কক্সবাজারকে ভিক্ষুকমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ভিক্ষা ছেড়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্যই এমন প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সদর উপজেলা থেকে এই কার্যক্রম সূচনা হয়। গত সোমবার সকালে সার্কিট হাউজস্থ অরুণোদয় স্কুল প্রাঙ্গণে সদরের ইসলামাবাদ ও ঝিলংজা ইউনিয়নের ৩৪ ভিক্ষুককে বিতরণ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ জীবিকার্জনের নানা উপকরণ। বিতরণকৃত এসব উপকরণের মধ্যে রয়েছে রিকশা, সেলাই মেশিন, জাল তৈরির সরঞ্জাম, দোকান, খামারসহ ছাগল, হাস-মুরগী, ২ মাসের খাদ্য ও ভিটামিন। পর্যায়ক্রমে সকল উপজেলায় মোট ১ হাজার ৫০১ জন ভিক্ষুককে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে জীবিকার্জনের জন্য উপকরণ দেয়া হবে।
কক্সবাজার জেলাকে ভিক্ষুকমুক্তকরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে দারিদ্রমুক্ত করতে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন। সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করে যাচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করার ঘোষণা দেন। ওইসময় তিনি জেলা প্রশাসকদের এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতো জেলা প্রশাসকসহ কক্সবাজারের সকল সরকারি কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন সংগ্রহ করা হয় ৪৮ লাখ টাকা। এই টাকার সাথে যোগ করে প্রধানমন্ত্রী আরও ৫০ লাখ টাকা দেন। ৯৮ লাখ টাকার তহবিল গঠন করে কক্সবাজারকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তবে এই টাকা পর্যাপ্ত না। কিন্তু টাকার সমস্যাটা মূখ্য বিষয় হিসেবে থাকবে না। প্রয়োজন সকলের আন্তরিকতা ও সমন্বিত উদ্যোগ। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার সুইটি বলেন, সদর উপজেলার ইসলামাবাদের ১৭ জন ও ঝিলংজা ইউনিয়ন থেকে যাচাই বাছাই করে ১৭ উপকারভোগী বেছে নেয়া হয়েছে। ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেয়ার প্রতিশ্রæতিতে তাদের এসব উপকরণ দেয়া হয়েছে।
ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ইউছুপেরখিলের বাসিন্দা উপকারভোগী নুর জাহান বলেন, তার স্বামী নেই। বৃদ্ধ বয়সে ভিক্ষা করে জীবন নির্বাহ করে চলতাম। জেলা প্রশাসকের বদান্যতায় প্রধানমন্ত্রী উপহার পেয়ে ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার সুইটির সভাপতিত্বে উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, জাসদ সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন