শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রোমাঞ্চ জাগিয়েও পারল না পাকিস্তান

৪২১৮ দিন পর ফাওয়াদের সেঞ্চুরি!

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

বয়স পেরিয়েছে ৩৫। ফের টেস্ট খেলার সুযোগ মিলেছে প্রায় ১১ বছর পর। কিন্তু নিজের সামর্থ্য কিংবা নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত, কোনোটির প্রতিই সুবিচার করতে পারছিলেন না ফাওয়াদ আলম। চিরতরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দুয়ার বন্ধ হওয়ার অবস্থা ছিল তার সামনে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট হয়তো তার জন্য ছিল শেষ সুযোগ। আর তা দারুণভাবে কাজে লাগালেন পাকিস্তানের এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে কেবল দলে জায়গা ধরে রাখাই নিশ্চিত করেননি তিনি, ৪ হাজার ২১৮ দিনের দীর্ঘ অপেক্ষারও ইতি টেনেছেন।
ভীষণ কঠিন পরিস্থিতিতে তার ব্যাটে ম্যাচ বাঁচানোর আশা করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাইল জেমিসন, নেইল ওয়েগনারের তোপে ম্যাচ মুঠোয় নেয় কিউইরা। শেষ উইকেটেও একটা প্রতিরোধ হয়েছিল। যা ভেঙ্গে রোমাঞ্চ জাগিয়ে ম্যাচ জেতে স্বাগতিকরা। দিনের মাত্র ৪ ওভার বাকি থাকতে নিউজিল্যান্ড পাকিস্তানকে ২৭১ রানে গুটিয়ে ম্যাচ জেতে ১০১ রানে। দুই ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে। গতকাল শেষ দিনে হাতে থাকা ৭ উইকেট নিয়ে ৩০২ রান তুলার অবিশ্বাস্য পথে হাঁটেনি পাকিস্তান। তাদের ধ্যান ছিল সারাদিন ব্যাট করে ম্যাচ বাঁচানো। সেই পথে দলকে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছিলেন ফাওয়াদ।
আগের দিনের ৩ উইকেটে ৭১ রান নিয়ে নেমে শুরুতেই আজহার আলিকে হারায় পাকিস্তান। ট্রেন্ট বোল্টের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ফেরেন ৩৮ রান করে। এরপরই শুরু ফাওয়াদ-রিজওয়ানের প্রতিরোধ। পঞ্চম উইকেটে দুজনে টিকে ছিলেন ৬৩ ওভার। ম্যাচ নিয়ে এসেছিলেন দিনের শেষ সেশনে। ১৬৫ রানের এই জুটি অনেক চেষ্টায় ভাঙ্গতে পারে নিউজিল্যান্ড। পেসার জেমিসনের বলে ৬০ রান করা রিজওয়ানের জোরালো এলবিডব্লিউ আবেদনে সাড়া দেননি মাঠের আম্পায়ার। মরিয়া নিউজিল্যান্ড রিভিউ নিয়ে ফেরায় পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ককে।
তখনই আসলে ধসের শুরু। ফাওয়াদের উপর ছিল দলের পুরো ভরসা। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নায়ক বনতে যাচ্ছিলেন তিনি। ওয়েগনার, জেমিসনরা তাকে থামাতে নিলেন নানান কৌশল। একবার ওভার দ্য উইকেট, আরেকবার রাউন্ড দ্য উইকেটে বল করতে থাকলেন ওয়েগনার। লম্বা সময় বাউন্সার সামলে ক্রিজে পড়ে থাকা ফাওয়াদ এতে যেন হয়ে গেলেন বিভ্রান্ত। ওভার দ্য উইকেটে বল করতে লেগ স্টাম্পের বাইরে বাউন্সার টুকলেন ওয়েগনার। স্কয়ার লেগ দিয়ে ঘুরিয়ে মারতে গিয়ে পুরো ব্যাট লাগাতে পারলেন না ফাওয়াদ। ক্যাচ গেল কিপারের হাতে। থেমে গেল ২৬৯ বলে এই বাঁহাতির ১০২ রানের প্রতিরোধ। এরপর হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ার গল্প। প্রথম ইনিংস ৯১ করা ফাহিম আশরাফ কাটা পড়লেন ওয়েগনারের স্যুয়িংয়ে কিপারের হাতে ধরা দিয়ে। ইয়াসির শাহকে ছাঁটলেন জেমিসন, মোহাম্মদ আব্বাসকে মিচেল স্যান্টনার।
কিন্তু ম্যাচের ফল লিখে রাখা লোকদের খানিক পর থমকে দিচ্ছিলেন পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটসম্যান। কেবল ১০ রানের একটা জুটি। কিন্তু তারা টিকে গিয়েছিলেন ৮ ওভার। আর চারটা ওভার টিকতে পারলে ম্যাচ হয়ে যেত ড্র। শেষ পর্যন্ত উইলিয়ামসনের বুকে ধুঁকপুকুনি থামান স্যান্টনার। নাসিম শাহকে কট এন্ড বোল্ড করে উল্লাসে মাতেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড : ৪৩১ ও ২য় ইনিংস : ১৮০/৫ (ডি.)। পাকিস্তান : ২৩৯ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৩৭৩, আগের দিন ৭১/৩) ১২৩.৩ ওভারে ২৭১ (মাসুদ ০, আবিদ ০, আজহার ৩৮, হারিস ৯, ফাওয়াদ ১০২, রিজওয়ান ৬০, ফাহিম ১৯, আফ্রিদি ৮*; সাউদি ২/৩৩, বোল্ট ২/৭২, জেমিসন ২/৩৫, ওয়্যাগনার ২/৫৫, স্যান্টনার ২/৫২, উইলিয়ামসন ০/১)। ফল : নিউজিল্যান্ড ১০১ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : কেন উইলিয়ামসন। সিরিজ : ২ ম্যাচে ১-০তে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন