রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার আরো উন্নতি হয়েছে। তিনি ডান হাত পুরোটা নাড়াতে পারছেন। এমনকি ডান পাও কিছুটা নাড়াতে পারছেন। গতকাল তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড প্রধান অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন এ তথ্য জানান। এদিকে একই হাসপাতালে ভর্তি ওয়াহিদা খানমের বাবার অবস্থারও উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনও ও তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে ইউএনওকে প্রথমে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়। পরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
তারপর ৩ সেপ্টেম্বর রাতে ছয় সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে। অস্ত্রোপচার শেষেই তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এরপর হাই ডিফেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউত) স্থানান্তর করা হয় তাকে। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন। এছাড়াও ওয়াহিদা খানমের বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১২ সেপ্টেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের একটি অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। পরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। বাবা-মেয়ে দুজনই বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন।
এদিকে, দিনাজপুর থেকে মাহফুজুল হক আনার জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে রবিউলসহ ইউএনও’র বাসার নাইট গার্ড নাদিম হোসেন পলাশকেও গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় রবিউলকে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপর দু’জন আসাদুল ও নতুন গ্রেফতার পলাশকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। রিমান্ডে রবিউলকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে। এছাড়া রিমান্ডে রবিউল দায় স্বীকার করেছেন। তবে কি বলছে; এমন তথ্য প্রকাশ করতে নারাজ তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় যুবলীগ নেতা আসাদুল হক ও তার দুই সহযোগী নবিরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে র্যাব। তখন র্যাব দাবি করেছিল, তারা এ ঘটনার ছায়া তদন্ত করেছে। গ্রেফতার আসাদুল নিজের জড়িত কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনার মূল আসামি তিনি। পূর্বপরিকল্পিতভাবে চুরির করার উদ্দেশে তারা ইউএনওর বাসায় ঢুকেছিলেন। কিন্তু পুলিশের হাতে রবিউল ধরা পড়ার পর তদন্ত নতুন মোড় নেয়। এছাড়া পুলিশের দাবি রবিউলের স্বাকারোক্তি মোতাবেক হামলায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও মই উদ্ধার করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন