হযরত ঈসা (আ.) এর দুই আড়াই হাজার বছর পূর্বে পশ্চিম ইরাকের বাবেল শহরে (বাগদাদের নিকটবর্তী) আগমন করেন নবীগণের পিতা ইবরাহীম (আ.)। পরে তিনি কিনআন (বর্তমান ফিলিস্তিন)-এ হিজরত করেন। ইবরাহীম (আ.)-এর এক স্ত্রী হাজেরা (আ.)-এর ঘরে জন্ম নেন নবী ইসমাইল (আ.)। আল্লাহর হুকুমে তাদের তিনি মক্কায় রেখে আসেন এবং তারা সেখানেই বসতি স্থাপন করেন। ইসমাইল (আ.)-এর বংশ থেকে জন্ম নেন শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)।
অন্য স্ত্রী সারা (আ.)-এর ঘরে জন্ম নেন নবী ইসহাক (আ.) যিনি পিতার সাথে কিনানেই থাকেন। তার পুত্র নবী ইয়াকুব (আ.)। তার অপর নাম হলো ইসরাইল, যার অর্থ আল্লাহর বান্দা। অর্থাৎ ইবরাহীম (আ.)-এর নাতি ইয়াকুবই (আ.) হলেন ইসরাইল, যার নামে বনি ইসরাইলের নামকরণ। বনি ইসরাইল মানে ইসরাইলের বংশধর। ইসহাক (আ.)-এর অন্য পুত্র ইছ এর বংশ থেকে আসেন নবী আয়্যুব (আ.)। ইছ এবং ইয়াকুব জমজ ছিলেন।
ইয়াকুব (আ.)-এর দুই স্ত্রী ছিলেন লাইয়া ও রাহীল। দ্বিতীয় স্ত্রীর পুত্র নবী ইউসুফ (আ.) ও বেনিয়ামিন। প্রথম স্ত্রীর পুত্র লাভী এর পঞ্চম অধস্তন পুরুষ মুসা ও হারুন (আ.) নবী হন। অর্থাৎ ইউসুফ (আ.)-এর সৎ ভাই লাভীর বংশ থেকে মুসা ও হারুন (আ.) নবী হন।
ছোটবেলায় ইউসুফ (আ.) কুয়ায় নিক্ষিপ্ত হন। পরে তাকে মিশরের শাসক কিনে নেয়। এরপর এক সময় তিনি মিশরের অর্থমন্ত্রী ও পরে বাদশাহ হন। বিস্তারিত আল কোরআনের সুরা ইউসুফে বর্ণিত হয়েছে। এক সময়ে ইয়াকুব (আ.) মিশরে চলে আসেন এবং সেখানেই ইন্তেকাল করেন। ইয়াকুব (আ.) বাতুল মুকাদ্দাস পুননির্মাণ করেন। আদম (আ.)-এর সন্তান কর্তৃক ইতোপূর্বে বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মিত হয়েছিল যা ইয়াকুব (আ.)-এর সময় জীর্ণ হয়ে গেলে তিনি তা পুনর্নির্মাণ করেন। এর পরে সুলাইমান (আ.) আবার বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মাণ করেন।
ইউসুফ (আ.) মিশরে মৃত্যুবরণ করেন এবং ফিলিস্তিনের হেবরনে সমাধিস্থ হন। তার সময়ে মিশরে কিবতি ফেরাউনরা ক্ষমতায় ছিল না বরং তখন ক্ষমতায় ছিল হাকসুস বংশ। হাকসুস বংশের দুই শত বছর শাসনের পর আসে কিবতি বংশের ফেরাউন যারা হাকসুসের পূর্বেও মিশর শাসন করেছিল। মুসা ইবনে ইমরান (আ.) ছিলেন ইব্রাহীম এর অষ্টম অধস্তন পুরুষ। একটু উপরেই আমরা বলেছি যে, ইয়াকুব (আ.)-এর পুত্র লাভী এর পঞ্চম অধস্তন পুরুষ মুসা ও হারুন (আ.)।
বনু ইসরাইলরা ইউসুফ (আ.) এর সময় থেকে মিশরে বসবাস করে যখন ইয়াকুব (আ.) তার পুত্র ইউসুফ (আ.) এর আহ্বানে সপরিবারে মিশরে যান। ইয়াকুবই (আ.) হলেন ইসরাইল।
মুসা (আ.)-এর জীবদ্দশায় দুইজন ফেরাউনের মোকাবিলা করেন। ছোটবেলা থেকে বিশ বছর পর্যন্ত রামসেস-২ এবং নবুয়তের পরে তার ছেলে মারনেপথা। আসলে ফেরাউন কোনো রাজার নাম নয় বরং রাজার উপাধি। মাদায়েনে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি রামসেস এর ঘরে লালিত হন। তার পালক মা ছিলেন বিবি আছিয়া। পরে মাদায়েন থেকে গর্ভবতী স্ত্রী ও দুই পুত্রসহ ফেরার পথে তোয়া উপত্যকায় নবুয়ত পান এবং মিশরে মারনেপথা ফেরাউনের মোকাবিলা করেন। এই মারনেপথাকেই লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মারা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন