ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন অমুসলিম দেশে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী উগ্রপন্থী, বর্ণবাদী কিছু চক্র পবিত্র কোরআনের অবমাননা করার ধারা অব্যাহত রেখেছে। কিছু দিন পর পর, থেমে থেমে এসব খোদাদ্রোহী কুচক্রী দল কোরআন সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য-বাক্য লিখে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি আঘাত হানতে উন্মাদ-বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ওদের মধ্যে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ ডেনমার্কের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কোরআন সম্পর্কে আপত্তিকর বাক্য প্রচার এবং ইসলামের মহানবী তথা বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র, কাল্পনিক ছবি অঙ্কন করে প্রচার মাধ্যমগুলোতে ছেড়ে দেয়া ডেনমার্কে সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।
এমনি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দেয়া হয়েছে ডেনমার্কের একটি মসজিদে হামলার মাধ্যমে। ডেনমার্কের জার্মান সীমান্তে তুর্কি একটি মসজিদের দেয়ালে দুর্বৃত্তরা একটি আপত্তিকর লেখা লিখেছে। ওই তুর্কি মসজিদে একদল উগ্রবাদী ও বর্ণবাদী দুর্বৃত্ত হামলা চালায় এবং ডেনমার্কের চরমপন্থী খ্রিষ্টানরা প্রায়ই কোরআন পুড়ানোসহ বিভিন্ন বর্ণবাদী আচরণ করে থাকে বলে আনাদোলু সূত্রে জানা যায়।
মসজিদের দেয়ালে পবিত্র কোরআন শরীফ সম্পর্কে আপত্তিকর লেখার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিম নেতারা ইসলাম বিদ্বেষের নিন্দা জানিয়ে আসছেন। তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মসজিদ কমিটির প্রেসিডেন্টও তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা যায়।
কোরআন অবমাননার ঘটনা আমাদের একটি প্রতিবেশী দেশে অহরহ ঘটছে, ইসলামবিদ্বেষী নানা আচরণ যাদের মজ্জাগত ব্যাপারে পরিণত হয়ে গেছে, তাদের বিদ্বেষ তাদেরই অন্তরজ্বালা হবে, কোরআনের তারা কিছুই করতে পারবে না। কোরআনের অবমাননা করে তারা পার পেয়ে যাবে এমন ভাবা উচিত নয়। খোদায়ী গজবের শিকার তাদের হতেই হবে।
কোরআন অবমাননাকারী ডেনমার্কের দুর্বৃত্তদের এবং তাদের অনুসারী সকল কোরআনবিদ্বেষী চক্রের স্মরণ থাকা উচিত, কালামুল্লাহ শরীফের প্রতি অসদাচরণ, অসম্মান প্রদর্শন, এ মহাপবিত্র গ্রন্থের বিকৃতি এবং এর ভুল ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে অতীতে কেউ নিরাপদে থাকতে পারেনি। কেনো না কোনো খোদায়ী গজবের শিকার হয়ে তাদের অনেকের করুণ পরিণতি ঘটেছে। এরূপ হাজার হাজার দৃষ্টান্ত ইতিহাসে রয়েছে। খুব বেশি কাল আগের কথা নয়, বিগত শতকের শেষ দিকে খোদ তুরস্কের একটি শহর কোরআন অবমাননার এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে যায়, যা বিশ্ববাসীকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। তুরস্কেরই এক সামরিক জেনারেল একটি অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন অবমাননা করেছিল। সঙ্গে সঙ্গে এক মারাত্মক ভ‚মিকম্পে লোকালয়টি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় এবং উপস্থিত মানুষগুলোও খতম হয়ে যায়।
কোরআনবিদ্বেষী চক্রগুলোর স্মরণ থাকা উচিত, যে কোনো প্রকারেই কোরআন শরীফের অবমাননার করুণ পরিণতি দ্রিত বা বিলম্বে ঘটে থাকে এবং এর সুরক্ষা, সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা খোদ আল্লাহর হাতে এবং তিনি কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বলেছেন যে, কোরআনের হেফাজত তিনি নিজেই করবেন।
কোরআনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং তার মর্যাদা রক্ষা করে অনেকের জীবনে সৌভাগ্য আসার কাহিনী ইতিহাসে ভরপুর। পবিত্রতা ছাড়া যা স্পর্শ করা পর্যন্ত নিষেধ, তার প্রতি আপত্তিকর আচরণ, বেআদবী-গোস্তাখী হতে বিরত থাকা প্রত্যেক মানুষেরই কর্তব্য।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন