শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কার্যক্রমে স্থবিরতা

রূপগঞ্জ বীজাগার ও কৃষি পরামর্শ কেন্দ্র

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার বীজাগার ও কৃষিভিক্তিক পরামর্শ কেন্দ্রের মধ্যে ৬টি বীজাগার দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ৯টি বীজাগারের মধ্যে পড়শী এলাকার বীজাগারটি সরকারি কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই। আর একটি চলছে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে। মুড়াপাড়া এলাকার বীজাগারটির জমি বেদখল হয়ে গেছে। বেদখলকৃত জমি উদ্ধারে আদালতে মামলা বিচারাধীন। এসব কারণে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ৯টি বীজাগারের জমি কেনা বাবদ ও ভবন নির্মাণ বাবদ তৎকালীন সময়ে দুই কোটি টাকা বরাদ্দ ছিলো। এসব ভবনে কার্যক্রম না চলার কারণে ধীরে ধীরে বীজাগারের ভবনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। পানিতে গেছে সরকারের দুই কোটি টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দাউদপুর ইউনিয়নের বেলদীর বীজাগারটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কাঞ্চন পৌরসভার কাঞ্চন বীজাগারটি বছরজুড়েই থাকে তালাবদ্ধ। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল বীজাগারটিও সারা বছর থাকে তালা ঝুলানো। তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়ার বীজাগারটি থাকলেও চলছে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে। রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পড়শী বীজাগারটির জমি থাকলেও ভবন নেই। নেই কোন কার্যক্রম। ভোলাবো ইউনিয়নের আতলাপুরের বীজাগারটি বন্ধ থাকে। ভুলতা ইউনিয়নের মিঠাবোর বীজাগারটিরও একই অবস্থা। কায়েতপাড়া ইউনিয়নের মাঝিনা বীজাগারের কোন অস্তিত্ব নেই। আর মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মুড়াপাড়া বীজাগারটি বেদখল হয়ে গেছে। এটা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রূপগঞ্জের ৯টি বীজাগারের মধ্যে ৬টি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কোনটির পলেস্তরা খসে পড়েছে। কোনটির দরজা-জানালা ভাঙা। আবার কোনটা মাসের পর মাস এমনকি বছর তালা ঝুলানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকার বীজাগারটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। আর রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পড়শী বীজাগারের জন্য জমি থাকলেও কোন ভবন নেই। অপরদিকে মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মুড়াপাড়া বীজাগারটি বেদখল হয়ে গেছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন।
দাউদপুর ইউনিয়নের বেলদী বাজারের ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়কের পাশ ঘেঁষেই বেলদী বীজাগার। বীজাগারের একটি কক্ষের দরজায় ঝুলছে তালা। আরেকটি কক্ষের জানালা খোলা। উঁকি দিতেই ভেতর থেকে দুর্গন্ধ নাকে এসে বাড়ি খায়। ভেতরে দেখা গেছে ছাদের পলেস্তরা খসে পড়েছে। নীচে আর্বজনার স্তূপ। পড়ে রয়েছে বেশ কিছু বালু ফেলানোর পাইপ। ভবনের চারপাশে শ্যাওলা আর বট-পাকুড়ের ছড়াছড়ি। আর ভবনের সামনে স্তূপ ইট-বালু-সুরকির। জানা গেলো স্থানীয় লিটন নামে একজন এগুলো রেখে ব্যবসা করছেন। যোগাযোগ করা হলো বøক সুপারভাইজার রহিম মিয়ার সঙ্গে।
তিনি বলেন, তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার লোকমান হোসেন থাকাকালীন চেষ্টা করেছিলেন যেনো ভবনটি কাজে লাগানো যায়। কিন্তু পরে উনি চলে গেলে আর হয়ে ওঠেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক ব্লক সুপারভাইজার বলেন, আমাদের কিছু করার নেই। উপজেলা থেকে এখন বীজ আনতে হয়। তাই ইউনিয়ন পর্যায়ের বীজাগারগুলো অন্ধকারে রয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেহা নূর বলেন, গোলাকান্দাইল ও কাঞ্চন এলাকার দুটি বীজাগার সংস্কার করা হয়েছে। বেলদী ও তারাবো পৌরসভার বীজাগারগুলোর বেহাল দশা রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন