ঘূর্ণিঝড় আমফান, অতি বর্ষণ এবং শিলা বৃষ্টির কারণে বৃহত্তর খুলনায় চলতি মৌসুমে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে পাটের দাম ভালো হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মুখে হাসি ফুটছে। এতে ক্ষতি পুষিয়ে যাবে বলে আশা করছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। খুলনাঞ্চলে পাটের সোনালী অতীত রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে শিল্পাঞ্চল নামে খ্যাত খুলনায় একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে বেসরকারী পাটকলও একটি বিশাল স্থান দখল করে নেয়। তাই এ অঞ্চলের পাটের চাষাবাদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিশেষ নজরদারি রাখে সব সময়।
যদিও খুলনা অঞ্চলে পাটের চাষ খুব বেশি হয় না। তারপরও এবার খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় ৫০ হাজার একর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। যা থেকে ২ লাখ ৫৩ হাজার বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ইতোমধ্যেই চাষিরা পাট জাগ দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন। কোথাও কৃষকরা পাটের আশ ছাড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এ অঞ্চলের পাট চাষিরা জানান, এবার অনেক কৃষক পাট চাষ করেছিলেন। কিন্তু আমফান, অতি বর্ষণ এবং শিলা বৃষ্টির কারণে পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উঁচু এলাকায় কিছু পাট হয়েছে। তবে পাটখড়ি ও পাটের দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। পাটখড়ির গল্লা ৬০-৭০ টাকা এবং প্রতি মণ পাট ২৪০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত। ভালো দামের কারণে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে যাবে।
খুলনা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, একবিঘা জমিতে ১২-১৪ মণ পর্যন্ত পাট উৎপাদন হয়। আর বিঘা প্রতি পাট চাষে কৃষকের খরচ হয় ৪ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর এক বিঘা জমিতে উৎপাদিত পাটের পাশাপাশি ৮০-৯০ আটি পাটকাঠি হয়। যার প্রতি আটির দাম ৫০-৬০ টাকা। এবার কৃষকরা বেশি চাষাবাদ করেছেন বিএডিসি-১ এবং বিজিআরআই-৮ জাতের পাট।
খুলনার চুকনগরের প্রবীণ পাট চাষি আবুল কালাম আজাদ ইনকিলাবকে বলেন, এবার পাটের উৎপাদন বেশ ভালো। তাছাড়া দামও সন্তোষজনক। ফলে বিভিন্ন দুর্যোগে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা হয়তো পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। তাই কৃষকরা আশায় বুক বেধে আছে। খুলনা বিভাগীয় পাট অধিদফতরের সহকারী পরিচালকের কার্যলয়ের সহকারী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, এবার পাটের দাম মণ প্রতি ২২০০-২৪০০ টাকা। উৎপাদনও ভালো। এবার আবহাওয়ার জন্য ২০-২৫ শতাংশ উৎপাদন কম হয়েছে। তারপরও পাটের দাম ভালো থাকার কারণে কৃষকের পুষিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে ব্যাপারীরা পাট কিনতে শুরু করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন