শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

টাঙ্গাইলে বন্যায় ৪৬৮০ মৎস্য চাষীর মাথায় হাত

ক্ষতি ২৬ কোটি টাকা, সরকারি আর্থিক সাহায্যের দাবি

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২০, ১:০৭ পিএম

চলতি বন্যায় টাঙ্গাইলের ১১ উপজেলার ৪ হাজার ৬৮০ জন মৎস্য চাষীর মাথায় হাত পড়েছে। অতি বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ১৫৩৮.৩৮৬০ হেক্টর আয়তনের ৫ হাজার ৩২৭ টি পুকুরের মাছ। এতে মৎস্য চাষীদের প্রায় ২৬ কোটি টাকার উপরে অবকাঠামোসহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে মহাবিপদে রয়েছেন খামারীরা। তারা এখনো পান নি সরকারি সাহায্য সহযোগিতা।
জেলা মৎস্য অফিস জানায়, বন্যায় ১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে, যার মূল্য ১৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এদিকে ১ কোটি ৭৫ লাখ মাছের পোনা ভেসে গিয়েছে। যার মূল্য ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা। আর অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৫২ টাকার টাকার।
এর মধ্যে সদর উপজেলার ১৩৯ জন খামারীর ১৭৪ পুকুর তলিয়ে ৫৮ লাখ ৮৫ হাজার, মির্জাপুরের ৭৪ খামারীর ৭৪ পুকুর তলিয়ে ১৬ লাখ ৪৩ হাজার, দেলদুয়ারের ১৪০ মৎস্যচাষীর ১৯৩ পুকুর তলিয়ে ১ কোটি ৭ লাখ, মধুপুরের ২৫ চাষীর ৩০ পুকুর তলিয়ে ৫২ লাখ, গোপালপুরের ১১৫ মৎস্যচাষীর ১১৫ পুকুর তলিয়ে ৬৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, নাগরপুরের ৫৭০ মৎস্যচাষীর ৭৯৫ পুকুর তলিয়ে ৫ কোটি ১৭ লাখ, বাসাইলের ২৭৬ মৎস্যচাষীর ২৭৬ পুকুর তলিয়ে ১ কোটি ৭৭ লাখ, ভূঞাপুরের ৩০৮ চাষীর ৩৩০ পুকুর তলিয়ে ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, কালিহাতীর ২ হাজার ৫৭০ চাষীর ২ হাজার ৭৪৮ পুকুর তলিয়ে ৬ কোটি ৯৩ লাখ, ঘাটাইলের ৩৬৯ চাষীর ৪৪০ পুকুর তলিয়ে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা এবং ও ধনবাড়ীর ১০২ চাষীর ১৪৯ পুকুর তলিয়ে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সখীপুর উপজেলার কোন মৎস চাষী ক্ষতির শিকার হয়নি।
কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের মৎস্য চাষী মুক্তার আলী বলেন আমি অন্যের পুকুর বছর ভিত্তিক ভাড়া নিয়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করি। এবারের বন্যায় আমার ৩টি পুকুর তলিয়ে সব মাছ বের হয়ে গেছে। আমার এই ক্ষতির জের যে কত দিন টানতে হবে সেটা আল্লাহ জানেন।
মুক্তার আলীর মতো আরো অনেক ক্ষতিগ্রস্থ চাষী বলেন, একদিকে করোনা ভাইরাসে ব্যবসা বাণিজ্য নেই। এর উপর বন্যায় একেবারে শেষ করে দিলো। আমাদের পথে বসার পরিস্থিতি হয়ে গেছে। সরকারের কাছে প্রান্তিক চাষীরা অনুরোধ জানিয়েছেন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের যেন আর্থিক সাহায্য করে তাদের বাাঁচয়ে রাখেন।
এদিকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, বন্যার নতুন পানিতে ধর্ম জাল, কারেন্ট জাল ও বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের হিড়িক পড়ে গেছে। যে মাছ গুলো ধরা পড়ছে সেগুলো অধিকাংশই তলিয়ে যাওয়া পুকুরের চাষের মাছ। সেই মাছ মেরে অনেকে আবার বিক্রিও করছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন এবারের বন্যায় টাঙ্গাইলে ২৬ কোটি টাকার উপরে মৎস্য খাতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক খামারি ঋণ করে মাছের ব্যবসা করছেন। তদের একেবারে সর্বনাশ। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষীদের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সরকারি আর্থিক সাহায্যের বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। কর্মকর্তা আরো বলেন খামারিদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্যে পরামর্শ ও প্রযুক্তিগতসহ সার্বিক সাহায্য করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন