সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মির্জারগাঁও গ্রামের মৃত তালেব আলীর পুত্র মোসাদ্দুর রহমান (৩৫) গত ১৭ দিন ধরে উমানের সোমানিয়া শহর থেকে নিখোজ হন। নিখোজের ঘটনায় মোসাদ্দুরের চাচাত ভাই ফয়জুর রহমান বাদি হয়ে গত ১৩ আগষ্ট বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং-১১)। মামলার প্রেক্ষিতে রবিরাব ভোর রাতে বিশ^নাথ থানা পুলিশ মুক্তিপণ আদায়কারি রাকিব আহমদকে (১৭) চট্টগ্রামের দক্ষিণ খুলশি থানার ১নং রোর্ডের ৩নং লেইন, দুবাইওয়ালা বিল্ডিং এর ৩য় তলা থেকে আটক করে। রাকিবের বাড়ি নোয়াখালি জেলার নোয়াখালি সদর (সুধারাম) থানার ধর্মপুর গ্রামের আতিক হোসেন ও নাছিমা বেগমের ছেলে। রাকিবের বাড়ি নোয়াখালি জেলায় থাকলেও তার পরিবারসহ চট্টগ্রামে ভাড়াটে বাসায় থাকে। রবিবার রাকিবকে আদালতে পাঠালে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন থানার এসআই মোয়াজ্জেম হোসেন।
জানাগেছে, মোসাদ্দুর গত ১০ বছর পূর্বে উমানে পাড়ি জমান। ৩ বছর পূর্বে ছুটি কাটাতে বাংলাদেশে এসে বিবাহ সম্পন্ন করে পূণরায় উমানে চলে যান। গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত মোসাদ্দুর তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ ছিল। এর পর থেকে মোসাদ্দুরের ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে আর যোগাযোগ করা যায়নি। ১১ আগষ্ট রাত অনুমান আড়াইটার দিকে উমান থেকে (ফজলু) মিয়া নামের এক ব্যক্তি ০০৯৬৮৭১০৫৩৮৭৬ নাম্বার থেকে মোসাদ্দুরের বড় ভাইর স্ত্রী সাজিদা আক্তার লিপির মোবাইলে কল দিয়ে জানায়, মোসাদ্দুরকে উমানের সোমানিয়ার একদল জঙ্গিরা আটক করে রেখেছে। ৫লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।
একপর্যায়ে ২লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয় মোসাদ্দুরের পরিবার। কিন্তু উমানে থাকা (মুক্তিপনকারি ফজলু মিয়ার) কাছে মোসাদ্দুরের পরিবারের দাবি প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে, আর মোসাদ্দুরের সাথে কথা বলার পর বাকি টাকা দেয়া হবে। তাদের দাবি অনুযায়ী (মুক্তিপনকারি ফজলু মিয়া) রাজি হয়ে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার জন্য বাংলাদেশে একাধিক বিকাশ নাম্বার দেয় এবং ১২ আগষ্ট দুপুরে উপজেলার লামাকাজি বাজার থেকে তার দেয়া বিকাশ নাম্বারে ৪৩ হাজার ২০০টাকা পাঠানো হয়। টাকা পাঠানোর পর থেকে বিকাশ নাম্বার সহ উমানে থাকা (মুক্তিপনকারি ফজলুর) মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। এরপর নিরুপায় হয়ে অসহায় পরিবারটি স্থানীয় এমপি মোকাব্বির খানকে বিষয়টি অবহিত করলে, তিনি থানায় একটি অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন এবং থানার ওসিকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বিকাশ নাম্বারের সুত্র ধরে চট্টগ্রামের দক্ষিণ খুলশি থানার ১নং রোর্ডের ৩নং লেইন, দুবাইওয়ালা বিল্ডিং এর ৩য় তলা থেকে একজনকে গ্রেফতার করে।
এ ব্যাপারে বিশ^নাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিম মুসা জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে রাকিব নামের একজনকে আটক করেছি এবং সে আদালতে টাকা নেয়ার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে দ্রুত প্রক্রিয়া চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন