সালাম পরাজিত করবেন| ফিলিস্তিনিদেরকে নির্মম অত্যাচার করে এদের ভূমি জবরদখল করেছে| এই ইয়াহুদী বাদ মানবতার দুশমন|মুসলমান নামধারী মুনাফিক দের কারণে ইয়াহুদিরা এখনো টিকে আছে|
Total Reply(0)
তানভীর এলাহী মজুমদার ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:৫৪ পিএম says : 0
ইয়াহুদী জাতি মুসলমানদের জন্য চ্যালেঞ্জিং এবং প্রকাশ্য শত্রু। এই জাতি গোটা বিশ্বের মানবতার জন্য বিশাল এক সমস্যার নাম।
Total Reply(0)
নিসারুল ইসলাম ২০ জুলাই, ২০২০, ১২:১৩ এএম says : 0
কুরআনের বাণী কি মিথ্যা হতে পারে ? ইহুদীরা সত্যিই অভিশপ্ত জাতি । মুসা (আঃ)-এর বিদায়ের পরে এভাবেই তাদেরকে বিতাড়িত জাতি হিসেবেই থাকতে হয়েছে । গত প্রায় দুই হাজার বছর ধরে তাদের কোন নির্দিষ্ট বাসস্থান ছিলোনা । পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকায় ঘৃণিত সম্প্রদায় হিসেবে ঘুরে বেরিয়েছে । ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে কুটিল বৃটিশরা মুসলিমদের ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে এই ঘৃণ্য সম্প্রাদায়কে ফিলিস্তিনে পুনর্বাসন করে । তাদেরকে আবারও বিতাড়িত হতেই হবে, আপনারা নিশ্চিত থাকুন ।
Total Reply(0)
Shoyeb Akhter ২০ জুলাই, ২০২০, ৪:৪৩ পিএম says : 0
হে আল্লাহ যে আমাকে দুর্বল পেয়ে তার শক্তি প্রয়োগ করেছে তাকে তুমি তোমার শক্তি দেখে দিও। ফিলিস্তিন!!!!
Total Reply(0)
তামান্না আক্তার স্মৃতি ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:২২ পিএম says : 0
এই বনী ইসরায়েলকেই আল্লাহ তায়ালা ৪০ বছর বেহেশতী খাবার মান্নাস সালুয়া খাওয়াইছেন,কিন্তু বেইমান ইয়াহুদিরা রবের সঙ্গে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন