বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ভাস্কর্য স্থাপন ইসলামী শরীয়তে নিষিদ্ধ গুনাহ

চট্টগ্রামের খ্যাতনামা ইমাম-খতিবগণ

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামের খ্যাতনামা, প্রবীণ ইমাম-খতিব ও ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণে যে কোন প্রাণির ও মানুষের ছবি অঙ্কন ও প্রদর্শন (বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া) এবং মানুষ ও প্রাণির ভাস্কর্য স্থাপন নিষিদ্ধ ও গুনাহ। হাদীস শরীফে প্রাণির ছবি অঙ্কনকারী (প্রতিকৃতিকারী/ চিত্রকরদের উপর) রাসূলে আকরাম (সা.) লানত (অভিসম্পাত) করেছেন (সহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৫৯৬২)। অপর হাদিসে রাসূলে পাক (সা.) ইরশাদ করেছেন কিয়ামতের দিবসে আল্লাহ তা’আলার সামনে এরা (ছবি অঙ্কনকারী, প্রদর্শনকারী, প্রতিকৃতি স্থাপনকারী) হবে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং- ৫২৮)।

গতকাল মঙ্গলবার এশিয়াখ্যাত জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল ও বার আউলিয়া মোকাররম জামে মসজিদের খতিব আল্লামা মুফতি সৈয়্যদ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে ওলামায়ে কেরাম ইসলামী শরীয়তের বরাত দিয়ে উপরোক্ত অভিমত প্রকাশ করেন।

বার আউলিয়ার পুণ্যভ‚মি ইসলামের প্রবেশদ্বার এবং অসংখ্য আউলিয়া কেরামের পদধুলিতে ধন্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মসজিদের ইমাম ও খতিবসহ বিশিষ্ট ইসলামী মনিষীগণ বিবৃতিতে আরও বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে (চাকরি, পাসপোর্ট, ভিসা, বিদেশ গমন, হজ, ওমরা ও প্রয়োজনীয় রেকর্ড ইত্যাদির) ক্ষেত্রে মানুষের ছবির ব্যবহার ও সংরক্ষণ হারাম ও গুনাহ পর্যায়ে অন্তভর্‚ক্ত হবে না। এটাই ইসলামী শরীয়তের ফয়সালা। দেশে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা ও হুমকি ধমকি দেয়া, সংঘাত সৃষ্টি করা ইসলামের এবং হক্কানী ওলামায়ে কেরামের আদর্শ নয় বলেও মত দেন তারা।

আলেমগণ আরো বলেন, অন্যান্য ভাস্কর্যের বিষয়ে খামোশ ও চুপ থেকে শুধু ব্যক্তি বিশেষের ভাস্কর্য নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা সীমালঙ্ঘন ও ফিতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টির নামান্তর। আর ফিতনা হত্যা হতেও কঠিন অপরাধ, যা কোন হক্কানী আলেমের আদর্শ হতে পারে না। প্রয়োজনে মিশর, মধ্যপ্রাচ্য, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়াসহ মুসলিম বিশ্ব থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মানুষ অথবা প্রাণির ছবি ও ভাস্কর্যের বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিকোণে ফতোয়া তলব করে সমস্যা নিরসন করা উচিত। ওলামায়ে কেরামগণ দেশে সকল ধরনের সংঘাত ও অশান্তি সৃষ্টি করা হতে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রিন্সিপাল মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমানসহ বিবৃতিদাতারা হলেন- সীতাকুন্ড মোস্তফা হাকিম কলেজ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইউনুছ রজভী, হাটহাজারী মির্জাপুর রজকআলী শাহী জামে মসজিদের খতিব ড. মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল হালিম কাদেরী, অক্সিজেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হাফেয মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুর রহমান, কাজীপাড়া জামে মসজিদের খতিব প্রখ্যাত ওয়ায়েজ মাওলানা নুর মোহাম্মদ আলকাদেরী, হাটহাজারী মুজাফফরাবাদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব শাইখ আল্লামা হাসান আজহারী, শহীদনগর গাউসিয়া জামে মসজিদের খতিব হাফেজ ক্বারী ফোরকান রব্বানী, হাটহাজারী আকবর শাহ জামে মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ ক্বারী নজরুল ইসলাম, অক্সিজেন গাউসিয়া তৈয়্যবিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা খলিলুর রহমান, আতুরার ডিপু হাশেম বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইউছুপ আলকাদেরী, বায়েজীদ বোস্তামী শীতলঝর্ণা আবাসিক এলাকা মসজিদে রহমানীয়া গাউসিয়ার খতিব ও পেশ ইমাম মাওলানা বোরহান উদ্দীন, ফতেয়াবাদ ইসলামীয়া হাট ফয়েজ উকিল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আহমদ রেজা কাদেরী, আমান বাজার জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম মাওলানা নুরুল আমিন, লালিয়ার হাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ রেজা প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
কাওসার ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৪৯ এএম says : 0
আল্লাহ যেনো সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করেন। আমীন।
Total Reply(0)
সবুজ ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৪৯ এএম says : 0
প্রয়োজনে মিশর, মধ্যপ্রাচ্য, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়াসহ মুসলিম বিশ্ব থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মানুষ অথবা প্রাণির ছবি ও ভাস্কর্যের বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিকোণে ফতোয়া তলব করে সমস্যা নিরসন করা উচিত।
Total Reply(0)
Mizanur Rahman Azhari ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫২ এএম says : 1
ভাস্কর্য শিল্প— এটি অমুসলিমদের কৃষ্টি সমৃদ্ধ একটি শিল্প বা কলাকৌশল। কোন ব্যক্তি যতো সম্মান আর মর্যাদার অধিকারী হোক না কেন, তার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য মূর্তি বা ভাস্কর্য তৈরি ইসলামে বৈধ নয়।
Total Reply(0)
Mohammad Mohiuddin Mahi ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫৩ এএম says : 1
আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে প্রকৃত ইসলাম জানার ও বুঝার তাওফিক দিন। দুনিয়ার অস্থায়ী ও ক্ষুদ্র মোহে ইসলামের অপব্যাখ্যা করা থেকে আলেম ওলামাদের হেফাজত করুন। আমীন।
Total Reply(0)
Imam Hossain RaNa ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫৪ এএম says : 1
মুর্তি বা ভাস্কর্য অপসারণের দাবি হেফাজত নেতা মামুনুল হকের নয় , মুর্তি অপসারণের আদেশ আল্লাহর ও তার রাসূলের এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের 90% মুসলিমের দাবি।
Total Reply(0)
মোঃ দুলাল মিয়া ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:২৭ এএম says : 1
একটি কথা বুজলে সব কিছু সমাধান হয়ে যাবে। এইটা গণতান্ত্রিক দেশ। সরকার আসবে যাবে । যখন যে আসবে তার হুকুম চলবে। আমি বুজলাম এখন ভাস্কর্য বানাবে কিন্তু যখন কেন একদিন অন্য কেউ ক্ষমতায় আসবে তখন কি হবে । সে যদি ভেংগে ফেলে যেমন ইরাকের ও লিবিয়ার দিকে দেখলে সমাধান করা যায়।আসলে আমরা সব কিছু জানি কিন্তু গায়ের জোরে সব কিছু করতে চাই।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ সামছুল হক ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৬:১২ পিএম says : 0
সুন্দরভাবে অল্প কথায় খুবই তথ্য সম্পূর্ণভাবে বলার জন্য ধন্যবাদ। সত্যি বলতে এটাই হলো ইসলামের মূল সৌন্দর্য। শ্রদ্ধেয় হুজুরদের নেক হায়াত দান করুক। বাংলাদেশে ভাষ্কর্য আজ নতুন করে আসেনি। মোটামুটি সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা এক সংস্কৃতি হয়ে আসছে। আজ পর্যন্ত কেউ কি একটা উদারন দিতে পারবে যে, ভাষ্কর্যতে গিয়ে পূজা করেছেন বা এটাকে নিয়ে মহান আল্লাহর সাথে শিরক করেছেন। আমার জানা নেই। যেহেতু ইসলামের শরীয়া এটার অনুমতি দেয়নি, তাই আলেম সমাজ প্রতিবাদ করবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু প্রতিবাদের ভাষা ইসলামি সুন্নাহ মেনে করা উচিত। এই করবো, ঐ করবো, ধরোরে, মারোরে ইত্যাদি হলো আমাদের প্রিয় নবীর সুন্নাহ বহির্ভূত আচরণ। তাই সতর্ক বক্তব্য দেয়া উচিত। ইসলাম কি বাড়াবাড়িটা পছন্দ করে??? জাতীয় বিষয়গুলো নিয়ে আরও সর্তক থাকাটাই দায়িত্বশীলতার পরিচয়। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিকতার সাথে চলার তৌফিক দান করুক। আমিন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন