শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচন প্রতীক নয়; ব্যক্তি ইমেজে মেয়র নির্বাচিত করতে চান ভোটাররা

নেছারাবাদ(পিরোজপুর)উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৯ পিএম

স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচনের আর মাত্র চৌদ্দ দিন বাকি। গত ১১ই জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দর মধ্য দিয়ে প্রার্থীরা জোড় গতিতে চালাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় মুখর হয়ে ওঠছে পৌর শহরের অলিগলি। বিশেষকরে মেয়র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়ারমত। এবারের স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র কাউন্সিলর পদ মিলিয়ে মোট ৫৫ প্রার্থী নির্বাচন করছেন। ভোটারদের মন জয়ে প্রার্থীরা দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তারাও মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছেন গনসংযোগ ও উঠান বৈঠক।

এবারের স্বরূপকাঠি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ,বিএনপি,জাতীয়পার্টি ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ছয় জন প্রতিদন্ধিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গোলাম কবির(নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মো: শফিকুল ইসলাম ফরিদ(ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো: নুরুল ইসলাম(লাঙল), পৌর যুবলীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী শিশির কর্মকার(জগ), স্বতন্ত্র প্রার্থী সহকারি অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান খান(টেলিফোন), স্বতন্ত্র প্রার্থী থানা পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ(নারিকেল গাছ)।

বিজয় নিজের অনুকুলে রাখার জন্য উক্ত ছয় মেয়র প্রার্থীর সবারই মাঠের অবস্থান চোখে পড়ারমত। তবে,এরমধ্য আওয়ামীলীগের গোলাম কবির, স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুর রহমান খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, বিএনপির শফিকুল ইসলাম ফরিদ,স্বতন্ত্র শিশির কর্মকার এর মাঠের অবস্থান সমানতালে এগিয়ে চলছে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন। তাই তীব্র প্রতিদন্ধি প্রতিযোগী এই পাঁচ প্রার্থীর মাঠের অবস্থান দেখে ভোটের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত আগাম হারজিতের সমিকরন হিসাব করা দুরুহ ব্যপার বলে মনে করছেন সচেতন পৌরবাসীরা।

পৌরবাসীর একাধিক ভোটাররা জানান, এবারের স্বরূপকাঠি পৌর নির্বাচনে তারা ভোট দিবেন, প্রতীক দেখে নয়;ভোট দিবেন প্রার্থী দেখে। ভোট দিতে তারা মূল্যায়ন করবেন প্রার্থীদের অতীত কর্মকান্ড আচার-আচরন ও সামাজিক অবস্থান। স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের স্নাতকউত্তর পাশ কার সাইদুল ইসালাম নামে এক যুবক বলেন, যদি তারা ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে পারেন, তাহলে তিনি তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন। এভাবে কেবল শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলামই নন পৌরসভার একাধিক ভোটারদের ভাষ্য স্বরূপকাঠির বিগত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেননি। তাই যদি সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিবেশ বজায় থাকে তাহলে তারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে স্ব-স্ব পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন।

জয়ের ব্যপারে শতভাগ আশাবাদি হয়ে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গোলাম কবির বলেন(নির্বাচনী মার্কা নৌকা), তিনি দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। তাই দলের প্রায় বেশির ভাগ লোকই শক্তভাবে কাধে কাধ মিলিয়ে দলের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তাছাড়া তিনি বিগত পাঁচ বছরে পৌরসভার যে উন্নয়ন করেছেন, পৌরবাসী তার মূল্যয়ন করে অবশ্যই তাকে পূনরায় ভোট দিয়ে আবারো মেয়র নির্বাচিত করবেন।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম ফরিদ(নির্বাচনী মার্কা ধানের শীষ) বলেন, মানুষ ধানের শীষে ভোট দিতে উম্মাদ হয়ে রয়েছে। শক্ত হাতে কোমর বেঁধে বিএনপির কর্মী সমর্থকরা মাঠে নেমেছে। ধানের শীষের সমর্থকরা সবাই যদি ভোটের দিন পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারেন, তাহলে অবশ্য ৩০ জানুয়ারির পৌর নির্বাচনে তিনি মেয়র পদে ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী হবেন।

স্বরূপকাঠি পৌর যুবলীগের সভাপতি (স্বতন্ত্র) মেয়র প্রার্থী শিশির কর্মকার(নির্বাচনী মার্কা জগ) তিনি বলেন, বিগত পাঁচ বছরে একটা রাজনৈনিক অবস্থানে থেকে সর্বদা অধিকার বঞ্চিত মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। মহামারি করোনাকালে অসহায় মানুষদের অনেক সাহয্য সহযোগীতা করেছি। তাই তিনি মনে করেন, মানুষ এসব মূল্যয়ন করে অবশ্যই তাকে মেয়র পদে নির্বাচিত করবেন। তার মাঠের অবস্থান খুবই ভাল বলে শিশির কর্মকার জানান।

পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান (স্বতন্ত্র) মেয়র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ(নির্বাচনী মার্কা নারিকেল গাছ) বলেন, দল তাকে মনোনয়ন না দিলেও সর্বদা তিনি দলের অসহায় কর্মীদের খোঁজ খবর রেখেছেন। দলের বাহিরে ছাড়াও তিনি দলমত নির্বিশেষে অসহায় মানুষদের সাহয্য সহযোগীতা করছেন। তাই এখন পাকাপোক্তভাবে সবার সাথে থাকার জন্য মুরব্বিদের অনুরোধে স্বতন্ত্র মেয়র পদে নির্বাচনে নেমেছি। ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনে মানুষ নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে অবশ্য তিনি মেয়র পদে নির্বাচিত হবেন বলে আশা করেন।

সহকারি অধ্যাপক মাহ্মুদুর রহমান খান স্বতন্ত্র (নির্বাচনী মার্কা মোবাইল ফোন) বলেন, শিক্ষকতা জীবনে অনেক মানুষের ভালবাসা পাচ্ছি। জীবনে কারো উপকার ছাড়া কখনো অপকার করিনি। তাই সেই ভালবাসা নিয়ে নির্বাচনে দায়িছি। তাই তিনি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি।

৪.৯৮ বর্গ কিলোমিটারের আয়তনে স্বরূপকাঠি পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৯ শত ২১ জন। এরমধ্য পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৭হাজার ৩ শত ২৫ এছাড়া মহিলা ভোটার রয়েছে ৭হাজার ৫শত ৯৬ জন। ১৯৯৮ সালে ১৭ ডিসেম্বর স্বরূপকাঠি পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হয়। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর স্বরূপকাঠি পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখানকার বর্তমান মেয়র গোলাম কবির।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন