সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাদের ঈমান শিখতে হবে। ইবাদত করতে হবে। লেনদেন ও সামাজিক সম্পর্ক শরীয়ত মতো করতে হবে। আখলাক তথা নীতি-নৈতিকতা ও আচরণ সুন্নাত মোতাবেক গঠন করতে হবে। এ জন্য আহলে ইলম বা উলামা মাশায়েখ, ইমাম, খতিব, উস্তাদ ও মুরব্বীদের সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন ফরয-ওয়াজিবের চেয়ে কম নয়। কেননা, শরীয়তে ফরযের প্রস্তুতিও ফরয। ওয়াজিব আদায়ের পথে যে বিষয়টি অপরিহার্য সেটিকেও ওয়াজিব বলা হয়েছে। আমাদের উচিত নামাজ শেখা। নামাজ পরিমাণ ক্বেরাত ও জরুরি দুআ-কালাম আলেমদের নিকট গুরুত্ব ও আগ্রহের সাথে শিক্ষা করা। মাসআলা-মাসায়েল শিখে নেয়া।
পবিত্র কোরআনে আছে, হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। তিনি প্রভু। তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। এবং তাদেরকেও তোমাদের পূর্বে গত হয়েছে। যাতে তোমরা মুত্তাকী খোদাভীরু সতর্ক জীবন যাপনকারী হতে পারো। যিনি তোমাদের জন্য এই ভ‚পৃষ্ঠকে সমতল গালিচার মতো এবং আসমানকে ছাদের মতো করেছেন এবং শূন্য থেকে পানি বর্ষণ করেন। এরপর তা দিয়ে তোমাদের রিজিক শষ্য ফল ফসল উৎপন্ন করেন। অতএব, তোমরা যখন সব জানো, তাই আর এই রবের কোনো সমকক্ষ বা শরীক সাব্যস্ত করো না। (সূরা বাকারা : আয়াত ২১-২২)।
ঈমান, ইবাদত, মুআমালাত, মুআশারাত, আখলাক অর্থাৎ ঈমান, ইবাদত-বন্দেগী, লেনদেন, কামাই-রুজি, আত্মীয়তা ও সামাজিক সম্পর্ক এবং নীতি-নৈতিকতা, আখলাক, আচরণ, মানবিক গুণাবলি ইত্যাদি সম্পর্কে সারা জীবন কিছু-না-কিছু শিখতে থাকা। এর ওপর আমল করা। নিজ পরিবারের নারী, শিশু ও অন্যান্য সদস্যকে এসব শিক্ষা দিতে থাকা এবং সমাজেও এই শিক্ষার প্রসার করা।
কারণ, আমাদের সমাজে দীনের বহুমুখী কাজ বহু বছর ধরে অব্যাহত থাকা সত্তে¡ও গোমরাহীরও শেষ নেই। আকীদার ক্ষেত্রে সমস্যা। ইলম ও আমলের অভাব। সঠিক দীনি বুঝের ক্ষেত্রে চরম হতাশা বিরাজ করছে। মানুষ দীনদারি কথাটির সঠিক মর্ম অনেক ক্ষেত্রেই উপলব্ধি করতে পারে না। ঈমান-একীনের অভাব। আমলের সঠিক সংজ্ঞার ক্ষেত্রে ত্রুটি। লেনদেন ও কামাই-রুজিতে দীনের কোনো হুকুম-আহকাম আছে কি না সেটাও মনে হয় অনেকের জানা নেই।
সামাজিক ও মানবিক বিষয়ে মানুষ নিজের ইচ্ছা মতো চলে। মনে করে, এ বিষয়ে ইসলামের কোনো আদর্শ নেই। পর্দার ব্যাপারে সচেতন মহিলারা অনেক সময় দীনের অন্য বিষয়ে সাধারণ জ্ঞানও রাখে না। তারা ব্যবহারিক ক্ষেত্রে কিংবা আচরণে মারাত্মক অধার্মিক। ইবাদত-বন্দেগীতে অগ্রসর কিংবা পোশাক-আশাকে ইসলাম অনুসারী এমন মানুষও আছে যারা কুফুরী মতাদর্শের প্রচারক ও নেতা। অর্থ-সম্পত্তি ও লেনদেনে তারা ইহুদী-খ্রিষ্টানদের চেয়ে কম নয়।
দীনি জ্ঞান ও ধারণার ক্ষেত্রে তারা মারাত্মক পশ্চাৎপদ। অথচ দীনি অঙ্গনে তারা নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে চায়। সামগ্রিক ইসলামের ধ্যান-ধারণা এতই দুর্দশা যে সমাজে আছে সেখানে প্রকৃত আলেমগণের কর্তব্য অপরিসীম। মহানবী (সা.) বলেন, জেনে রাখো, নিশ্চয় তোমরা সকলে দায়িত্বশীল। নিজ অধিনস্তদের বিষয়ে দায়িত্বশীল। আর প্রত্যেকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। (তিরমিজি শরীফ)।
এসব বিষয়েও জিম্মাদারের ভূমিকা আপনাকে নিতে হবে। দেন-মহর, নারীদের ওয়ারিশ, মানুষের পাওনা, আর্থিক স্বচ্ছতা এ দেশে চরম ইসলামপরিপন্থী রূপ নিয়ে সমাজে টিকে রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান ও হালাতের সংশোধন ছাড়া দীনের কাজ সুষ্ঠুভাবে এগোবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন