হেফাজতে ইসলামের আহ্বানে চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। সড়কে দেয়ালের কারণে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক বন্ধ রয়েছে। স্লিপার তুলে ফেলায় চট্টগ্রাম-নাজিরহাট লাইনে বন্ধ রেল চলাচল। উত্তেজনা এবং থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে হাটহাজারী ও পটিয়ায়।
নগরীতে যানবাহন চলাচল করছে। মার্কেট শপিং মল বন্ধ থাকলেও দোকান-পাট খুলছে। নগরীর বিভিন্ন রুটে গণপরিবহন চলছে। তবে সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল সীমিত রয়েছে। যাত্রীদের বাস কাউন্টারে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। নগরী ও জেলায় পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। নগর পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, কাউকে রাস্তায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। নগরীতে হরতালের তেমন কোন প্রভাব পড়েনি, সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে বলেও দাবি করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। রাস্তায় র্যাব, পুলিশ ছাড়াও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানিয়েছেন সকালে হরতালের সমর্থনে নগরীর হালিশহর ও বাকলিয়ায় পিকেটিং করেছেন হেফাজত কর্মীরা। ফজরের পর থেকে সাড়ে আট টা পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করে। পরে তাদের পুলিশ সরিয়ে দেয়।
এছাড়া পটিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে এবং আনোয়ারা-বাঁশখালী সড়কে পিকেটিং চলছে। হাটহাজারীতে পিকেটিং ছাড়াই হরতাল হচ্ছে। এখনও বন্ধ আছে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল।
হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের অবরোধের কারণে শুক্রবার দুপুর থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ। সড়কে ছয় থেকে সাত ফুট ইট সিমেন্টের দেয়াল ও বাঁশের ব্যারিকেড দেয়া হয়।
এতে খাগড়াছড়ি, রামগড়, ফটিকছড়ি ও নাজিরহাটের লোকজন কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। হাটহাজারী উপজেলা সদরে বন্ধ দোকান পাট।
এছাড়া হাটহাজারী এলাকায় মাদরাসার ছাত্ররা রেললাইনের স্লিপার তুলে ফেলায় নাজিরহাট-দোহাজারী লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. মূছা সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। হরতালে গাড়ি চলাচলে কোন ধরনের প্রভাব পড়বে না। গাড়ি স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে।
পূর্বাঞ্চল রেলপথে চলাচলকারী সব ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েক ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। কর্মকর্তারা জানান, সহিংসতার কারণে সিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ধীরগতিতে ট্রেন চালাতে হচ্ছে।
হেফাজত হরতালের নামে যাতে কোনো নাশকতা ও সহিংসতা চালাতে না পারে, সে জন্য মাঠে রয়েছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
সাধারণ মানুষের মাঝে কিছুটা উদ্বেগ-শঙ্কা বিরাজ করছে। কখন কী হয় এমন শঙ্কায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া লোকজন রাস্তায় বের হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম বন্দরে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে পণ্য এবং মালামাল ও কন্টেইনার পরিবহন কম হচ্ছে। দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আছদগঞ্জে মালামাল পরিবহন কমে গেছে। চট্টগ্রাম ইপিজেডসহ শিল্প কারখানা খোলা আছে। শ্রমিকের উপস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ চলছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভারী যানবাহনের সংখ্যা কম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন