শানু হাওলাদার (৫৫) পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার বাবার নাম আব্দুস সত্তার হাওলাদার। এলাকায় তিনি একজন দানশীল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হলেও ঢাকায় তিনি পুলিশের খাতায় একজন ছিনতাইকারী, ও ভয়ঙ্কর চোর হিসেবে চিহ্ণত। ঢাকাতে তার নামে রয়েছে ডজন খানেকের বেশি মামলা। এ সকল মামলায় তিনি একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস করেছেন।
গত শূক্রবার (২১ মে) ঢাকা মেট্রাপলিটন পুলিশ (ডিএমপির) একদল পুলিশ বাউফল থানা পুলিশের সহায়তায় ঢাকার একটি ছিনতাই মামলায় গ্রেপ্তার হলে ফের আলোচনায় আসেন শানু হাওলাদার।
শানু হাওলাদার ওরফে শানু মেম্বার নিজ গ্রামে সামাজিক ভাবে বিভিন্ন কর্মকান্ডে হয়ে উঠেছেন দানশীল ব্যাক্তি হিসেবে। এ সুযোগ বাগিয়ে নিয়েছেন নিজ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পদ। এমনকি সদস্য ঘোষিত বাউফল উপজেলা যুবদলের আহ্ববায়ক কমিটিতে রয়েছে তার নাম। এলাকায় তাকে সবাই চিনে শানু মেম্বার হিসেবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শানু হাওলাদার ওরফে শানু মেম্বার ছিল দরিদ্র পরিবারের সন্তান। কিশোর বয়সে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ঢাকা গিয়ে বিভিন্ন বাসা বাড়ি কেয়ারটেকারের (তদারকির) কাজ নেয়। দির্ঘ বছর এলাকায় দেখা মিলে না শানু মেম্বার হঠাৎ একদিন এলাকায় এসে নিজেকে ঢাকায় বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ও বড় ব্যবসায়ী হিসেবে দাবী করেন। এক পর্যায়ে শুরু করেন দরিদ্র হত দরিদ্রদের মধ্যে নগদ টাকাসহ চাল, ডাল, কাপড় চোপর দান করা।
স্থানীয় বাসিন্দা নেছার উদ্দিন বলেন, শানু মেম্বার এলাকার মানুষের কাছে একজন বট বৃক্ষের মতন। তার কাছে কোন অসহায় ব্যক্তি সাহায্যের জন্য গেলে তিনি সর্বচ্চ সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। দির্ঘ বছর ধরে এলাকার দরিদ্র হত দরিদ্রদের সাহায্য করার কারনে দানবীর হিসিবে খ্যাতি রয়েছে তার।
কাছিপাড়া ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফারুক হোসেন বলেন, শানু মেম্বার ঢাকায় কি করেন না করেন আসলে আমরা কিছুই জানতাম না। তিনি (শানু)এলাকায় একজন সৎ ইউপি সদস্য হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে সরকারী কোন সহায়তা চুরি করার অভিযোগ কোন ব্যক্তি দিতে পারবে না। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ঈদ উপহার হিসেবে জনপ্রতি সারে চারশত টাকার নির্দষ্ট তালিকার চেয়ে অতিরিক্ত ব্যাক্তিদের দান করেন। এলাকার দরিদ্র নারী পুরুষের কাছে প্রকৃত জনসেবক হিসেবে জনপ্রিয়।
অপর দিকে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, গত বৃহস্পতিবার ঢাকার উত্তারার পশ্চিম থানায় ছিনতাই মামলায় শানু মেম্বারের বিরুদ্ধে সমন জারি হয়। ওই মামলায় ডিএমপির একটি দল বাউফল থানা পুলিশের সাহায্যে শানু মেম্বার গ্রেপ্তার হয়।
পুলিশ সুত্রে আরো জানায়, ঢাকার বিভিন্ন থানায় শানু মেম্বারের বিরুদ্ধে একধিক মামলা রয়েছে। এ সকল মামলাল মধ্যে অধিকাংশ গাড়ি ছিনতাইয়ের মতন ঘটনা। তার রয়েছে একটি বাহিনী। এই বাহিনীর সদস্য সিএনজি, ট্যাক্সিক্যাবসহ নানা গাড়িতে যাত্রী বেশে উঠে চালককে অজ্ঞান করে গাড়ি ছিনতাই করেন। তাদের রয়েছে ঢাকার অভিজাত এলাকার বিভিন্ন ফ্লাট বাড়ির দারোয়ান ও কেয়াটেকারদের সাথে সখ্যতা। এই সখ্যতার সুবাধে শানু বাহিনীর চলে নানা অপকর্ম। পুলিশের তালিকায় শানু মেম্বার একজন ভংঙ্কর চোর।
বাউফল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চোরম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পরিষদের একজন সদস্য যদি কোন অপরাধ করে থাকে। তাহলে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আইন তার নিজ গতিতে চলবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন