সদর উপজেলার সোনাপুরে মা ডেইরী ফার্মের নামে বন্ধুদের এক কোটি ৫৫ লাখ টাকাসহ প্রায় দুই থেকে তিন কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাত করে পালিয়ে গেছে মো. আমির হোসেন মামুন (৩০) নামের এক যুবক।
রোববার সকাল ১১টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবে বন্ধুমহলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী সালাউদ্দিন আল সামাদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী বোরহান উদ্দিন রাকিব, মো. রাহী, সায়েম উদ্দিন সানি, রিয়াজুল ইসলাম, রায়হান উদ্দিন পারভেজের পক্ষে তার ভগ্নিপতি আবদুর রব, সাদ্দাম হোসেন, মো. জাবেদ।
ভুক্তভোগী ৬জনের স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে সালাউদ্দিন আল সামাদ বলেন, নোয়াখালী সদর উপজেলার জামালপুর গ্রামের মরহুম ছিদ্দিক উল্যার ছেলে মো. আমির হোসেন (মামুন) আমাদের ছোটবেলার বন্ধু হয়। সে নোয়াখালী জেলা জজকোর্টের আইনজীবি সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলো। পাশাপাশি আমির হোসেন মা-ডেইরী ফার্ম, সোনাপুর জিরো পয়েন্টে মামুন টেলিকম প্রতিষ্ঠা এবং জেলা জজকোর্টে বিভিন্ন সরকারি মালামাল নিলামে ক্রয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন।
বন্ধুত্বের সুবাধে আমির হোসেন ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে আমাদের বন্ধু মহলের সদস্যদের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত জিরো জিরো সেভেন অরগানাইজেশন মাসিক সঞ্চয় সমিতি এবং আমাদের বন্ধু মহলের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মা ডেইরী ফার্মের জন্য দশ লক্ষ টাকা মাসিক লভ্যাংশ প্রদান শর্তে ঋণ নেয়। এরপর সে প্রতি মাসে যথারীতি ওই টাকার লভ্যাংশ প্রদান করে আসছিলো।
পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তার মালিকানাধীন মা ডেইরী ফার্ম, সোনাপুর জিরোপয়েন্টে মামুন টেলিকম ও জজকোর্টে নিলাম ব্যবসাকে আরো আধুনিক ও বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার নগদ টাকার প্রয়োজন হলে আমির হোসেন আমাদের বন্ধু মহলের সদস্যদের পৃথক পৃথকভাবে তার ব্যবসায়ের অংশীদার করার প্রস্তাব দেয়। যা বন্ধু মহলের একে-অপরের কাছে গোপন রয়ে যায়। এরপর ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আমাদের ৭জনের কাছ থেকে পৃথক পৃথকভাবে এক কোটি ৫৫ লাখ টাকাসহ বন্ধুমহলের আরো বেশ কয়েকজন, স্থানীয় বড় ভাই ও বিভিন্ন এনজিও থেকে এভাবে দুই থেকে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যায় প্রতারক আমির হোসেন। এ যেন “বন্ধুরূপে খন্দকার মোস্তাকের ভূমিকায় প্রতারক আমির হোসেন মামুন”।
ভুক্তভোগী সালাউদ্দিন আল সামাদ বলেন, আমির হোসেন আমাদের কাছ থেকে টাকাগুলো নেওয়ার পর প্রথম দিকে সময় মতো লভ্যাংশ পরিশোধ করলেও ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে সে আমাদের লভ্যাংশসহ মূল টাকা নিয়ে নয়-ছয় শুরু করে। এতে তার প্রতি আমাদের সন্দেহ হয়। বেরিয়ে আসতে থাকে বন্ধুমহলের প্রত্যেক সদস্যের সাথে আমির হোসেনের লেনদেনের বিষয়টি। এরপর আমির হোসেন পলাতক থেকে তার পরিবারের সদস্যদের দিয়ে আমাদেরকে উল্টো অপহরণ মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করে।
আমাদেরকে হয়রানী ও আমাদের প্রাপ্য টাকা আদায়ের জন্য আমরা একাধিকবার থানা ও আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিলেও আমির হোসেনের মেঝ ভাই দেলোয়ার হোসেন বাহাদুর দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি সমাধান করার আশ^াস দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার পরিবারের সদস্যরা আমাদের প্রাপ্য টাকা পরিশোধ করেনি। তার বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী রায়হান উদ্দিন পারভেজ। ওই মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ স্থানীয় এক কাউন্সিলর ও এক আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় থেকে আমির হোসেন এইসব অপকর্ম করছে।
প্রতারক আমির হোসেনকে গ্রেফতার পূর্বক প্রাপ্য টাকা উদ্ধারে প্রশাসনের সহায়তা চান ভুক্তভোগী বন্ধুমহল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন