মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

শিরক বিরোধী সংগ্রামে নবীগণ

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

মহান বিপ্লবী নবী হযরত ইবরাহীমের অপর পুত্র নবী ইসহাক (আ.) ফিলিস্তিনের জেরুজালেমে বসবাস করেন। তার বংশধরের মধ্যে বনী ইসরাঈলের অসংখ্য নবী রাসূল হন।

শেষনবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর আগমনের পর তাদের শরীয়ত আর কার্যকর থাকেনি। এরপরও যারা পূর্ববর্তী নবীদের অনুসরণ করে এবং তাওহীদ থেকে সরে গিয়ে নানা রকমের শিরক, কুফুরী, মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয় তারা আর মুসলিম নয়। বর্তমানে মুসলিম হওয়ার জন্য এক আল্লাহ এবং শেষ নবীর রেসালতের বিশ্বাস করা অপরিহার্য।

হযরত ইবরাহীম (আ.) দোয়া করে গেছেন, হে আল্লাহ আমি আমার সন্তান ও পরিবার তৃণলতা ও প্রাণের চিহ্নহীন মক্কায় তোমার সম্মানিত ঘরের পাশে বসতি করিয়েছি নামাজ কায়েমের জন্য। যুগে যুগে মানবজাতির একাংশের হৃদয়কে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে দিও। (ঈমান, ইসলাম ও হজ্জ ওমরার প্রতি ইশারা)। আর তাদের রিযিক দান করো, সকল প্রকার ফল ও নেয়ামতের দ্বারা। হে আল্লাহ, আমাকে আমার সন্তান ও বংশধরকে তুমি রক্ষা করো। মূর্তি, ভাস্কর্য, প্রতিমা পূজা থেকে। হে আমার মালিক, এই মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্যের দল যুগে যুগে বহু মানুষকে ঈমানহারা করেছে। (সূরা ইবরাহীম : আয়াত ৩৫-৩৭; ভাবার্থ)।

আমাদের প্রিয়নবী (সা.)-এর পাশাপাশি ইসলামের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কাজে বারবার হযরত ইবরাহীমের নাম উচ্চারিত হওয়ার কারণও এটিই। তিনি ছিলেন, মূর্তিপূজাবিরোধী তাওহীদের একনিষ্ঠ বিশ্ব নেতা। তার স্বপ্নের রাসূল হলেন আমাদের প্রিয় নবী (সা.)।

যিনি দীর্ঘ সংগ্রামের পর আরবের মানুষের মন থেকে মূর্তির প্রতি ভক্তি, বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা নামক মারাত্মক ক্যান্সার ধীরে ধীরে দূর করে তাদের মনে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত ও মহব্বত স্থাপন করেন। দিল থেকে মূর্তি উৎপাটনের পর কাবাগৃহ ও মক্কানগরীর বিশেষ বিশেষ জায়গা থেকে মূর্তি উচ্ছেদ করেন। তিনি নিজ হাতে মক্কা বিজয়ের পর পবিত্র কাবাগৃহ ও তার আশপাশ থেকে মুশরিকদের স্থাপিত ৩৬০ মূর্তি ভেঙে বাইরে ফেলে দেন। এবং বলেন, সত্য সমাগত মিথ্যা দূরীভূত। নিঃসন্দেহে মিথ্যার পতন অবসম্ভাবী। (সূরা বনী ইসরাঈল : আয়াত ৮১)।

মানুষের বিশ্বাস ও চেতনাকে আল্লাহ ছাড়া সকল সৃষ্টি থেকে ফিরিয়ে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের দিকে নিয়ে আসাই নবী রাসূলের কাজ। এ কাজ উম্মত হিসাবে কেয়ামত পর্যন্ত উম্মতে মুহাম্মাদীর দায়িত্ব।
অতএব, যে কারও ভাস্কর্য ও মূর্তির কৌশলী অনুপ্রবেশকে নিরুৎসাহিত করা, মানুষকে সচেতন করা, শক্তি থাকলে উৎখাত করা ঈমানদার মাত্ররই ধর্মীয় দায়িত্ব। ভিন্ন ধর্মের লোকেদের উপাসনালয়ে মূর্তি থাকতে পারে। তবে, মুসলিম সমাজে যত্রতত্র কেউ ভাস্কর্য ও মূর্তি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে চাইলে তা প্রতিরোধ করা মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব।

কেননা, আমাদের নবী স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন এবং নিজ জীবনে কার্যত দেখিয়েও গিয়েছেন যে তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাপ শিরক তথা মূর্তিপূজা থেকে মানবতাকে উদ্ধারের জন্যই জীবনভর সংগ্রাম করেছেন। যা মানুষকে দুনিয়া ও আখেরাতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত করে। প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ আমাকে মূর্তি উচ্ছেদের জন্যই দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। আমি মূর্তি ভাঙার নবী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
মিনহাজ ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:০০ এএম says : 0
নবীদের জীবনী থেকে আমাদেরকে শিক্ষা নিতে হবে।
Total Reply(0)
মমতাজ আহমেদ ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:০১ এএম says : 0
আল্লাহ আমাদের সবাইকে শিরক থেকে হেফাজত করুক
Total Reply(1)
shohil ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:০৪ এএম says : 1
আল্লাহ আমাদের সবাইকে শিরক থেকে হেফাজত করুক
খালেদ ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:০১ এএম says : 0
অত্যান্ত সময় উপযোগী লেখা
Total Reply(0)
রোমান ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:০২ এএম says : 0
লেখাটির জন্য উবায়দুর রহমান খান নদভী সাহেব ও দৈনিক ইনকিলাবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি
Total Reply(0)
Moazzem Hossain ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৩৯ এএম says : 1
মহান আল্লাহ আমাদের শিরক মুক্ত ঈমানদার হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন