যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় তৃতীয়বারের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আরো তীব্র হলো নাগর্নো-কারাবাখ ঘিরে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের যুদ্ধ। গতকাল বুধবার (২৮ অক্টোবর) বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে আজারবাইজানের বিরুদ্ধে অতর্কিতভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। এতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২১ আজেরির প্রাণহানি ঘটেছে। তাছাড়া আরও বহু মানুষ হামলায় আহত হয়েছেন। যদিও গতকালের ওই হামলার কথা এরই মধ্যে অস্বীকার করেছে আর্মেনিয়া। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
গত রোববার আমেরিকার মধ্যস্থতায় তৃতীয়বার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল যুদ্ধরত আর্মেনিয়া-আজারবাইজান। এর আগে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুইবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা সফল হয়নি। রোববার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণ করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুইটি দেশ। আজারবাইজানের অভিযোগ আর্মেনিয়া যুদ্ধবিরতি ভেঙে প্রথম আক্রমণ চালায়। আর্মেনিয়াও আজারবাইজানের বিরুদ্ধে পাল্টা একই অভিযোগ করে।
আন্তর্জাতিকভাবে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু ১৯৯০ এর দশকে সেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে আর্মেনিয়া। দখলীকৃত এলাকা থেকে বহু আজারি নাগরিককে বিতাড়িত করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার রিয়া নভোস্তি নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, নাগোরনো-কারাবাখের সঙ্গে আর্মেনিয়া সীমান্তে রাশিয়ার সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের খবর নিশ্চিত করেছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান।
তিনি বলেন, এটা বিশেষ কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ানের মতে, আর্মেনিয়ার সীমান্তে তুরস্ক এবং ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন হয়েছে। আর্মেনিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে রাশিয়ার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে।
আজারবাইজান বলছে, আর্মেনিয়া বাহিনী বার্দায় স্মার্চ মিসাইল নিক্ষেপ করেছে। প্রসিকিউটরের কার্যালয় জানিয়েছে, একটি জনবহুল এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এতে কমপক্ষে ২১ বেসামরিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কমপক্ষে ৭০ জন।
গত মাসের ২৭ তারিখ থেকে নাগোরনো-কারাবাখে সংঘাত শুরু হয়। নাগোরনো-কারাবাখের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে, ওই অঞ্চলে লড়াইয়ে ১ হাজার ৬৮ সামরিক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তবে আজারবাইজান দেশটির সামরিক বাহিনীর হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রাশিয়া জানিয়েছে, উভয় পক্ষে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫ হাজার নিহত হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, এপি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন