১০ অক্টোবর শনিবার চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান জুয়েল(নৌকা) জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের জেএমসেন গুপ্ত রোডে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। এ সময়ে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনী ইশতেহারে নৌকার প্রার্থী অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনাময় চাঁদপুরে প্রধানমন্ত্রী যতোবারই এসেছেন, ততোবারই তিনি নদীকেন্দ্রিক পর্যটনের তাগিদ দিয়েছেন। তাই সেই সম্ভাবনার আদলে চাঁদপুরকে গড়ে তুলতে পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়ার এ তিন নদীর মিলনস্থল মোলহেড নান্দনিকভাবে গড়ে তোলা হবে। শহরের নতুন বাজার ও পুরানবাজার শহররক্ষা বাঁধে রিভার ড্রাইভ গড়ে তোলা হবে। সবুজায়ন, দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী দিয়ে তা নির্মাণ করা হবে। ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদীতে ভাসমান রেস্তোরাঁ, ওয়াটার বাস চালু করা হবে। পৌরসভার অর্থায়নে তারকাখচিত একটি আধুনিক আবাসিক হোটেল নির্মাণ করা হবে। যা দেশী-বিদেশী পর্যটকদের চাঁদপুরে অবস্থানকে নিরাপদ ও আকর্ষণীয় করবে।
নান্দনিক চাঁদপুর শহর গড়ে তুলতে শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া এসবি খাল ও বিদ্যাবতি খালের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে মূল নদীর সাথে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।
শহরের লেকগুলোর দুই প্রান্ত বাঁধাই করে ফোয়ারা নির্মাণ করার মধ্য দিয়ে দৃষ্টিনন্দন করা হবে। বহুতল ভবন বিশিষ্ট একটি আধুনিক সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এতে পাবলিক লাইব্রেরী, আর্কাইভ, মিনি অডিটোরিয়াম, জ্যেষ্ঠ নাগরিক ও নারীদের জন্য পৃথক পৃথক নির্ধারিত ফ্লোর থাকবে। যেখানে থাকবে বিনোদনের সুব্যবস্থা। এছাড়া পুরান বাজার ও নতুন বাজার অংশে একাধিক মুক্ত মঞ্চ গড়ে তোলা হবে । সর্বোপরি চাঁদপুর শহরকে বিলবোর্ড মুক্ত করা হবে।
পৌরবাসীর নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল কার্যক্রম প্রযুক্তিনির্ভর ও ডিজিটালাইজড করা হবে। প্রতিটি এলাকা পর্যায়ক্রমে সিসিটিভির আওতায় আনা হবে। ড্রেনেজ সিস্টেমে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংস্কার করা হবে ।পুরনো সড়ক যথাসম্ভব প্রশস্তকরণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। শহরের যানজট নিরসনে একাধিক বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হবে।শহরের সড়কে এলইডি লাইট স্থাপনের মাধ্যমে আলোকিত চাঁদপুর শহর গড়ে তোলা হবে। সকল নাগরিকদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। বর্জ্য সংগ্রহ ও ডাম্পিং পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হবে ।শহরের যত্রতত্রের সকল ডাস্টবিন পর্যায়ক্রমে তুলে ফেলা হবে। মশক নিধনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। শহরের পুরান বাজার ও নতুন বাজার অংশে দুটি আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হবে। পুরানবাজার অংশে একটি নতুন গণকবরস্থান তৈরি করা হবে।পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ন্যূনতম একটি করে আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। যাতে নারী-পুরুষের জন্য পৃথক পৃথক ব্যবস্থা থাকবে। মাদক, ইভটিজিং ও কিশোরগ্যাং দমনে পৌরসভা জিরো টলারেন্সে থাকবে। পৌর সভার তত্ত্বাবধায়নে একটি কার্যকরী মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এছাড়া শহরের মাছ বাজারগুলোকে আধুনিকায়ন করা হবে। পরিকল্পিত চাঁদপুর শহর নির্মাণে নকশাবহির্ভূত কোন স্থাপনা নির্মাণ হতে দেয়া হবে না। যানজট নিরসনে বিশেষ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা হবে। সেই সাথে অবৈধ যান চলাচল করতে দেয়া হবে না। এছাড়া নতুন কোনো সিএনজি অটো রিক্সার লাইসেন্স প্রদান করা হবে না । পৌরবাসীর নাগরিক সেবায় ২৪/৭ ভিত্তিতে হেল্পলাইন চালু করা হবে।
নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী জিল্লুর রহমান জুয়েল নির্বাচনী ইশতেহারে আশা প্রকাশ করেন সকলের সহযোগিতা পেলে তিনি বাণিজ্য, পর্যটন এবং নান্দনিক চাঁদপুর শহর ঘরে তোলার ক্ষেত্রে সফল হবেন। এজন্য তিনি পৌরবাসীর দৃঢ় সমর্থন আশা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন