শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলন

হুমকীতে নদীর তীরবর্তী এলাকা

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:৪২ পিএম

যেনতেন ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে কুড়িগ্রামে জেলার রাজিবপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী গ্রাম গুলি। এলাকার প্রভাবশালীরা এমন রমরমা বালুর ব্যবসা চললেও এ ব্যাপারে প্রশাসন কোন ভূমিকাই পালন করছেন না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম এবং সোনাভরি নদীতে সারি সারি অন্তত ৩০টি ড্রেজার মেশিন নদীর কিনারে বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী বালু উত্তোলনকারীরা। বসত ভিটা, রাস্তা, বলক তৈরি, স্কুল মাঠ ভরাটের জন্য ট্রাক্টর দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে এসব বালু। এতে উপজেলার অনেক নদীতে অসময়ে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নদী তীরবর্তী মোহনগঞ্জ, চর নেওয়াজী, কোদালকাটি, বাউল পাড়া, বালিয়ামারী, রাজিবপুর মুন্সিপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে হুমকির মুখে।
ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলনকারী মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের শামীম হোসেন জানান, রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল হাই সরকার আমাকে অনুমতি দিয়েছেন এবং তা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে দিয়েছেন।
বালু উত্তোলনকরা এলাকার অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, উজ্জল হোসেন নামের এক ড্রেজার মেশিন মালিক ডাকাত দলের সদস্য। কেউ ড্রেজার সম্পর্কে কথা বলতে গেলে ডাকাতের ভয় দেখায়।

ড্রেজার মালিক মতিউর রহমান বলেন, প্রশাসনকে প্রতিমাসে ২ হাজার করে টাকা দিতে হয়, টাকা দিলে সব চলে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল হাই সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমি উদ্বোধন করি নাই। তবে আমার একটি ড্রেজার মেশিন আছে যা সরকারী রাস্তার কাজে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বøক তৈরির কাজের জন্য বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
প্রশাসনিকভাবে নিষেধ করা সত্বেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধুমছে চালাচ্ছে বালুর ব্যাবসা। অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধের জন্য দফায় দফায় রাজিবপুর উপজেলা ভুমি কমিশনার, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না ভ‚ক্তভোগিরা।
এ ব্যাপারে রাজিবপুর উপজেলা কমিশনার (ভ‚মি) গোলাম ফেরদৌস জানান, আমি ড্রেজার মেশিন চালানোর কোনও অনুমতি দিইনি। কয়েকদিন আগে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন সহকারী ভ‚মি কর্মকর্তা খালেকুজ্জামানকে পাঠিয়ে অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করেছি। কাজের চাপে ওই এলাকায় যাওয়া হয় নাই। তবে আমি দ্রæত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম নদী শাসনের কাজ পরিদর্শনে এসে কয়েকটি ড্রেজার মেশিনের কিছু মালামাল জব্ধ করে নিয়ে সব ড্রেজার বন্ধের নির্দেশ দিয়ে চলে যান। কিন্তু আবারও চালু করা হয় ওই সব ড্রেজার মেশিন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, কোন ড্রেজার মেশিনের অনুমতি আমার দেয়া নাই। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ মেশিন চালালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবীরুল ইসলাম জানান, কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন