শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুড়িগ্রামে বন্যায় কৃষিতে ক্ষতি ৩১ কোটি টাকা

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:২১ পিএম

কুড়িগ্রামে বন্যায় কৃষিতে ক্ষতি ৩১ কোটি টাকাকুড়িগ্রামে চলতি মৌসুমে পক্ষকাল ব্যাপী বন্যায় শুধুমাত্র কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে ৩১ কোটি ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৯জন কৃষক। এছাড়াও পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় মৎস্য বিভাগের ক্ষতি হয়েছে ৭৪ লক্ষ ৫১হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২৬জন মাছচাষী। পুকুর ডুবে গেছে ২৯১টি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ২১ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রোপা আমনের। সারা জেলায় এবার ২৬হাজার ৪০৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত ছিল। এরফলে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ২হাজার ৭৯৬হেক্টর রোপা আমন এবং আংশিক ক্ষতির পরিমাণ ২৫হাজার ৪শ’ হেক্টর। লেট বন্যার কারণে শাকসবজি চাষীরা কম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার জলমগ্ন হওয়া ১হাজার ১৯৫ হেক্টর সবজির মধ্যে ৬১ হেক্টর শাক-সবজি সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। অপরদিকে ৬৭ হেক্টর বীজতলা পচে সম্পূর্ণ চাষের অনুপযোগী হয়ে যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর, চিলমারী, নাগেশ্বরী ও উলিপুর উপজেলা। উপজেলা ভিত্তিক ফসলের ক্ষতি হয়েছে সদরে ৭৯২ হেক্টর, চিলমারীতে ৫১৪ হেক্টর, নাগেশ্বরীতে ৪৯৫ হেক্টর, উলিপুরে ৩৯৮ হেক্টর, রৌমারীতে ৩০৮ হেক্টর, চর রাজিবপুরে ১৬২ হেক্টর, ফুলবাড়ীতে ১২৫ হেক্টর, ভুরুঙ্গামারীতে ১২০ হেক্টর ও রাজারহাটে ১০ হেক্টর।
এরফলে রোপা আমনচাষে ১লক্ষ ৩৯০জন কৃষকের ২৯ কোটি ১১লক্ষ ৩৫হাজার টাকা, ৪হাজার ৪৯৫জন শাক-সবজি চাষীর ১ কোটি ২২লাখ টাকা এবং ২৮হাজার ৬৯৪জন বীজতলা কৃষকের ৭০ লক্ষ ৩৫হাজার টাকাসহ মোট ১লক্ষ ৩৩হাজার ৫৭৯জন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, চলতি বন্যায় ৪৪ দশমিক ৬০ হেক্টর আয়তনের ২৯১টি পুকুর প্লাবিত হয়ে ৬৪ দশমিক ৬০ মে.টন মাছ ভেসে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৬২জন মাছচাষী। টাকার অংকে মোট ক্ষতি হয়েছে ৭৪লক্ষ ৫১হাজার টাকা।
জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডা: আব্দুল হাই সরকার জানান, এবারের বন্যায় গো-চারণভূমি ডুবে যাওয়ায় গবাদি পশুর জন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছে। বিশেষ করে কুড়িগ্রাম সদর ও চিলমারীতে এই ক্ষতিটি বেশি হয়েছে। সরকার ক্ষতির দিকটি বিবেচনা করে ৩১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকার গো-খাদ্য প্রণোদনা দিচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক জানান, বন্যায় কৃষকদের একটা আগাম প্রস্তুতি থাকে। পানি নেমে যাওয়ার পর থেকে অনেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। চর এলাকাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা স্থানীয় জাতের ধান ছিটিয়ে নতুন করে বপন শুরু করেছে। এছাড়াও সরকারিভাবে যে বীজতলা করে দেয়া হয়েছে, সেখান থেকেও কৃষক বীজ নিয়ে কাজে লাগাচ্ছে। এতে করে বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, এখন পর্যন্ত ৩৭০ মে.টন চাল ও ২০ লক্ষ টাকা এবং শিশু খাদ্য ১০ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার উপ-বরাদ্দ উপজেলাগুলোতে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৩৩৩ নম্বরে সহযোগিতার জন্য ১ কোটি ৫৯ লক্ষ মজুদ রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন