শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বশেমুরবিপ্রবিতে ১৩০ শিক্ষার্থীর সাথে প্রতারণার অভিযোগ

গোপালগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৬ পিএম

২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি নেওয়া ১৩০ জন শিক্ষার্থীর সাথে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শেখ হাসিনা ইন্সটিটিউট অব আইসিটির শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে ইন্সটিটিউটে অধ্যয়নরত ৮৭ জন শিক্ষার্থী এ অভিযোগ করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপেক্ষা করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড.খোন্দকার নাসিরউদ্দিন ও সেই সময়ে ভর্তি কমিটিতে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা শেখ হাসিনা ইন্সটিটিউট অব আইসিটিতে সিএসই, ইইই ও ইটিই বিভাগের অধীনে স্নাতক পর্যায়ে ১৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেন। ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছিল, মূল ক্যাম্পাসের অদূরে মাদারীপুরের শিবচরে তাদের ক্লাস করতে হবে। সেখানে শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব ও আবাসনসহ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এমনকি স্নাতক শেষে তাদেরকে মূল ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মতো একই সনদপত্র দেওয়া হবে।

কিন্তু ভর্তি শেষে মাদারীপুরের শিবচরে গিয়ে এসমস্ত শিক্ষার্থীরা দেখেন উল্টো চিত্র। সেখানে ছিল না পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব এমনকি আবসন ব্যবস্থা। আর মূল ক্যাম্পাস থেকে শিবচরের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটারের অধিক এবং নিয়ম না মেনেই ঐ ইন্সটিটিউটে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ থেকে শিক্ষকেরা গিয়ে সপ্তাহে ১ দিন ক্লাস নিতেন এবং পুরো সেমিস্টারের ল্যাব শেষ করতেন ২ দিনে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন প্রতারণা দেখে ঐ ইন্সটিটিউটের ৩৬ জন শিক্ষার্থী দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে অন্যত্র চলে যান। আর ইটিই বিভাগের ৭ জন শিক্ষার্থীকে মূল ক্যাম্পাসের ইটিই বিভাগের সাথে একীভূত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহানের সময়ে। অবশিষ্ট ৮৭ জন শিক্ষার্থীকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে বলা হয়।

মূল ক্যাম্পাসে ফিরেও ৮৭ শিক্ষার্থীর বিড়ম্বনা কম হয়নি। তাদেরকে নিজেদের টাকায় বোর্ড-মার্কারসহ যাবতীয় শিক্ষাসরঞ্জামাদি কিনে ক্লাস করতে হয়েছে। সে সময়ে শিক্ষকদের বিরূপ আচরণেরও শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন এসমস্ত শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ভর্তির পরে তিন বছর পার হলেও এপর্যন্ত ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের মাত্র এক সেমিস্টার সম্পন্ন হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইন্সটিটিউটটির সিএসই ও ইইই বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রায় ২০ হাজার টাকা ভর্তি ফি দিয়ে ইন্সটিটিউটটিতে ১৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলাম। ঐ সময়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বি কে বালা, সিএসই বিভাগের শিক্ষক মো. আক্কাছ আলী ও মো. মনোয়ার হোসেন আমাদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আশ্বাস্ত করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বুঝতে পারলাম আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এখন আমরা বাধ্য হয়ে মূল ক্যাম্পাসের স্ব স্ব বিভাগের সাথে একীভূতকরণের দাবিতে আন্দোলন করছি।

এবিষয়ে তৎকালীন সময়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বি কে বালা অন্যত্র চলে যাওয়ায় এবং সিএসই বিভাগের শিক্ষক মো. আক্কাছ আলী দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে সিএসই বিভাগের অপর শিক্ষক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, আমি কাউকে কখনো কোনো বিষয়ে আশ্বস্ত করিনি। আমি ওই সমস্ত শিক্ষার্থীদের চিনিও না।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব বলেন, ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে অবগত রয়েছি। অ্যাকাডেমিক ও রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং শেষে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দিকনির্দেশনা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন