এমনিতেই চামড়ার বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। তার উপর প্রতিবার ভরা মৌসুমে নানা সমস্যা সংকট ভর করে। এবারও চামড়া বাজারে বিরাজ করছে দারুণ অস্থিরতা। কোনভাবেই মন্দাভাব কাটছে না। কোরবানি থেকেই মূলত সিংহভাগ চামড়ার চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যারা মাঠ থেকে চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন। তাদের মন ভালো নেই। শিল্পটির সঙ্গে জড়িত থাকবে কী না তা নিয়েও ভাবনা বাসা বেধেছে ক্ষুদে ব্যবসায়িদের মধ্যে।
দেশের অন্যতম চামড়ার বড় হাট যশোরের রাজারহাটের চামড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন মুকুল জানান, শুধু যশোর নয় সারা বাংলাদেশের শত শত ক্ষুদে চামড়া ব্যবসায়িরা কোটি কোটি টাকা পাওনা আদায়ে ঢাকার হাজারীবাগে ট্যানারী মালিকদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন বেশ কয়েকদিন যাবত। কোন টাকা দিচ্ছেন না ট্যানারী মালিকরা। ক্ষুদে ব্যবসায়িরা রয়েছেন নগদ টাকার সংকটে।
তার কথা, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টাকা পাননি ক্ষুদে ব্যবসায়িরা। চামড়া বাজারে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। অথচ ট্যানারি মালিকরা ব্যাংক ্ঋণ নিয়ে অন্যখাতে টাকা লগ্নি করে থাকেন। সরকার কাঁচা চামড়া ক্রয় করে রফতানির উদ্যোগ নিয়েছে। এটি যুগোপযোগি সিদ্ধান্ত। এটি হলে চামড়া শিল্পের সাথে জড়িত লাখ লাখ মানুষ বাঁচবে। চামড়া শিল্পে ফিরে আসবে শৃঙ্খলা। এবার ঢাকায় গরুর চামড়া স্কয়ার ফুট ৩৫টাকা ও ঢাকার বাইরে ২৮টাকা, ছাগলের চামড়া ঢাকায় স্কয়ার ফুট ১২টাকা ও বাইরে ১০টাকা লবনযুক্ত চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকার হাজারীবাগে পাওনা টাকার জন্য ধর্ণা দেওয়া ক্ষুদে ব্যবসায়ি আসমত মিয়া জানালেন, এবারও বিপদে। টাকা আদায় করতে পারছি না। তার কথা, বগুড়া, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্নস্থানের ক্ষুদে ব্যবসায়িরা বসে আছেন বকেয়া টাকা আদায়ে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ভারতের চামড়া ব্যবসায়িরা চামড়া বাজারের অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে চামড়া সংগ্রহের চেষ্টা করছে। সীমান্ত সূত্রও জানায়, গরু পাচারে ভারতের ব্যবসায়িরা সুবিধা করতে পারেনি। তারা চামড়ার দিকে এবার নজর দিয়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ি নজরুল ইসলাম জানালেন, শুধুমাত্র যশোরের ব্যবসায়ীদের ট্যানারী মালিকদের কাছে প্রায় ১৫কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। যশোর অঞ্চল থেকে ছোট বড় ও ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা ঢাকায় ঘুরে টাকা না পাওয়ায় কোরবানির চামড়া সংগ্রহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার যশোরের রাজারহাটের চামড়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে কোরবানির চামড়া ক্রয় বিক্রয়ের কোন প্রস্ততি এখনো নেই। শনিবার কোরবানির দিনে বাড়ি বাড়ি থেকে চামড়া সংগ্রহকারীদের খুব একটা নেই আনাগোনা চামড়া বাজারে। এক ধরনের হা-হুতাশ ও নীরবতা চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন