আল্লাহতাআলা নিজ অনুগ্রহে বান্দাদের দান করেছেন ফজিলতপূর্ণ বিভিন্ন দিবস-রজনী। বছরের কোনো কোনো মাস, দিন বা রাতকে করেছেন ফজিলতপূর্ণ ও বৈশিষ্ট্যমন্ডিত।
যাতে এগুলোকে কাজে লাগিয়ে বান্দা ক্ষমা লাভ করতে পারে, নেক আমলে সমৃদ্ধ হতে পারে এবং আল্লাহর প্রিয় হতে পারে। এর মধ্যে যিলহজ মাস অন্যতম প্রধান ফজিলতপূর্ণ মাস। এ মাসের প্রথম দশককে আল্লাহ তাআলা করেছেন বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। এ দিনগুলোতেই হজের মৌলিক আমল সম্পাদিত হয়। দশ যিলহজ সারা বিশ্বের মুসলিমগণ কোরবানি করেন। এ দিনগুলোর নেক আমল আল্লাহ তাআলার নিকট অধিক প্রিয়। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর নিকট যিলহজের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই।
সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও (এর চেয়ে উত্তম) নয়? তিনি বললেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে হাঁ, সেই ব্যক্তির জিহাদ এর চেয়ে উত্তম, যে নিজের জান-মাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য বের হয়েছে। অতঃপর কোনো কিছু নিয়ে ঘরে ফিরে আসেনি। (আবু দাউদ : ২৪৩৮; সহীহ বুখারী : ৯৬৯)।
এ মাসের সবচেয়ে প্রধান আমল হল হজ। এ বছর করোনা সঙ্কটের কারণে হজ আদায় যদিও সীমিত করা হয়েছে, কিন্তু হজের আবেদন তাতে বিন্দুমাত্র হ্রাস পায়নি। হজের ব্যাপারে আল কোরআন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই গৃহের হজ করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য। আর যে এই নির্দেশ পালন করতে অস্বীকার করবে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি সামান্যও মুখাপেক্ষী নন। (সূরা আলে ইমরান : ৯৭)।
সুতরাং যাদের ওপর হজ ফরজ হয়েছে এবং যারা হজে যেতে পেরেছেন, তাদেরকে মোবারকবাদ; আল্লাহ তাদের মাবরুর হজ নসীব করেন। কিন্তু যাদের ওপর হজ ফরজ হওয়ার পরেও এই ভয়াবহ সঙ্কটের কারণে যেতে পারেনি তাদের সুযোগ হওয়া মাত্রই তা আদায় করে নিতে হবে। আর অলসতা বা অন্য কোনো কারণে যারা এখনও হজে যাননি বা যাওয়ার নিয়ত করেননি আজই হজের নিয়ত করা উচিত।
লক্ষ্য করুন, উপরের আয়াতের শেষে আল্লাহ কী বলেছেন, আর যে এই নির্দেশ পালন করতে অস্বীকার করবে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি সামান্যও মুখাপেক্ষী নন। আরো শুনুন ওমর রা. কী বলেছেন। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও হজ করল না তার ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করা আর খ্রিস্টান হয়ে মৃত্যুবরণ করা সমান কথা। (তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৮৪ (সূরা আলে ইমরান ৯৭ নং আয়াতের অধীনে)।
সুতরাং আর দেরি নয়; এখনই নিয়ত করুন ও পরিস্থিতি ভালো হলে প্রথম সুযোগেই হজে যাওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করুন। কারণ, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা দ্রুততর সময়ের মধ্যে ফরজ হজ আদায় করো। কেননা তোমাদের কেউই একথা জানে না যে, আগামীতে তার ভাগ্যে কী আছে। (মুসনাদে আহমাদ : ২৮৬৭)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন