মুন্সীগঞ্জের হিমাগারগুলোতে পর্যাপ্ত আলু থাকলেও মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেট করে বাজার অস্থিতিশীল করে রাখছে। সরকার নির্ধারিত মূল্য কোথাও মানা হচ্ছে না। হিমাগারে প্রতি বস্তা ১৮ থেকে ১৯শ’ টাকা আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বিভিন্ন হিমাগারে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত আলু থাকা সত্তে¡ও কোনভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। প্রশাসন বাজার তদারকি করলে ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু বের করা বন্ধ করে দেন। প্রান্তিক কৃষক আর্থিক ঝুঁকি নিয়ে আলু চাষ করলেও মধ্যস্বত্বভোগীরা মুনাফা নিচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জ আলু উৎপাদনের প্রধান অঞ্চল। জেলায় গত মৌসুমে ৩৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। মোট উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন। জেলায় ৬৫টি কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণ করা হয় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন। প্রান্তিক কৃষক নিজ বাড়িতেও আলু সংরক্ষণ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখনো বিভিন্ন হিমাগারগুলোতে প্রায় ১ লাখ টনের অধিক আলু মজুদ রয়েছে। হিমাগার ম্যানেজার পলাশ বেপারী জানান, এখন পর্যন্ত ৪০ ভাগ আলু হিমাগারে রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এসব আলু বাজারে আসবে। আলু চাষি বাচ্চু মিয়া জানান, কেজি প্রতি উৎপাদন খরচ ১৭ টাকা। হিমাগার পর্যন্ত প্রতি বস্তা আলু উৎপাদন খরচ পড়ে ৮৫০ টাকা। গত বছর এ সময় হিমাগারে প্রতি বস্তা আলুর সর্বোচ্চ বিক্রয় মূল্য ছিল ১১ থেকে ১২শ’ টাকা।
মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার হিমাগার মালিক সমিতির সাথে বৈঠকে আলুর বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখার আহ্বান জানান। এরপর গত দুই দিন হিমাগার থেকে আলু বের হয়েছে কম। স্থানীয় বেতকা আড়তে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩৭ থেকে ৪০ টাকা। প্রশাসন যেখানে মনিটরিং করতে যায় সেখানে মূল্য কিছুটা কমলেও পরক্ষণে আবার পূর্বের দামে বিক্রি হয়।
জানা যায়, প্রান্তিক কৃষক ৮০ ভাগ আলু জমিতেই বিক্রি করে দেন। হিমাগার মালিক এবং মধ্যস্বত্বভোগীরা আলু কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। কোন কোন হিমাগার মালিক এবং মধ্যস্বত্বভোগী ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ বস্তা আলু সংরক্ষণ করেন। তারা অধিক মুনাফার আশায় আলু হিমাগার থেকে বের করছেন না। গত ৫ বছরের মধ্যে একমাত্র ২০১৮ সালে আলুর দরপতন হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন