এক সময়কার বিএনপির দূর্গ বলে খ্যাত খুলনার রাজপথ এখন আওয়ামী লীগের কব্জায়। সিটি মেয়র ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দুই প্রবীণ নেতার পাশাপশি তরুণ নেতারা এখন মাঠে সক্রিয়। প্রচার প্রচারণা, সভা সমাবেশ ও জাতীয় কর্মসূচিতে রাজপথ দখল করে আছে এসব আলোচিত তরুণ নেতারা। যাদেরকে বলা হচ্ছে খুলনার ‘নেক্সট লিডারশীপ’।
সার্বক্ষণিক মাঠে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি কর্মীবান্ধব হবার কারণে তরুণ প্রজন্মের এসব নেতারা আলোচনায় এসেছেন, এদের কেউ কেউ রাজনৈতিকভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন, কেউবা কাক্সিক্ষত পদ পদবী না পেলেও মাঠে সক্রিয় থাকার কারণে আলোচনায় রয়েছেন। দলে এসব নেতারা ফ্রন্ট ফাইটার হিসাবে পরিচিত, নেতা-কর্মীদের মাঝে জনপ্রিয়তার কারণে এরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ অঙ্গনে আলাদা অবস্থান করে নিয়েছেন।
আলোচিত আওয়ামী লীগের নেক্সট লিডারশীপরা হচ্ছেন সোনাডাঙ্গা থানা শাখার একাধিকবার সভাপতি, একই সাথে খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির কয়েক দফায় সহ-সভাপতি বুলু বিশ্বাস। খুলনাতে বসবাসরত শেখ পরিবারের আস্থাভাজন ধনাঢ্য বুলু বিশ্বাস রাজনীতির নেপথ্যে ভোটের অন্যতম কিং মেকার।
শফিকুর রহমান পলাশ খুলনা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক। খুলনা সিটি মেয়রের অনুসারী পলাশ দাঁত কামড়ে মাঠের রাজনীতিতে সব সময়েই সক্রিয় ছিলেন। মেধাবী পলাশ ব্যক্তিগত সততা, দলের প্রতি একনিষ্ঠতা, কর্মীবান্ধব, সদালাপী হবার কারণে খুলনার রাজনীতিতে ইউটার্ন করে ফিরে এসে নিজ যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন তেমনি আজকের খুলনার রাজনীতিতে তিনি অন্যতম ফ্যাক্টর।
খুলনার নগর রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচিত চমক হচ্ছে শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন। শেখ পরিবারের সন্তান শেখ সুজন ব্যক্তিগত জীবনে ভদ্র, মার্জিত ব্যবহারের কারণে রাজনীতিতে ইতোমধ্যেই পৃথক একটা অবস্থান করে নিয়েছেন। ছাত্রলীগ খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি সুজন বর্তমানে একই সঙ্গে খুলনা মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক। দল ও দলের বাইরে কর্মীবান্ধব সুজনের জনপ্রিয়তা দেখার মতো। রাজনীতিতে সক্রিয় হবার পর থেকে আজ অবধি সুজনের কোনও বদনাম নেই। ক্লিন ইমেজ নিয়ে রাজনীতি করতে চান দলের প্রয়াত নেতা শেখ শহিদের এই সন্তান।
ছাত্রলীগের পদ বঞ্চিত ও নিষ্ক্রিয় একঝাক নেতা-কর্মীকে নিয়ে বছর দুই আগে সাবেক ছাত্রলীগের ব্যানারে মাঠে নেমে খুলনাতে নতুন করে চমক সৃষ্টি করেন সাবেক ছাত্রনেতা শেখ মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম।
৮০’র দশক থেকে রাজপথেই আছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা অসিত বরণ বিশ্বাস। একজন কর্মীর মতোই সরাসরি ফ্রন্ট লাইনের ফাইটার। পোস্টার লাগানো থেকে শুরু করে ওয়ালিং করা, হরতালে পিকেটিং করা, দলের সব ধরণের কর্মসূচিতেই অসিত সবসময়েই সক্রিয়।
জেলা শাখার অতন্দ্র প্রহরী বলে খ্যাত কামরুজ্জামান জামাল ছাত্রলীগ যুবলীগ থেকে এখন আওয়ামী লীগের জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমান সভাপতি শেখ হারুনের অন্যতম অনুসারী জামাল গোটা জেলায় দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। এক সময় বিএনপি বিরোধী আন্দোলনে জামাল ছিলেন ফ্রন্ট লাইনে।
দলের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদি সুজার সন্তান সুকর্ণ। বাবার মতোই রাজনৈতিক মুরুব্বী বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল নিজ থেকেই সুকর্ণর দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন। প্রস্তাবিত জেলা কমিটিতে সুকর্ণ এবার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পাচ্ছেন, এটা ওপেন সিক্রেট।
খুলনা আওয়ামী লীগের প্রয়াত ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাদিউজ্জামান হাদির সন্তান এজাজ। বাবা জীবদ্দশায় উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। বাবার পথ ধরে এজাজ এখন উপজেলা চেয়ারম্যান। সে রয়েছে এখন লাইমলাইটে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন