মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

মুরতাদ কাকে বলে

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৪ এএম

কোনো মুসলমান যখন ইসলাম ত্যাগ করে নাস্তিকতা বা অন্য ধর্ম অবলম্বন করে তখন তাকে ইসলামী পরিভাষায় মুরতাদ বলে। কোনো ধর্ম গ্রহণ না করা কিংবা আনুষ্ঠানিক নাস্তিক না হওয়া ব্যক্তিও মুরতাদ। কারণ, নিজ ধর্ম ইসলামের প্রতি অনাস্থা, অবিশ্বাস ও দ্বিধা-সংশয় মনে স্থান দিলেই মানুষ রিদ্দাত রোগে আক্রান্ত হয়। এর অর্থ প্রত্যাখ্যান। ইসলামকে প্রত্যাখ্যান। পশ্চিমা জগতে বলা হয় রিজেকশান।

রাষ্ট্রীয়ভাবে রিদ্দাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড। মুরতাদ মানে কাফের হয়ে যাওয়া। শিরকে বিশ্বাসী হয়ে শিরকী আমল করলেও মানুষ কাফের ও মুরতাদ হয়। ইসলামের কোনো বিধানকে অস্বীকার করলে, ঈমানের কোনো বিষয়কে অবিশ্বাস ও সন্দেহ করলে মানুষ মুরতাদ হয়। যেখানে ইসলামী রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থা নেই, শরীয়তি বিচারব্যবস্থা নেই, সেখানে মুরতাদকে ব্যক্তি ও সমাজ শাস্তি দিতে পারে না। মৃত্যুদন্ড কেবল ইসলামী আদালত দিতে পারে। ইসলামে আইন হাতে তুলে নেয়ার বৈধতা নেই।

তবে, কয়েক জায়গায় জরুরি অবস্থায় আইন হাতে তুলে নেয়া জায়েজ। আদালত পরে একে স্বীকৃতি দিবে। যেমন- খুনি, ডাকাত, ছিনতাইকারী ইত্যাদির হাতে নিহত হওয়ার আগে নিজে তাকে হত্যা করা। নিজ গৃহে কোনো শত্রুকে আক্রমণোদ্ধত অবস্থায় বাধা দিতে গিয়ে মেরে ফেলা। নবী করিম (সা.) এর শানে কুফুরীসুলভ বিষদগার ও বেয়াদবি দেখামাত্র কাউকে হত্যা করা। প্রকৃত নাস্তিক মুরতাদ গ্রæপ কর্তৃক প্রাণঘাতী আক্রমণের শিকার হয়ে আত্মরক্ষার জন্য তাদের হত্যা করা।

আমাদের মুসলিম সমাজেও জেনে না জেনে, বুঝে না বুঝে অসংখ্য মানুষ মুরতাদ হয়ে যাচ্ছে। কাফের, মুশরিকদের চরিত্র তাদের মধ্যে ঢুকে গেছে। বহু মানুষ জন্মগত, বংশীয় ও সামাজিক পরিচয়ে মুসলমান। তারা বিশ্বাস চেতনা জ্ঞান শিক্ষা ও আচরণে মুসলমান স¤প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে।

এদের বাপ-দাদার আমলে তারা যা ভাবতেন, করতেন, এর অনেক কিছুই এরা ত্যাগ করে একজন আধা বা কোয়ার্টার মুসলিমে পরিণত হয়েছে। সহজ কথায় বলা যায়, এরা ইসলাম ত্যাগ করে মুরতাদ বেদীন হয়ে গেছে। এটি ফতোয়া। আর একটি কথা এখানে থেকে যায় যে, এদের পেছনে ইসলাম প্রচারক ও আলেম-ওলামাগণের সীমাহীন মেহনত করতে হবে। মুসলিম উম্মাহ আজ রিদ্দাত সমস্যার সম্মুখীন। মানে মুসলমানদের সন্তানের ধর্মীয় বিশ্বাস চেতনা জ্ঞান শিক্ষা ও আদর্শের প্রতি অবজ্ঞা, এমনকি অস্বীকার করে ইসলাম ত্যাগ বা রিজেকশন সঙ্কট। যাকে ইরতিদাদ বা রিদ্দাত বলা হয়। সবাই মিলে এখন এটা মোকাবেলা করতে হবে।

এটি নতুন সমস্যা নয়। নবী করীম (সা.)-এর ওফাতের পরপরই এটা দেখা দিয়েছিল। হযরত আবু বকর (রা.) এর মোকাবেলা করে ইসলামের পূর্ণ রূপকে নিখুঁতভাবে সুরক্ষিত রেখেছেন। যুগে যুগে এই ফিতনা পাওয়া যায়, আলেম ওলামা ও ইসলাম প্রচারকগণ এর সফল মোকাবেলা করে ইসলামের পূর্ণ রূপকে নিখুঁতভাবে হেফাজত করে দেড় হাজার বছর ধরে আমাদের সবাইকে মুসলিম হওয়ার পথে সহায়তা করে গেছেন। আল্লাহ তাদের উম্মতের পক্ষ থেকে উত্তম জাযা এবং পুরস্কারে ভূষিত করুন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের ঈমান ও ইবাদতের মধ্যে সকল প্রকার দ্বিধার ঊর্ধ্বে থাকার তৌফিক দান করুন। সকল প্রকার দো’টানা চরিত্র থেকে হেফাজত করুন। কাজ ও কথায় মিল রেখে চলার তৌফিক দান করুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Nahid Hossain ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:১২ এএম says : 0
আল্লাহ তায়ালা আমাদের ঈমান ও ইবাদতের মধ্যে সকল প্রকার দ্বিধার ঊর্ধ্বে থাকার তৌফিক দান করুন।
Total Reply(0)
jesmin anowara ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:২৪ এএম says : 1
currently most of government leaders of Bangladesh do not care about Quran and Hadith , They openly violate the Quran.
Total Reply(0)
আবদুল মান্নান ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৫ এএম says : 0
আল্লাহ তায়ালা আমাদের ঈমান ও ইবাদতের মধ্যে সকল প্রকার দ্বিধার ঊর্ধ্বে থাকার তৌফিক দান করুন।
Total Reply(0)
জুয়েল ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৬ এএম says : 0
লেখাটির জন্য উবায়দুর রহমান খান নদভী সাহেবকে ধন্যবাদ
Total Reply(0)
পলাশ ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৬ এএম says : 0
অনেক কিছু জানতে পারলাম
Total Reply(0)
শর্মি ৬ জুন, ২০২১, ৭:১১ পিএম says : 0
নিজের বাড়িতে কেউ আক্রমণ করতে আসলে কি তাকে মেরে ফেলা জায়েজ? দয়াকরে উওর দিবেন।????????
Total Reply(0)
julfika ২৭ জুন, ২০২১, ৯:০৭ পিএম says : 0
না,গেনের অভাব।
Total Reply(0)
মাহবুবর রহমান ১১ অক্টোবর, ২০২২, ১১:৫২ এএম says : 1
ইসলামের প্রথম মুরতাদ কে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন