মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

মেরাজে হুজুর (সা.) যেসব অপরাধীর শাস্তি প্রত্যক্ষ করেন-২

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

‘ঠোঁটকাটা’ লোকদের কথা: হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ‘তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত খাঁটি মোমেন হতে পারবে না, যতক্ষণ না তার সমস্ত আশা আকাক্সক্ষা আমার শরীয়ত মোতাবেক হবে।’ অর্থাৎ মোমেন মুসলমানের কোনো কাজকর্ম ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থী হলে চলবে না। মোমেনের আমল যে পর্যন্ত শরীয়ত অনুযায়ী হবে না, আল্লাহর দরবারে তার ইসলাম অপূর্ণ বলে গণ্য হবে। আমল করার নির্দেশ কেবল জনসাধারণের জন্য সীমাবদ্ধ নয়, আলেম সমাজের প্রতিও সমানভাবে প্রযোজ্য।

আলেমদের শাস্তি সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ‘আমি মেরাজের রাত্রে জাহান্নামে এমন কতিপয় লোককে দেখলাম যাদের ঠোঁট কাঁচি দ্বারা কাটা হচ্ছিল, একবার কাটার পর সেগুলো মিলিয়ে যেতে থাকে, আবার তাদের ঠোঁট কর্তন করা হতে থাকে। এরূপে তারা আল্লাহর শাস্তি পাচ্ছিল। আমি হজরত জিবরাইল (আ.)-কে তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে উত্তরে তিনি বলেন: তারা আপনার উম্মতের সেসব আলেম, যারা লোকদের অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখতো এবং আল্লাহর দিকে আহ্বান করতো, অথচ তারা স্বয়ং আমল করত না।’

হুজুর (সা.) আরো বলেছেন: ‘কেয়ামত দিবসের সবচেয়ে কঠিন শাস্তি সেই আলেমকে দেয়া হবে, যার এলেম দ্বারা জনসাধারণ উপকৃত হতে পারেনি।’

হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমার পূর্বে যে উম্মতের জন্য যেসব নবীকে প্রেরণ করা হয়েছিল, সেই উম্মতের মধ্যে তাদের অনুসারী এবং সঙ্গীরা থাকতেন এবং তারা উক্ত নবীদের সুন্নতের অনুসরণ করতেন ও তাঁদের নির্দশাবলি মেনে চলতেন। অতঃপর তাদের এমন সব প্রতিনিধি হতে লাগলেন, যাদের কথা ও কাজ পরস্পরবিরোধী, যা তারা মুখে বলতেন, বাস্তব ক্ষেত্রে তার বিপরীত কাজই করতেন, লোক তাদের কথা অনুযায়ী চলত। এ ধরনের লোকদেরকে যারা সঠিক পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করবে, তারাই সত্যিকারের মোমেন, এরূপ যারা করবে না, তাদের মধ্যে বিন্দু পরিমাণও ঈমান নেই।

বহু হাদীসে খাঁটি আলেমদের উচ্চ মর্যাদার কথা যেখানে বলা হয়েছে, সেখানে ‘উলামা সু’-এর করুণ পরিণতির কথাও বলা হয়েছে। সে ‘উলামা সু’-এর পরিচয় রসূলুল্লাহ (সা.)-কে মেরাজে হজরত জিবরাইল (আ.) প্রদান করেছেন। ‘উলামা সু’-এর পরিচয়ের এ মাপকাঠি যুগেযুগে সর্বত্র দর্পণ হিসেবে কাজ করবে। সরল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট করে থাকে, মেরাজে রসূলুল্লাহ (সা.)-কে সে জাহান্নামীদের পরিচয় জানানো হয়েছে। আল্লাহতাআলা সকলকে ‘উলামা সু’-এর খপ্পর হতে হেফাজত করেন, যাদেরকে প্রখ্যাত ইমামগণ ‘লুচুছুদ দীন’ বা ধর্মচোর নামে আখ্যায়িত করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
লিয়াকত আলী ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১৫ এএম says : 0
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ
Total Reply(0)
মারুফ ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১০:০১ এএম says : 0
এই লেখাগুলোর জন্যই আমি নিয়মিত দৈনিক ইনকিলাব পড়ে থাকি
Total Reply(0)
পাবেল ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১০:০১ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদের সকলকে তার দ্বীনের পথে চলার তৌফিক দান করুক
Total Reply(0)
নজরুল ইসলাম ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১০:০৩ এএম says : 0
লেখাটির জন্য হুজুরকে আল্লাহ উত্তম জাযা দান করুক
Total Reply(0)
দুলাল ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১০:০৩ এএম says : 0
তথ্যবহুল এই লেখাটি থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম
Total Reply(0)
তফসির আলম ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১০:০৪ এএম says : 0
পরবর্তী অংশের অপেক্ষায় রইলাম
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন