মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

‘মুকাররাবুন’ বান্দাহদের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

৭ সংখ্যাটি আল্লাহপাকের প্রশাসনের প্রতি দিকনির্দেশনা প্রদান করে। সৃষ্টিজগতের সব কিছুই আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের প্রশাসনের আওতাধীন। আল্লাহপাকের শাসনতন্ত্র হচ্ছে ‘আল কোরআন’। তা সর্বশেষ আসমানী কিতাব। এই কিতাবের বিধানসমূহ সারাবিশ্বে অচিরেই কার্যকর হবে। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।
বিশ্লেষণ- ১ : ৭ শ্রেণির লোক মুকাররাবুনদের অন্তর্ভুক্ত। যাদেরকে আল্লাহপাক হাশরের মাঠে আরশে আজীমের ছায়ায় স্থান দান করবেন। এ প্রসঙ্গে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : যে দিন আল্লাহর (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত শ্রেণির ব্যক্তিকে আল্লাহপাক নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন।

১. ন্যায়পরায়ন (ঈমানদার) শাসক। ২. সেই যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদাতের মধ্যে। ৩. সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। ৪. সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর ওয়াস্তে পরস্পরকে ভালোবাসে। একত্র হয় আল্লাহর জন্য পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য। ৫. সেই ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহŸান জানায়, কিন্তু সে এই বলে প্রত্যাখ্যান করে যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি। ৬. যেই ব্যক্তি এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না। ৭. সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিকির করে, ফলে তার দু’চোখ দিয়ে অশ্রæধারা বইতে থাকে। (সহীহ বুখারী : ১/৬৬০)।

বিশ্লেষণ - ২ : মুকাররাবুনদের অবশ্যই স্মরণ রাখা উচিত যে, ৭টি বস্তু এমন আছে যা অপর ৭টি বস্তু ছাড়া অর্থহীন ও মূল্যহীন হয়ে যায়। যথা : ১. যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করার দাবি করবে, কিন্তু পাপ ও গোনাহ থেকে বিরত থাকবে না। তার দাবি মিথ্যা ও অর্থহীন। ২. আল্লাহপাকের কাছে যে ব্যক্তি সওয়াব লাভের আশা পোষণ করে অথচ সৎ কাজ করে না। তার আশা মূল্যহীন ও বৃথা। কেননা, সৎকর্ম সম্পাদনকারীরাই সওয়াব পেয়ে থাকেন।

২. ওই ব্যক্তি যার সৎ কাজের ইচ্ছা আছে, কিন্তু মনে ও অন্তরে সুদৃঢ় সংকল্প নেই। তার এই ইচ্ছা একান্তই মূল্যহীন। ৪. শ্রম, সাধনা ও মেহনত ছাড়া দোয়া করা ও দোয়া চাওয়া। কেননা, যে দোয়া করার মূলে মেহনত নাই, তা ফলপ্রসূ হবে না এবং বিনা আয়াশে দোয়া চাইলেও কোনো উপকারে আসবে না। ৫. মনে, অন্তরে লজ্জিত না হয়েই আল্লাহর দরবারে ইস্তেগফার করলে তা’ কবুল হবে না। ৬. আত্ম সংশোধন ছাড়া বাহ্যিক ও লৌকিকভাবে সৎকর্ম করলে, তা’ অর্থহীন হয়ে যাবে। ৭. আন্তরিক ইখলাস ব্যতীত চেষ্টা-সাধনা ও মেহনত করা অর্থহীন হবে।

বিশ্লেষণ ৩ : হাদীসে কুদসীতে এসেছে : ‘আল্লাহপাক বেজোড়। তিনি বেজোড়কে পছন্দ করেন।’ ১-৩-৫-৭-৯ সংখ্যাগুলো বেজোড়। ১ ক্ষুদ্রতম সংখ্যা এবং ৯ বৃহত্তম সংখ্যা। এই পাঁচটি সংখ্যার যোগফল (১+৩+৫+৭+৯) = ২৫। তার একক (২+৫)=৭। ১. সংখ্যাটি তাওহীদের সাক্ষী। ৩. সংখ্যাটি আল কোরআনের সাক্ষী। ৫. সংখ্যাটি ইসলাম ও মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাক্ষী। ৭ সংখ্যাটি ঈমানের সাক্ষী এবং ৯ সংখ্যাটি সর্ব শক্তিমান আল্লাহর সাক্ষী।

তাফহিমাত : ১। সূরা বাকরাহ-এর ২৫৭ নংআয়াতটির অর্থ এই : ‘যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে আলোর দিকে বের করে আনেন। আর যারা কুফুরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত-শয়তান। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী। তারা চিরকাল সেখানেই থাকবে।’
তাফহিমাত : ২। এই আয়াতে কারীমায় মহান রাব্বুল আলামীন দুইটি শব্দের দ্বারা মুমিন ও কাফির-এর পরিণাম কি হবে, তা’ ব্যক্ত করেছেন। যথা : (ক) (জুলুমাতুন্) অন্ধকার। অক্ষর সংখ্যা-৪। (খ) (নূরুন্) আলো। অক্ষর সংখ্যা-৩। উভয় শব্দের অক্ষর সংখ্যার যোগফল (৪+৩) = ৭। সুবহানাল্লাহ!!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
তাসফিয়া আসিফা ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫৫ এএম says : 0
নিয়মিত েইসলামি নিবন্ধ প্রকাশ করায় দৈনিক ইনকিলাবকে ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
কাজী হাফিজ ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫৬ এএম says : 0
মানুষ সমগ্র সৃষ্টিজগতের সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। জ্ঞান-গুণ, বিবেক-বোধ, বুদ্ধিমত্তা-তৎপরতা, কার্যদক্ষতা ও জীবনব্যবস্থা থেকে শুরু করে আনুসাঙ্গিক প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষ অপরাপর অন্যান্য সৃষ্টি থেকে ব্যতিক্রম ও প্রাগ্রসর। জীবন ও জগতের সব কিছুতে মানুষের স্বকীয়তা-অনন্যতা ও বৈশিষ্ট্য দেদীপ্যমান
Total Reply(0)
হোসাইন এনায়েত ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫৬ এএম says : 0
মানুষের মধ্যে সর্বোত্তম মানুষ হলেন ঈমানদাররা। তবে ঈমানদারদের স্তরেরও তারতম্য রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যারা মানবজগতের মধ্যে বিশেষ মর্যাদাবান। তাঁরা কাজকর্ম, ইবাদত-বন্দেগি ও সার্বিক কার্যকলাপর দ্বারা সর্বদা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্যপরশ কামনায় মগ্ন থাকেন এবং প্রতিনিয়ত নিজেদের প্রভুর সকাশে আত্মসমর্পিত রাখেন। ফলে তাঁরা আল্লাহর সমধিক ভালোবাসা ও করুণা লাভে ধন্য হন।
Total Reply(0)
বাতি ঘর ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫৭ এএম says : 0
তাঁদের অনেক গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যদ্দরুন আল্লাহ তাআলা তাঁদের অত্যধিক ভালোবাসেন এবং তাঁদের প্রতি করুণা ও দয়া-অনুকম্পার হাত প্রসারিত করেন।
Total Reply(0)
কায়সার মুহম্মদ ফাহাদ ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫৮ এএম says : 0
যাঁরা ইবাদতের নিমিত্ত নিদ্রা ও শয্যা ত্যাগ করে রাত্রিজাগরণ করে, তাঁরা নিশ্চয় আল্লাহর প্রিয় বান্দা।
Total Reply(0)
Masud ১৩ মার্চ, ২০২১, ৭:৩০ এএম says : 0
আল্লাহ তায়ালা আমাদের ও আমাদের পরিবারকে মুকাররাবুন বান্দাহদের মধ্যে শামিল করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন