রাতের আঁধারে বিপ্লবী যোদ্ধা বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার অন্তর্গত কয়া কলেজের মূল ফটকের সামনে স্থাপিত ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার সকালে ঘটনাটি স্থানীয়দের দৃষ্টিগোচর হয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে বাঘা যতীনের বাস্তুভিটা এলাকায় কয়া কলেজের গেটের সামনে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে ভাস্কর্যটির নাক ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া মুখমন্ডলের ক্ষতি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর পর বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের দ্বিতীয় ঘটনা ঘটলো। ভাস্কর্য ভাঙচুরে কয়া কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ন্যক্কারজনক এ ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত তা পুলিশ এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। তবে একটি সংঘটিত চক্র এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।
কয়া কলেজের অধ্যক্ষ হারুণ-অর-রশিদ জানান, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা ন্যক্কারজনক এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ভাস্কর্য ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
কুমারখালী থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তদন্তে মাঠে নেমেছে। যারাই এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকুক কেন, তাদের কোন রেহাই নেই।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীবুল ইসলাম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দুর্বৃত্তরা ভাস্কর্যটির কানে ও চোয়ালের অংশ-বিশেষে ক্ষতিসাধন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের যোদ্ধা বিপ্লবী বাঘা যতীন ১৮৭৯ সালের ৮ ডিসেম্বর কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাঘা যতীনের আসল নাম যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ১৯১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাঘা যতীন মারা যান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন