বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের একত্ববাদ

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এক, একক এবং তাঁর কোনো শরীক বা অংশীদার নেই। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : (ক) যদি আসমান ও যমীনে আল্লাহ ছাড়া আরো উপাস্য থাকত, তবে উভয়টিই ধ্বংস হয়ে যেত। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ২২)। (খ) বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাঁকে জন্ম দেয়নি, এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। (সূরা ইখলাস : আয়াত ১-৪)। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সর্বদা ছিলেন এবং সর্বদা থাকবেন। অর্থাৎ বিশ্ব স্রষ্টার সূচনা ও শেষ নেই। তিনি চিরন্তন, অনাদি, তিনি অনন্ত। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : (ক) ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে। শুধুমাত্র তোমার মহীয়ান-গরীয়ান পরওয়ারদিগার ঠিক থাকবেন। (সূরা আর-রাহমান : আয়াত ২৬-২৭)। (খ) ইমাম ত্বাহাবী বলেন : আল্লাহ পাক ‘ক্বাদীম’ অনাদি। তাঁর কোনো আরম্ভ নেই। তিনি চিরস্থায়ী। তাঁর কোনো শেষ নেই। আল্লাহ পাকের নাম ‘আল আউয়্যাল’ (প্রথম) আল আখীর (শেষ) দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে। তাঁর জন্য এ দুটিগুণ যুক্তিগ্রাহ্যও বটে। (আকীদায়ে ত্বাহাভিয়্যাহ মায়াশ শারহে-পৃষ্ঠা ১১১)।

(গ) আল্লাহতায়ালা ওয়াজিবুল ওজুদ। আর এর অর্থ হলো তাঁর ধ্বংস হওয়া বা তাঁর অস্তিত্ব লুপ্ত হওয়া অসম্ভব। অতঃপর তাঁর অনাদি অনন্ত হওয়া ভিন্নভাবে প্রমাণ করার কোনো আবশ্যকতা থাকে না। (শরহুল মাকাসিদ : ৩/১৬)।

বস্তুত : সর্ব প্রকার দাসত্ব, আনুগত্য ও ইবাদত বন্দেগী পাওয়ার যোগ্য সত্তা একমাত্র আল্লাহতায়ালা। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ ইবাদত বন্দেগী পাওয়ার যোগ্য নেই। এতদ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : (ক) তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি রহমান, তিনি রাহীম। (সূরা বাক্বারাহ : আয়াত ১৬৩)।

(খ) নিশ্চয়ই আমিই আল্লাহ। আমি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত করো। (সূরা ত্বাহা : আয়াত ১৪)। (গ) আমরা কেবল মাত্র তোমারই ইবাদত করি ও তোমারই সাহায্য কামনা করি। (সূরা আল ফাতিহা : আয়াত ৪)।

সকল আধিপত্যের অধিকারী ও পরম বিজ্ঞানময় আল্লাহ তায়ালাই হালাল-হারাম নির্ধারণকারী। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো হালাল হারাম নির্ধারণ করার অধিকার নেই। আল কোরআনে এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে : (ক) তিনি তোমাদের ওপর মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত, শুকরের গোশত ও আল্লাহর নাম ছাড়া অন্যের নামে যবেহকৃত ও উৎসর্গকৃত প্রাণী হারাম করেছেন। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১৭৩)।

(খ) আল্লাহতায়ালা ক্রয় বিক্রয় হালাল করেছেন আর সুদ ও কুসীদ হারাম করেছেন। (সূরা বাক্বারাহ : আয়াত ২৮৫)। (গ) বলুন, আল্লাহপাক স্বীয় বান্দাহদের জন্য যে সৌন্দর্য-শোভা ও পবিত্র রিযিক নির্ধারণ করেছেন, তা’ কে হারাম করতে পারে? (সূরা বাক্বারাহ : আয়াত ৩৩)। (ঘ) বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মাদ মুস্তাফা (সা.) বলেছেন : আমি হালাল বস্তুকে হারাম ঘোষণা করা এবং হারাম বিষয়কে হালাল ঘোষণা করার অধিকার রাখি না। (সহীহ বুখারী) : ১/৪৩৮)।

আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সকল সিফাতে জাতিয়া অর্থাৎ মৌলিক গুণাবলীর অধিকারী। তাঁর মৌলিখ গুণাবলীর মধ্যে প্রথমটি হল হায়াতের গুণ। সিফাতে জাতিয়া বলতে ঐ সব গুণকে বলা হয়, যাতে তিনি গুণান্বিত তো বটেই, এর বিপরীতগুণ তাকে স্পর্শ করতে পারে না। যেমন হায়াত (জীবন), কুদরাত (ক্ষমতা) ইলম (জ্ঞান), ইরাদা (ইচ্ছা), শ্রবণ, দর্শন, কথন, সৃষ্টি করণ ও অস্তিত্বদান ইত্যাদিগুণ আল্লাহতে বিদ্যমান। এগুলোর বিপরীতগুণ যথা-মরণ, অক্ষমতা, অজ্ঞতা, ইত্যাদি তাকে স্পর্শ করতে পারে না। সিফাতে হায়াতের অর্থ হলো আল্লাহতায়ালা চিরঞ্জীব। তিনি অনন্ত ও প্রকৃত জীবনের অধিকারী। তিনি সর্বদা বিরাজমান। সৃষ্টি জীবকে তিনিই জীবন দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
নওরিন ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৪০ এএম says : 0
তিনি আমাদের সকল কল্পনা, রূপকথা ও কল্প কাহিনীর বহির্ভুত এক সত্তা। এ বস্তু জগতের কোন কিছুর সাথে তাকে তুলনা করা চলে না।
Total Reply(0)
মনির হোসেন মনির ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৪১ এএম says : 0
আল্লাহ! আমাদের প্রকৃত তাওহিদের ওপর অটল থেকে সব ধরনের শিরক ও কুফুরি থেকে রক্ষা করে মৃত্যু দান করুন।
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৪১ এএম says : 0
আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, বরং আমরা সবাই তাঁর মুখাপেক্ষী। কেউ তাঁকে জন্ম দেয়নি। তিনিও কাউকে জন্ম দেননি। কোরআনে এসেছে, ‘বলে দাও, সব প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি, তাঁর রাজত্বে কোনো অংশীদার নেই, অক্ষমতা থেকে রক্ষার জন্য তাঁর কোনো অভিভাবকের প্রয়োজন নেই। তাঁর মহিমা বর্ণনা করো, ঠিক যেভাবে তাঁর মহিমা বর্ণনা করা উচিত।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১১১)
Total Reply(0)
নাবিল আব্দুল্লাহ ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৪২ এএম says : 0
সব সদ্‌গুণাবলির অধিকারী ও সর্বশক্তির আধার অবশ্যম্ভাবী সত্তা, যিনি অনাদি অনন্ত, যাঁর শুরু নেই, শেষ নেই, লয়-ক্ষয় ও পরিবর্তন নেই, কিছুই ছিল না, তিনি ছিলেন, সবকিছু ফানা হয়ে যাবে, তিনি থাকবেন, তিনি সব সৃষ্টির খালিক ও মালিক, সৃজন, লালন-পালন, সংরক্ষণ ও ধ্বংস সাধন যাঁর এখতিয়ার, সেই অদ্বিতীয় সত্তার নাম ‘আল্লাহ’।
Total Reply(0)
রায়হান ইসলাম ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৪৫ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর একত্ববাদের ওপর অটল ও অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)
salman ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৭:০৮ এএম says : 0
Allah hu- Akbar. Sub-han-Allah, Al-ham-du-lillah, La-e-la-ha Illah-lah
Total Reply(0)
মো:+শফিউর+রহমান ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১০:৩৫ এএম says : 0
দৈনিক ইনকিলাবকে অশেষ ধন্যবাদ এই দরনের কোরানের বানি প্রকাশ্যর জন্য । আমার অনুরোধ থাকবে প্রতিদিন বিশেষ করে দৈনিক পত্রিকার প্রথম বা শেষ পৃষ্ঠ বড় আকারে প্রকাশ করার জন্য । এই বাণী পরে আমার সমস্ত শরীরের পশম দাড়িয়ে যায় । এবং যারা ঈমানদার ব্যক্তি তারা স্হীর থাকতে পারবেনা কারন এত সূন্দর কোরানের বানি একজন বি-ধর্মি মানুষও স্হীর থাকতে পারবেনা । তাই আশা করি সঠিক ভাবে সঠিক আলেমের মাধ্যমে পবিত্র কোরানের বানী প্রকাশ করার জন্য ।
Total Reply(0)
Mohammad Anisur Rahman ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:০১ পিএম says : 0
Massallah
Total Reply(0)
Mohammad Anisur Rahman ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:০৩ পিএম says : 0
নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন