সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

আগাম আলুতে মিলছে না কাক্সিক্ষত দাম

হতাশ কৃষক

আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে : | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

জয়পুরহাটে আগাম জাতের আলু উত্তোলনের ধুম পড়েছে। ভালো দাম পাওয়ার আশায় আলু চাষিরা এ মৌসুমে আগাম জাতের আলু রোপণ করেন। এবার আলুর ফলন গত মৌসুমের চেয়ে ভালো হলেও দাম নিয়ে হতাশায় পড়েছে চাষিরা। আলু চাষে খরচ বৃদ্ধি পেলেও কাক্সিক্ষত মূল্য পাচ্ছে না কৃষক।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এখন যারা আলু তুলছেন, তাদের সব খরচ বাদ দিয়ে কিছুটা লাভ থাকছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর বাজার প্রতি মণে একশ’ থেকে দেড়শ’ টাকা কমে গেছে। এভাবে কমতে থাকলে আগামী সপ্তাহে যারা আলু তুলবেন তাদেরকে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন আলু চাষিরা। আলু উৎপাদনে বিখ্যাত জেলার ক্ষেতলাল, কালাই সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায় স্থানীয় কৃষাণ-কৃষাণীরা আগাম জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমের শুরুতে মূলত ক্যারেজ, রোমানা, স্ট্রিক, গেলোনা নামিউজিকা, ফ্রেশ, ফাটা পাকরি এবং বট পারকরি আলু তোলা হচ্ছে। সদরের নতুনহাটে সকালে আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা বলেন, বাজারে এখন প্রতি মণ ক্যারেজ আলু ৪৩০ টাকা থেকে ৪৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আর গ্রানোলা আলু ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা মণ। যত দিন যাচ্ছে আলুর দামও নেমেই যাচ্ছে। আলুর বাজার দর এভাবে চলতে থাকলে চাষিদের লোকসান গুনতে হবে।
মৌসুমের শুরুতে এবার দেড় বিঘা জমিতে আগাম জাতের বট পাকরি ও রেমিউজিকা জাতের আলু চাষ করেছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার বানিয়া পাড়া গ্রামের আলু চাষি শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, রোপণের ২ মাস ৬ দিন বয়সে আলু তুলেছি। জমিতে বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ৬৫-৬৮ মণ। বিক্রির সময় পাইকারী ক্রেতাকে প্রতি বস্তায় ৩ কেজি হারে বিঘাপ্রতি কয়েক মণ আলু বেশি দিতে হয়। ফলে বিঘাপ্রতি ৬৫ মণ ফলন হলেও সব বাদে ৬০ মণের দাম পাওয়া যায়। বর্তমানে আলুর বাজার অত্যন্ত কম। মৌসুমের শুরুতে ৪৮০ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করেছি, অনেকেই ৪৬০ টাকা দরে আলু বিক্রি করেছে। খরচ বাদে কিছু টাকা লাভ হয়েছে। এখন বাজার দিন দিন যেভাবে নেমে যাচ্ছে তাতে লোকসান গুনতে হবে কৃষককে।
আলুর পাইকারি ক্রেতা মাহফুজ ও সাহেব আলী বলেন, বাজারে এখন আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু করেছে। এসব আলু ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচাবাজারের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। এক সপ্তাহ পরে আলুর দাম বাড়তেও পারে। আবার কমতেও পারে।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০, ক্ষেতলালে ৯ হাজার এবং আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। আবহাওয়া ভালো অনুকূলে থাকায় আলুর ফলন ভালো হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে আলু চাষ হয়েছে। বর্তমানে আলুর বাজার কিছুটা নিম্নমুখী। এতে চাষিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। জেলার হিমাগারগুলোতে এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত আলু সংরক্ষিত রয়েছে ফলে আগাম জাতের আলুর দাম কিছুটা কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে আগামী দু’এক সপ্তাহের মধ্যেই হিমাগারে সংরক্ষিত অতিরিক্ত আলু শেষ হলে নতুন আলুর দামও বৃদ্ধি পাবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন