মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহপাকের দেয়া নীতি ও আদর্শের অনুগত হোন

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

এই পৃথিবীতে মানুষ আল্লাহপাকের খলীফা বা প্রতিনিধি। তাই, মানুষকে প্রতিনিধিত্বশীল দায়িত্ব ও কর্তব্য নিষ্পন্ন করার উপযোগী করেই তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। দুনিয়াতে আগমনকারী প্রথম মানব হলেন হযরত আদম (আ.) এবং প্রথম মানবী হলেন হযরত হাওয়া (আ.)। পৃথিবীতে অবতরণের পূর্বে এই প্রথম মানব ও প্রথম মানবীর পারিবারিক জীবন শুরু হয়েছিল উভয়ের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে।

এই বিবাহ বন্ধনই হলো বৈধ পন্থায় মানব বংশ বৃদ্ধির আল্লাহপাক কর্তৃক নির্ধারিত পথ। তাই দেখা যায়, হযরত আদম (আ.) হতে শুরু করে মানব বৃদ্ধির পাশাপাশি সত্য এবং ন্যায়ের পথে থাকার জন্য আল্লাহপাক এক লক্ষ চব্বিশ হাজার বা দুইলক্ষ চব্বিশ হাজার নবী-রাসূল দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন এবং তাদের মাঝে সহীফা এবং কিতাব নাজিল করেছেন।

নবী ও রাসূলগণ ক্রমবর্ধমান মানব জাতি গোষ্ঠিকে সৎ পথের দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন এই সহীফা ও কিতাবে প্রদত্ত নীতিমালার আলোকে। তাই দেখা যায়, সকল আসমানী কিতাবেই নারী এবং পুরুষের মধ্যে বৈধভাবে মানব বৃদ্ধির পথ রচনার জন্য বিবাহকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল এবং আল কোরআনে বৈবাহিক জীবন ব্যবস্থার যাবতীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, পরিবেশ, পরিস্থিতি এবং প্রয়োজনের প্রাক্কালে বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাক প্রদানের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। যাতে করে পৃথিবীতে বসবাসকারী নর ও নারীর জীবন চলার পথ সুখকর ও আনন্দময় হয়। এটা আল্লাহপাকের এক মহা অনুগ্রহ। তিনি মানব জাতিকে এভাবে অনুগৃহীত করেছেন বলেই এই ধূলার ধরনীতে বিচরণকারী মানুষ জীবন ও জগতের সর্বত্র সুখ ও শান্তির নিঝর ধারা বইয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।

দিন, বছর, যুগ, কাল ও মহাকালের পৈঠায় অবস্থানরত মানব সমাজের সর্বত্রই তাদের অবস্থা অবস্থান ও কামনা বাসনা পরিপুরণের লক্ষ্যে বিবাহ কর্ম-সম্পাদিত হয়েছে বিভিন্ন রীতিতে ও বিভিন্ন কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে। সকল শ্রেণী-গোষ্ঠি ও ধর্মাবলম্বী মানুষ নিজ নিজ আচরিত ধর্মীয় নীতি অনুসারে বিবাহ কাজ নিষ্পন্ন করে আসছে। এর জের কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা’ নিশ্চিত করে বলা যায় না। আর বলা না গেলেও এতটুকু অবশ্যই বলা অসঙ্গত নয় যে, যতদিন এই পৃথিবীতে মানুষের পদচারণা থাকবে, ততদিন বিবাহকর্ম ও সম্পাদিত হতে থাকবে। এর মাঝে কোনো ব্যত্যয় সাধিত হবে না।

আসমানী কিতাব সমূহের মধ্যে সর্বশেষ কিতাব হলো আল কোরআন। এই কিতাব নাযিল হয়েছে আখেরী নবী হযরত মোহাম্মাদ মোস্তফা আহমাদ মুজতাবা (সা.)-এর ওপর। যার মাধ্যমে আল্লাহ পাক স্বীয় মনোনীত ধর্ম-ইসলামের পরিপূর্ণতা পরিসাধন করেছেন।

এই কিতাবে এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কর্ম প্রবাহের মাধ্যমে মুসলিমজন গোষ্ঠির বিবাহকর্ম নিষ্পন্ন করা এবং প্রয়োজনে তালাকের ব্যবস্থা করার যাবতীয় নিয়ম-নীতি বিধৃত আছে। বিবাহকর্ম সম্পাদনের জন্য নতুন কোনো কিছুর সংযোজন ও বিয়োজনের কোনোই প্রয়োজন নেই। তবুও এর সাথে কোনো শর্ত যদি জুড়ে দেয়া হয়, তবে তা ইসলামী আইন বা কর্ম পন্থা বলে সাব্যস্ত হবে না। বরং তা’ হবে মানুষের সংযোজিত শর্ত বা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এর মাঝে অপূর্ণতার কোনো ছোঁয়াচ নেই। ব্যক্তি জীবন হতে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবন ব্যবস্থার পরিপূর্ণ রূপ-রেখা ও নীতিমালা আল কোরআন ও আল হাদীসে বিদ্যমান আছে। এবং মুসলিম মিল্লাতের সর্বত্র তা অনুশীলিত হচ্ছে। ইসলাম অনুমোদিত বিবাহ কর্মটি ও এর বাইরে নয়।

যেহেতু নয়, সেহেতু এর সাথে নতুন কিছু আরোপ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করা কতখানি সুফল বয়ে আনবে-তা’ ভবিষ্যতের জমা-খরচের হিসাব-নিকাশের সত্যায়ন ছাড়া নির্ণয় করা দুরূহ ব্যাপার। কেননা, বৈজ্ঞানিক যুগের নটবর মানব মন্ডলী উন্নত জীবন ও জগতের স্বপ্নে যতখানি ছন্নছাড়া ও পাগলপারা হয়ে দিক বিদিক ছুটে চলেছে-তার শেষ কোথায় তা’ নিজেরাও উপলব্ধি করতে পারছে না। তাই বলছি, আল্লাহপাকের দেয়া নীতি ও আদর্শের অনুগত হোন। আল কোরআন ও আল-হাদীসের আলোকে জীবন গঠনে তৎপর হোন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Mohammad Mamun ২৪ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৫৪ এএম says : 6
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মুমিনের সব বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দিন। আল্লাহ তাআলার সব আদেশ-নিষেধ মেনে চলার তাওফিক দিন।
Total Reply(0)
হেদায়েতুর রহমান ২৪ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৫৫ এএম says : 5
আসলে একজন মুমিনের জীবনে সব চাওয়া-পাওয়া কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির খাতিরেই হয়ে থাকে। তার ব্যক্তিগত কোনো কামনা-বাসনা থাকে না আর এমন ব্যক্তিদেরই আল্লাহ তাআলা জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন।
Total Reply(0)
পারভেজ ২৪ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৫৬ এএম says : 4
আল্লাহ তাআলার কাছে হাজারো শুকরিয়া জ্ঞাপন করি এ জন্য যে তিনি আমাদেরকে সুস্থ রেখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের উচিত, সর্বাবস্থায় আল্লাহ দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করা।
Total Reply(0)
গিয়াস উদ্দীন ফোরকান ২৪ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৫৭ এএম says : 5
আমাদেরকে অবশ্যই আল্লাহপাকের দেয়া নীতি ও আদর্শের অনুগত হতে হবে।
Total Reply(0)
কামাল ২৪ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৫৭ এএম says : 4
আমাদেরকে আল কোরআন ও আল-হাদীসের আলোকে জীবন গঠনে তৎপর হতে হবে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন