মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ইয়াহুদি সম্প্রদায় উদ্ভব ও পরিণাম-১

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

‘ইয়াহুদী’ শব্দটি ‘হুদ’ শব্দ হতে গৃহীত। যার অর্থ তাওবাহ করা, অনুশোচনা করা। অথবা ইয়াহুদী শব্দটি ‘ইয়াহুদা’ শব্দ হতে গৃহীত। ‘ইয়াহুদী’ শব্দটি ‘ইয়াহুদা’ শব্দ হতে গৃহীত। ‘ইয়াহুদা’ একটি নাম। এই নামের অধিকারী ছিলেন হযরত ইউসুফ (আ.)-এর এক ভাই যিনি বনি ইসরাঈলের একজন সদস্য। সাধারণত সকল বনি ইসরাঈলের ওপর শব্দটির প্রয়োগ হয়ে থাকে।

এই সম্প্রদায়ের পরিচয় আল কোরআনে ‘আল্ ইয়াহুদু’ আকারে আটবার (যথা-সূরা বাকারাহ-এর ১১৩, ১২০ নং আয়াতে এবং সূরা মায়েদাহ-এর ১৮, ৫১, ৬৪, ৭২ নং আয়াতে, সূরা তাওবাহ-এর ৩০ নং আয়াতে) এসেছে। আর এই শব্দটি ‘ইয়াহুদীয়ান্’ আকারে আল কোরআনে মাত্র একবার (যথা . সূরা আলে ইমরানের ৬৮ নং আয়াতে) এসেছে। সুতরাং উভয়রূপে শব্দটি মোট নয় বার ব্যবহৃত হয়েছে।

আর এই সম্প্রদায়ের পরিচয় বনি ইসরাঈল রূপে আল কোরআনে ৪২ বার (যথা. সূরা বাকারাহ-এর ৪০, ৪৭, ৮২, ১২২, ২১৯, ২৪৬, নং আয়াতে, সূরা আলে ইমরানের ৪৯, ৯৩, নং আয়াতে, সূরা মায়েদাহ-এর ১২, ৩২, ৭০, ৭২, ৭৮, ১৯০ নং আয়াতে, সূরা আ’রাফ-এর ২৬, ১০৫, ১৩৪, ১৩৭, ১৩৮ নং আয়াতে, সূরা ইউনুছ-এর ৯০, ৯৩, নং আয়াতে, সূরা বাণী ইসরাঈলের ২, ৪, ৭০, ১০১, ১০৪ নং আয়াতে, সূরা ত্বাহা-এর ৪৮, ৮০, ৯৪, নং আয়াতে, সূরা শোয়ারা-এর ১৭, ২২, ৪৯, ১৯৭ নং আয়াতে, সূরা নামল-এর ৭৬ নং আয়াতে, সূরা আস সিজদাহ-এর ২২ নং আয়াতে, সূরা মু’মিন-এর ৫৩ নং আয়াতে, সূরা যুখরুফ-এর ৫৯ নং আয়াতে, সূরা দুখান-এর ৩০ নং আয়াতে, সূরা জাসিয়া-এর ১৬ নং আয়াতে, সূরা আহকাফ-এর ১০ নং আয়াতে, সূরা ছফ-এর ৬, ১৪ নং আয়াতে) এসেছে।

এই ৪২টি আয়াতে বাণী ইসরাঈলের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ইয়াহুদীদের ধর্মীয় বিশ্বাসের ও তাদের অপকর্মসমূহের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
ইয়াহুদীগণ মনে করে যে তারা হযরত মূসা (আ.)-এর অনুসারী। তাওরাত তাদের আসমানী গ্রন্থ। হযরত মূসা (আ.)-এর আমলে তাদেরকে বাণী ইসরাঈল বলা হতো। কোন্ সময় হতে তারা ইয়াহুদী নামে আখ্যায়িত হলো এ সম্পর্কে নিশ্চিত রূপে কিছু বলা যায় না। ইয়াহুদীরা তাওরাতকে তাদের ধর্মগ্রন্থ বলে দাবি করলেও মূল আসমানি কিতাব তাওরাতকে তারা রদবদল করে মনগড়া তাওরাত সাজিয়েছে। পৃথিবীতে মূল তাওরাত গ্রন্থের অস্তিত্ব কোথাও নেই।

ইয়াহুদী ধর্ম মতে কিছু অদ্ভুত, স্বকপোল কল্পিত, অভিনব ভ্রান্ত বিশ্বাস লালন করা হয়। যেমন (ক) ইয়াহুদীগণ আল্লাহ পাকের সবচেয়ে বেশি পছন্দনীয় সৃষ্টি। (খ) ইয়াহুদীগণ আল্লাহর পুত্র। (গ) এই পৃথিবীতে ইয়াহুদী না থাকলে পৃথিবীর সকল বরকত ও কল্যাণ তুলে নেয়া হতো। (ঘ) সূর্য আচ্ছাদিত হয়ে পড়ত। বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ হয়ে যেত। (ঙ) তাদের ধারণায় অইয়াহুদীর তুলনায় ইয়াহুদীরা এতই উত্তম যেমন মানুষ অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় উত্তম।

(চ) ইয়াহুদী নয় এমন ব্যক্তির সাথে ইয়াহুদীদের বিনয়-নম্র আচরণ নিষিদ্ধ। বরং ইয়াহুদী নয় এমন ব্যক্তির সাথে নম্র-ভদ্র ব্যবহার করা সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। (ছ) পৃথিবীর সকল ধনভাণ্ডার ইয়াহুদীদের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এটা তাদের অধিকার। সুতরাং যেভাবেই হোক পৃথিবীর সম্পদ হস্তগত করা তাদের জন্য বৈধ। (জ) আল্লাহ তায়ালা শুধু ইয়াহুদীদের উপাসনা কবুল করেন। আর কারো নয়।

(ঝ) তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী নবীগণ নিষ্পাপ নহেন। বরং তারাও গোনাহের ফাঁদে আটকা পড়েন। (ঞ) তাদের ধারণায় দাজ্জাল হবে ন্যায়পরায়ণ শাসক। তার আগমনের পর সারা বিশ্বে তার ক্ষমতা, রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। (ট) তারা হযরত ঈসা (আ.) ও হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর নাবুওয়াত ও রিসালাত স্বীকার করে না। তারা হযরত মারয়াম (আ.)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে। (ঠ) হযরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে তাদের ধারণা হলো যে, তাঁকে শূলিতে চড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। (ড) হযরত উযায়ির (আ.) এর ব্যাপারে তাদের ধারণা হলো যে, তিনি আল্লাহর পুত্র (ঢ) আল্লাহপাক আসমান যমিন সৃষ্টি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কাজেই সপ্তম দিনে বিশ্রাম নিতে বাধ্য হন।

এ জাতীয় আরোও অসংখ্য ভ্রান্ত বিশ্বাস তাদের ধর্মের অঙ্গ। কোরআনুল কারীমের বিভিন্ন যায়গায় (যে সকল আয়াতের পরিচয় পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে) ইয়াহুদীদের এ সকল ভ্রান্ত আকীদা বিশ্বাস ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তারা আহলে কিতাব নাম ধারী হলেও এ সকল আকীদা বিশ্বাসের কারণে তারা নির্ঘাত কাফির ও মুশরিক বলে গণ্য।

[তথ্য সূত্র. ১. আল আদইয়ান ওয়াল ফিরাক। ২. আল্ আকীদাতুল হানাফিয়্যাহ-১৪০। ৩. আকায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত-২৬৩-২৬৪]

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
শওকত আকবর ২২ মে, ২০২১, ১:২৬ এএম says : 0
ইসরাইলদের সম্মাদ্ধে কথিত একটি ধারনা সঠিক বেঠিক জানতে চাই??ইসরাইল রা পিতৃপরিচয়হীন!এ কথাটা কি সঠিক না বেঠিক জানাবেন।জানার প্রবল ইচ্ছ।
Total Reply(0)
Masum Khan ২২ মে, ২০২১, ২:৫৯ এএম says : 0
ইসরাইল নামের শরণার্থী ইহুদীদের বিরুদ্ধে ইসলামী রাষ্ট্র গুলোকে ভ্রাতৃত্বের কথা চিন্তা করে এক হয়ে তাদের মোকাবিলা করে ফিলিস্তিনিদের সংকট স্থায়ী সমাধান করা উচিত, এটা তাদের কথিত যুদ্ধবিরতি নয় এটা তাদের কূটকৌশল।
Total Reply(0)
হাসিবুল হাসান শান্ত ২২ মে, ২০২১, ৩:০০ এএম says : 0
অনেক তথ্যভিত্তিক একটি লেখা। পড়ে খুব ভালো লাগলো
Total Reply(0)
নওরিন ২২ মে, ২০২১, ৩:০৩ এএম says : 0
হে আল্লাহ এই অভিশপ্ত জাতি হতে আমাদের হেফাজত করো।
Total Reply(0)
মিনহাজ ২২ মে, ২০২১, ৩:০৩ এএম says : 0
ইহুদিদের থেকে সবসময় দূরে থাকতে হবে। এরা ‍মুসলিমদের প্রকাশ্য শত্রু।
Total Reply(0)
md. Younus biswas ২২ মে, ২০২১, ৩:০৪ এএম says : 0
আল্লাহর অভিশপ্ত জাতি, এই অভিশপ্ত ইয়াহুদিরা, এদের ধ্বংস অনিবার্য, দাজ্জাল কে যুদ্ধের মাধ্যমে ইমাম মাহাদী আলাই সালাম পরাজিত করবেন| ফিলিস্তিনিদেরকে নির্মম অত্যাচার করে এদের ভূমি জবরদখল করেছে| এই ইয়াহুদী বাদ মানবতার দুশমন|মুসলমান নামধারী মুনাফিক দের কারণে ইয়াহুদিরা এখনো টিকে আছে|
Total Reply(0)
তানভীর এলাহী মজুমদার ২২ মে, ২০২১, ৩:০৫ এএম says : 0
ইয়াহুদী জাতি মুসলমানদের জন্য চ্যালেঞ্জিং এবং প্রকাশ্য শত্রু। এই জাতি গোটা বিশ্বের মানবতার জন্য বিশাল এক সমস্যার নাম।
Total Reply(0)
salman ২২ মে, ২০২১, ৭:২৬ এএম says : 0
Yahudi ra Allah'r OVI-SOPTO. Ader proti LANOT kore sen. Ata Voyonkor Protarok, Vondo, Soytan. Ade'r sthan JAHANNAM
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন