মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ওসি প্রদীপ বন্দুকযুদ্ধের নামে ১৪৪ ক্রসফয়ারে হত্যা করেছেন ১৬১ জন মানুষ

কোটি কোটি টাকা লুটপাট ও ঘুষ বাণিজ্য করে দেশে বিদেশ গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

ইনকিলাব রিপোর্ট | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২০, ১১:৪৭ এএম

টেকনাফ থানার সদ্য প্রত্যাহার করা ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ঘুষবাণিজ্য ও লুটপাটের হাতিয়ার ছিল কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে ক্রসফায়ার। ইয়াবার এ প্রবেশদ্বার টেকনাফে ক্রসফায়ারের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন পুলিশের এই সাবেক ওসি।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ককে কার্যত ডেথ জোনে পরিণত করেন তিনি। আতঙ্কে রাতে এ সড়কে চলাচলে মারাত্মক ভীতির সঞ্চার হয় স্থানীয়দের মধ্যে। চাহিদা মতো টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যার বিস্তর অভিযোগও রয়েছে প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে তার নানা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন যারা, তারা তার বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

উখিয়ার মৌলভি বখতিয়ার মেম্বারের স্ত্রী জানিয়েছেন, তাকে ধরে নেয়ার সেই রাতে ওসি প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে পুলিশি অভিযানে ৫১ লাখ টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মৌলভি বখতিয়ারের এক ছেলেকে ডেকে নিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয় আরও বিপুল অঙ্কের টাকা।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। এতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় ক্রসফায়ারের পরিসংখ্যান।

গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮৭ জন। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ১৭৪ জন, বিজিবির সঙ্গে ৬২ জন ও র‌্যাবের সঙ্গে ৫১ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

আর টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১৬১ জন। এর মধ্যে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মাধ্যমে ঘটেছে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা। এসব ক্রসফায়ারের একটি বড় অংশ সংঘটিত হয় মেরিন ড্রাইভ সড়কে।

মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরুর পর টেকনাফে পুলিশের গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের স্থলে জায়গা নেয় কথিত ‘ক্রসফায়ার-বাণিজ্য’। গত ২৪ জুলাই উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক ইয়াবা গডফাদার মৌলভি বখতিয়ার নামের এক ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নাটক কের ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয় তাকে।

টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অভিযান চালিয়ে মৌলভি বখতিয়ারসহ তাহের নামের আরও এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেন ওই রাতে। একদিন পর দুজনের ভাগ্যে জোটে কথিত বন্দুকযুদ্ধ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, মৌলভি বখতিয়ারের ঘর থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

এভাবে চলে আসছিল বন্দুকযুদ্ধের নামে ভয়ঙ্কর ক্রসফায়ারে মানুষ খুন, সম্পদ লুটপাট ও ঘুষ বাণিজ্য।

ওসি প্রদীপের ভয়ঙ্কর ক্রসফায়ার বাণিজ্য সম্পর্কে মাথিনের কূপ নামক আইডি সহ বিভিন্ন আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারি হয়েছে ভূক্তভোগীদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়া ও লুটপাটের কিছু তথ্য।

এতে দেখা যায় অর্ধশতাধিক পরিবার থেকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ওসি প্রদীপ প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা লুটপাট করেছে। এতেই আঁচ করা যায় গত দুই বছরে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে কি পরিমান টাকা ও সম্পদ লুটপাট করেছে ওসি প্রদীপ।

আর লুটপাট করা এই সম্পদ দিয়ে দেশে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে ওসি প্রদীপ। তাকে অবিলম্ব গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করা এবং তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ গুলো খুজে বের করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (14)
রিয়াজ ৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:১৩ পিএম says : 0
এতদিন কেউ কিছু বলে নাই এখন কত তথ্য বের হবে
Total Reply(0)
হোসাইন ৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:১৩ পিএম says : 0
তাকে এখনো গ্রেপ্তার কেন করা হচ্ছে না সেটাই আমার বুঝে আসেনা
Total Reply(0)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ৬ আগস্ট, ২০২০, ১:১৬ পিএম says : 3
এখানে আমরা যার যার অবস্থান থেকে অপরাধী। ওসি প্রদীপের ভয়ংকর কাহিনীর চিত্রনাট্য আজকে মানুষের নিকট প্রকাশ পাচ্ছে কেন এতোদিন কোথায়?????।ওসি প্রদীপের ব্ন্দুক যুদ্ধ ক্রস ফাইয়ার অর্থবানিজ‍্য এই সবের সাথে কারা কারা জড়িত আছে। প্রশাসন জানেন। ওসি প্রদীপ হত‍্যার লিষ্টের মাদক কারবারীরা ছিলো বেশি। এরাতো পরিবারের সমাজের দেশ জাতির চরমশক্র ছিল। দেশের যুব ছাত্র সমাজ দেশের মানুষ কে ধ্বংসহতে বাচানোর জন‍‍্যে আইন শৃংখলা বাহিনীর মিশন হতে পারে। এই মিশনতো সাফল্য পাচ্ছে না। মাদকের ব‍্যবসার জড়িত তাদের পুরো বংশ ধ্বংস করেদিতে হবে এর মাঝে সাফল্য আসবে?? না না আইন শৃংখলা বাহিনী গভীর ভাবে চিন্তা করুন সমাধানের। আজকের পরিনতি প্রমাণ সামরিক পোশাক পরা সাবেক মেজর প্রধান মন্ত্রীর নিরাপত্তা দায়িত্বে ছিলো এই বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান। তার মৃত্যুর মধ্যেই শেষ হউক বিনা বিচারে ক্রসফাইয়ার। বন্দুকযুদ্ধের অবসান। দেশের সম্মানিত আইজিপি মহোদয় পুলিশের শৃংখলার স্বার্থেই কঠোরভাবে শক্তভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশের প্রয়োজনে বলে যাচ্ছেন। শক্তিশালী মানবিক শান্তি প্রীয় পূলিশের কথা আমরা শান্তির বাংলাদেশ চায়। নিরাপদ বাংলাদেশ চায় সত্রাস মাদকমুক্ত বাংলাদেশ চায়। এই সবের বিশালাকার বিশালসংখ্যক বিরাট দায়িত্ব পুলিশের। এর জন্যে প্রয়োজন পারিবারিক শিক্ষা। নৈতিক শিক্ষা। ক্ষনস্থায়ী জীবন এর প্রতিটি হিসাব দুকাদে দুইফেরেশতা লিপিবদ্ধ করে যাচ্ছেন প্রতিদিন। আল্লাহ্ আমাদের সবাই কে বুঝবার তৌফিক দেন। আমিন।
Total Reply(1)
আযাদ ৭ আগস্ট, ২০২০, ১২:৩২ এএম says : 0
ইসলামী শরিয়াহ ক্রস ফায়ার বা বন্দুকযুদ্ব সমর্থ করেনা।ইসলাম প্রত্যেক ব্যক্তির আত্বপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দিয়ে বিচার করতে হবে।একমাএ মুরতাদদের বিষয়টা আলাদা।
আলী ৬ আগস্ট, ২০২০, ১:৩২ পিএম says : 2
অপরাধী নির্মূল করার জন্য ক্রসফায়ারের কোনো বিকল্প নেই .আমি ডাকাত সন্ত্রাসী ধর্ষণকারীদের ক্রসফায়ার আশা করি আমৃত্য পর্যন্ত ...
Total Reply(0)
সাদ্দাম ৬ আগস্ট, ২০২০, ২:২২ পিএম says : 0
দুদুদ কি করে তারা এসব দেখে না ?
Total Reply(0)
সাদ্দাম ৬ আগস্ট, ২০২০, ২:২৩ পিএম says : 0
তাকে অবিলম্ব গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করা এবং তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ গুলো খুজে বের করতে হবে
Total Reply(0)
মোঃ নূরুল আমিন চৌধুরী ৬ আগস্ট, ২০২০, ২:৫৬ পিএম says : 1
য়েখানে হাত দিবে, সেখানেই প্রদীপের মতো ‘সোনার খনি’ (?)। অর্থ-কড়ি উপার্জন আর পদ-গদবীর লোভে খুনের নেশায় মেনে (জ্বলে) উঠে প্রদীফ। সেই জ্বলে উঠা আগুনে শত শত জীবন হারিয়ে যায় কালের অন্তরালে। সম্ভবতঃ তার বিশ্বাস ছিলো- ভয়ংকর অপরাধী হলেই সব রকমের অর্জনই সম্ভব। নইলে তাদের মতো দু’ব‌্যক্তির হাতে কথিত ১৪৪ ক্রসফায়ারে ১৬১ জনের জীবন সংহার !!! দুনিয়ার ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত কী খুজে পাওয়া যাবে ? দন্ডবিধির কোন ধারাতেও এসব ক্রসফায়ার নামের ছায়াও আছে বলে মনে হয়না। তাহলে এসব হত‌্যাকান্ডের দায় অবশ‌্যই ব‌্যক্তির। আর তাদেরকে আকারে-ইঙ্গিতে কেউ সহযোগিতা করলে অথবা অলিখিতভাবে নির্দেশ দিলেও তারা এমন জগন‌্যতম হত‌্যাকান্ড চালাতে পারেননা। পরকালে বিশ্বাসী একমাত্র মুসলিমরাই এ কথা ঈমানের সহিত দৃঢ়ভাবে ধারন করে যে, পরকালে প্রত‌্যেকটি অপরাধের একং হত‌্যাকান্ডের জবাবদিহিতা ব‌্যক্তিকে আল্লাহর দরবারে একাকী নিজকেই করতে হবে। “আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেবো, তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ‌্য দিবে” -(আলকুরআন সূরা ৩৬ ইয়াসিন- আয়াত নং- ৬৫)। আলকুরআনে বিশ্বাসী কোন মুসলিম ঐ পোস্টে থাকলে বিপুলভাবে এতো মানবতা লঙ্গিত হতোনা।
Total Reply(0)
Md-Kalam Hossain ৬ আগস্ট, ২০২০, ৪:৫৩ পিএম says : 0
আমার মন্তব্য হলো যে আমরা সব সময় সঠিক নিউচ গুলো পেতে পারি যেনো। (ধন্যবাদ)
Total Reply(0)
Mohammed ৬ আগস্ট, ২০২০, ৪:৫৫ পিএম says : 0
কিছু হবে না। তিনি তার সমস্ত সম্পত্তি ভারতে পাঠিয়েছিলেন। এই দলের লোকেরা তাদের এক পা বাংলায় এবং অন্য পা ভারতে ব্যবহার করে
Total Reply(0)
MohiuddinFaysal ৬ আগস্ট, ২০২০, ৯:১৬ পিএম says : 0
ওসি প্রদীপরা এদেশে ভারতীয় বিষ্পোড়া। যারা বাংলাদেশকে তিলে তিলে খাচ্ছে। এদের ক্ষমতা সরকারের ও উর্ধে। এদের ক্ষমতার উৎস ওপার থেকে আসে। এদেরকে অচিরেই রুখতে হবে। প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এরা ঢুকে গেছে।
Total Reply(0)
Abdullah ৬ আগস্ট, ২০২০, ১০:৪২ পিএম says : 0
একজন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে অবশ্যই এর সুষ্ট বিচার চাইব
Total Reply(0)
মাসউদ ৭ আগস্ট, ২০২০, ১:৪৪ পিএম says : 0
আসলে এদের মুখে দেশ প্রোম! ভিতরে হারাম।
Total Reply(0)
শাহ ৯ আগস্ট, ২০২০, ৯:০২ পিএম says : 0
এত কথা বলে কোন কাজ হবেনা । আইনজীবী ভাই - বোনেরা আপনারা দয়া করে কক্সেসবাজার যান এবং প্রদিপ গং দের ক্রস ফায়ারে নিহত পরিবারদের মামলা করতে সাহায্য করুন । কারন অনেকেই প্রান ভয়ে মামলা করতে পারে নাই ।
Total Reply(0)
Md. Moniruzzaman ১২ আগস্ট, ২০২০, ৩:৪৪ পিএম says : 0
এমন প্রদীপ বাংলাদেশের প্রতিটি থানাতেই ছিল এবং আছে, থাকবেও বলা যেতে পারে। দুদুক স্বাধীন হলে এদের সম্পদের হিসাব নিতে পারে। তবে প্রদীপরা কখনো হারিয়ে যাবে না, কেননা এরা দলকে ক্ষমতায় রাখার জন্য সর্বদা কাজ করে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য যে প্রদীপরা অপরিহার্য। একটা ঘটনা বেমক্কা হয়ে গেছে, সব আগের মতই চলবে কয়েকদিনের মধ্যেই!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন