আরবি ভাষায় নাম বোঝাতে ‘ইছিম’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এই ‘ইছিম’ বা নাম শব্দটির দুটি রূপ আছে। যথা : সত্তাবাচক নাম বা ইছমে যাত এবং গুণ বাচক নাম বা ইছমে ছিফাত। বিশ্ব নবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তাফা আহমাদ মুজতাবা (সা.)-এর সত্তাবাচক নাম দু’টি যথা : মোহাম্মদ (সা.) এবং আহমাদ (সা.)। এই দু’টি নাম মোবারক গাণিতিক ৫ সংখ্যাটির সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। বস্তুত : ৫ সংখ্যাটি উম্মতে মোহাম্মাদীর জন্য এক পরম রহমত ও বরকতের প্রতীক। কারণ, আমাদের প্রিয় নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সত্তাবাচক নাম মোবারক ‘মোহাম্মদ’এ আরবি অক্ষর সংখ্যা ৫। এই নাম মোবারক আল কোরআনে ৪ বার এসেছে। (ক) ইরশাদ হয়েছে : মোহাম্মাদ (সা.) রাসূল বৈ কেউ নন। তাঁর পূর্বে বহু রাসূল অতিবাহিত হয়েছেন। (৩ নং সূরা আলে ইমরান : আয়াত ১৪৪)।
(খ) ইরশাদ হয়েছে : মোহাম্মাদ (সা.) তোমাদের কারো পিতৃপুরুষ নন, বরং তিনি আল্লাহর রাসূল। (৩৩ নং সূরা আহযাব : আয়াত ৪০)। (গ) ইরশাদ হয়েছে : আর তোমরা ঐ কিতাবের ওপর ঈমান আনয়ন করো যা মোহাম্মাদ (সা.)-এর ওপর নাযিল করা হয়েছে এবং উহা সত্য তাদের প্রতিপালকের নিকট হতে। (৪৭ নং সূরা মোহাম্মাদ : আয়াত : ২)।
(ঘ) ইরশাদ হয়েছে : মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) এবং যারা তাঁর সাথে ঈমান এনেছে, তারা কাফেরদের প্রতি ভীষণ ক্ষুব্ধ এবং ঈমানদারদের প্রতি সহৃদয়। (৪৮ নং সূরা ফাতহ : আয়াত ২৯)। বস্তুত : প্রিয় নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আরো একটি সত্তাবাচক নাম আছে। উহা ‘আহমাদ’ (সা.)। এই নাম মোবারকের আরবি অক্ষর সংখ্যা ৪। এই নাম মোবারক আল কোরআনে একবার এসেছে।
(ঙ) ইরশাদ হয়েছে : (হযরত ঈসা (আ.) বলেছেন) আর আমি তোমাদেরকে একজন রাসূলের শুভ সংবাদ প্রদান করছি, যিনি আমার পরে আগমন করবেন, তাঁর নাম ‘আহমাদ’ (৬১ নং সূরা সফ : আয়াত ৬)।
বিশ্লেষণ-১. সাইয়্যেদুল মুরসালীন মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সত্তাবাচক নামদ্বয়। (মোহাম্মাদ ও আহমাদ) আল কোরআনে ৫ বার এসেছে। যা তাঁর নাবুওয়াত ও রিসালাতের সাক্ষী। তিনি ২৩ বছর নাবুওয়াত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই ২৩ সংখ্যাটির একক (২+৩) = ৫।
বিশ্লেষণ-২. রাহমাতুল্লিল আলামীনের মোহাম্মাদ নাম মোবারকের অক্ষর সংখ্যা ৫ এবং আহমাদ নাম মোবারকের অক্ষর সংখ্যা ৪। এই উভয় সংখ্যার যোগফল (৫+৪) = ৯। এই ৯ সংখ্যাটি আল্লাহপাক প্রদত্ত পরিপূর্ণ শক্তির প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে। কেননা, খাতুমুন নাবিয়্যিন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জাগতিক হায়াত ছিল ৬৩ বছর। যার একক (৬+৩) = ৯। আর এ জন্যই তিনি অগনিত প্রতিকুলতার ভিতর দিয়ে ইসলামের পরিপূর্ণ রূপ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
বিশ্লেষণ- ৩. হাবীবে কিবরিয়া মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নাবুওয়্যাত ও রিসালাত এবং আল্লাহর দেয়া পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা ইসলাম এই পৃথিবীর দু’টি স্থানকে কেন্দ্র করে প্রচারিত হয়েছিল। প্রথমে মক্কায় ১৩ বছর এবং তারপর মদিনায় ১০ বছর। লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, আরবি মাক্কাতুন্ শব্দে ৪টি বর্ণ এবং আরবি মাদীনাতুন শব্দে ৫টি বর্ণ আছে। এই উভয় শব্দের বর্ণ সংখ্যার যোগফল (৪+৫) = ৯। যা পরিপূর্ণ শক্তির পরিচায়ক। এজন্য পৃথিবীর কোনো শক্তিই ইসলাম এবং মক্কা ও মদীনাকে ধরা পৃষ্ঠ হতে বিলীন করে দিতে পারবে না।
বিশ্লেষণ-৪. প্রিয় নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) ইসলাম ধর্মের পরিপূর্ণতা সাধন করেছেন। আরবি ইসলাম শব্দে ৫টি বর্ণ রয়েছে। ইসলাম ধর্মের ভিত্তি ৫টি বিষয়ের পর প্রতিষ্ঠিত। আল কোরআনে ইসলাম শব্দটি ৬ বার এসেছে।
যথা : (ক) ৩নং সূরা আলে ইমরানের ১৯ নং আয়াতে। (খ) ৩ নং সূরা আলে ইমরানের ৮৫ নং আয়াতে। (গ) ৫নং সূরা মায়েদাহ-এর ৩নং আয়াতে। (ঘ) ৬ নং সূরা আনয়ামের ১২৫ নং আয়াতে। (ঙ) ৩৯ নং সূরা যুমার-এর ২২ নং আয়াতে। (চ) ৬১ নং সূরা সফ-এর ৭ নং আয়াতে।
উল্লিখিত ৬টি আয়াতের ক্রমিক সংখ্যার যোগফল ২৬১। যার একক (২+৬+১) = ৯। এতে প্রমাণিত হয় যে, সকল অবস্থায় সর্ব শক্তিমান আল্লাহ পাক ইসলামের হেফাজত করবেন। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন