রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

গণস্বাস্থ্যের কিটে জনগণের লাভ, আমদানি করলে কিছু ব্যক্তির

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০২০, ১২:০৪ এএম

সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমন আবার বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে ও আরটি-পিসিআর পরীক্ষার চাপ কমাতে র‌্যাপিড টেস্টের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। তিন মাস আগেই র‌্যাপিড টেস্টিং কিট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। অথচ দেশের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত র‌্যাপিড টেস্টিং কিটের অনুমোদন এখনো দেওয়া হয়নি।
এ প্রসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, গণস্বাস্থ্যের কিটের অনুমোদন দিলে জনগণের লাভ, বিদেশ থেকে আনলে কিছু ব্যক্তির লাভ। তিনি বলেন, র‌্যাপিড টেস্ট করতে হবে, আমরা এ কথা বলছি ৬ মাস আগে থেকে। সরকারের উপলব্ধিতে তা আসতে ছয় মাস সময় লাগল। করোনার মতো ভয়াবহ মহামারি মোকাবিলায় ছয় মাস সময় নষ্ট করা হলো। অনেক দেরিতে হলেও র‌্যাপিড টেস্টের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে, এটা ভালো সংবাদ হতে পারত। কেন এ কথা বলছি? এতদিনে যদি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হতো। এখন হয়তো বিদেশ থেকে কিট কিনে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে তো বহু বছর ধরে কথা বলছি। সেখানে কেনাকাটা নিয়ে কী হয়, কী হচ্ছে, তা তো এখন দেশের মানুষ দেখছে। ধারণা করি, র‌্যাপিড টেস্ট কিট কেনার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। সে কারণেই কিনে আনায় ব্যাপক আগ্রহ। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের অনুমোদন দিলে জনগণের লাভ, বিদেশ থেকে কিনে আনলে কিছু সংখ্যক ব্যক্তির লাভ। আমরা তো এই কিট দিয়ে ব্যবসা করব না। সামান্য পয়সার বিনিময়ে পরীক্ষা করব। গরিব মানুষ বিনা ম‚ল্যে পরীক্ষার সুযোগ পাবেন।
উল্লেখ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি কিটের সর্বোচ্চ সংবেদনশীলতা (সেনসিটিভিটি) পাওয়া গিয়েছিল ৬৯ দশমিক ৭ শতাংশ ও নির্দিষ্টতা (স্পেসিফিসিটি) ৯৬ শতাংশ। ঔষধ প্রশাসন জানিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) আমব্রেলা গাইডলাইনের আলোকে কিটের সর্বনিম্ন সংবেদনশীলতা ৯০ শতাংশ ও নির্দিষ্টতা ৯৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এফডিএ’র আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণ করে নিজেদের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এতে দেখা গেছে, কিটটির সংবেদনশীলতা ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ ও নির্দিষ্টতা ৯৬ শতাংশ। পরবর্তীতে নিজেদের কিট আরও উন্নতও করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও জমা দিয়েছে তারা। এখনো তাদের কিটের অনুমোদনের কোনো অগ্রগতি নেই।
গণমাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকার আমদানি করবে, করুক। তাহলে আমাদের কিট যে প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা করা হয়েছে, আমদানি করা কিটও সেই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা করুক। দেশের প্রতিষ্ঠানে দেশীয় বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত কিট জটিল প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা করা হবে, উত্তীর্ণ হওয়ার পরও অনুমোদন দেওয়া হবে না, আর বিদেশ থেকে কিট এনেই পরীক্ষা করা হবে? বিদেশ থেকে কিট আনলেই সেটা ভালো, আর দেশে উদ্ভাবিত হলেই সেটা খারাপ, এই মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। এটা ঔপনিবেশিক মানসিকতা। এই ঔপনিবেশিক মানসিকতা আমরা যুগ যুগ ধরে ধারণ করছি। এই মানসিকতা থেকে আমাদের বের হওয়া দরকার। তিনি বলেন, সত্যিই যদি বিদেশ থেকে কিট আমদানি করা হয়, আর আমাদের কিটের অনুমোদন না দেয়, তাহলে আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত আদালতে যেতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন