শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ফিলিস্তিনের নবী রাসুলগণ-২

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১২ এএম, ১ জুন, ২০২১

বনী ইসরাইলের বারটি গোত্রসহ মুসা (আ.) লোহিত সাগর পেরিয়ে ফিলিস্তিনের দিকে রওয়ানা দেন। এই বারোটি গোত্র ছিল ইয়াকুব (আ.)-এর বার ছেলের বংশধর। পরে তারা শাম বা সিরিয়ায় বসবাস করেন। একটা সময়ে তাদেরকে ফিলিস্তিনে ঢোকার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তখনকার সময়ে ফিলিস্তিনে আমালিকা নামের এক শক্তিশালী গোত্র শাসন করত, যারা ছিল শক্তিশালী আদ জাতির বংশধর। মুসা (আ.) বনি ইসরাইলকে বললেন আমালিকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ফিলিস্তিনে ঢুকতে হবে। তখন বনু ইসরাইল বলল, তুমি আর তোমার আল্লাহ গিয়ে যুদ্ধ করো। আমরা এখানেই বসে থাকব। এই বেয়াদবির শাস্তি স্বরূপ তারা মিশর ও শামের মধ্যবর্তী তীহ নামক প্রান্তরে চল্লিশ বছর উ™£ান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়ায়।

এই তীহ ময়দানে থাকাকালীন একটা সময়ে মুসা (আ.) খিজির নামের এক অত্যন্ত জ্ঞানী ব্যক্তির সাক্ষাত লাভ করেন যার বিস্তারিত সুরা কাহফে আছে। মুসা ও হারুন (আ.) তীহ ময়দানেই ইন্তেকাল করেন। পরে মুসা (আ.) এর ভাগিনা ও শাগরেদ ইউশা ইবনে নুন (আ.) বনী ইসরাইলের নবী হন। তার সময়ে আমালিকাদের হটিয়ে ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে বনী ইসরাইল। কিন্তু এক সময়ে বনী ইসরাইল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আবার আমালিকারা ক্ষমতায় আসে। এরপর বহু যুগ অতিক্রান্ত হয় এবং বনি ইসরাইল আবার নির্যাতিত নিগৃহীত হয়।

একটা সময় শ্যামুয়েল নবীর যুগ আসে। তখন বনি ইসরাইল তাকে একজন সেনাপতির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলে। আল্লাহ তাদের জন্য তালুতকে বাদশাহ নির্বাচন করেন। সেসময় আমালিকার বাদশাহ ছিল জালুত। তালুতের সেনাবাহিনিতে একজন যুবক ছিলেন যার নাম ছিল দাউদ। তিনিই নবী দাউদ (আ.)। দাউদ (আ.) জালুতকে হত্যা করেন। তালুতের সময় বনি ইসরাইল দুই ভাগে ভাগ হয়।

দাউদ (আ.)-এর উনিশ ছেলের মধ্যে একজন ছিলেন সুলায়মান (আ.)। মাত্র তের বছরে তিনি শাসক হন এবং তখন বায়তুল মুকাদ্দাস পুননির্মাণ করেন। শাম ও ইরাকের বিশাল রাজ্যের মালিক ছিলেন তিনি। সুলায়মান (আ.) এর মৃত্যুর পরও জিনরা বায়তুল মুকাদ্দাসের কাজ অব্যাহত রাখে। কারণ, তিনি যে ইন্তেকাল করেছেন তা জিনরা বুঝতে পারেনি।

সুলায়মান (আ.)-এর পরে আসেন যাকারিয়া (আ.) ও তার পুত্র ইয়াহইয়া (আ.)। উভয়ই বায়তুল মুকাদ্দাসের অধিবাসী ছিলেন। যাকারিয়া (আ.)-এর ভাগনি মারিয়াম (আ.)। তার পুত্র ইসা (আ.) পরে বনী ইসরাইলের নবী হন। যাকারিয়া ও ইয়াহইয়া (আ.)-কে শামের এক বাদশাহ হত্যা করে।

বনী ইসরাইলের অপর নাম ইহুদী। ইহুদিরা বহু নবীকে হত্যা করে। ঈসা (আ.)-এর সাথে বেশ শত্রুতা করে। পরবর্তিতে হত্যার ষড়যন্ত্র করে কিন্তু মহান আল্লাহ ঈসা (আ.)-কে নিজের কাছে তুলে নেন। এটি ২০২০ বছর আগের কথা। হযরত ঈসা (আ.)-এর ৫০০ বছর পর আমাদের প্রিয়নবী (সা.) মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Abdus Salam ১ জুন, ২০২১, ৬:৩৭ এএম says : 0
আল্লাহ তুমি ফিলিস্তিনের মুসলমানদের রক্ষা করো
Total Reply(0)
MD Hasan ১ জুন, ২০২১, ৬:৩৭ এএম says : 0
খুব সুন্দর প্রতিবেদন। আল্লাহ তায়ালা বায়তুল আকসাকে দাজ্জালী বাহিনী ইয়াহুদীদের হাত থেকে রক্ষা করুক - আমিন
Total Reply(0)
জোবায়ের খাঁন ১ জুন, ২০২১, ৬:৩৮ এএম says : 0
আল আকসা মসজিদ শুধু ফিলিস্তিনিদের নয় বরং বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহর। তাই আল আকসা রক্ষায় বিশ্বের সকল মুসলিম নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইহুদিবাদি ইসরাইলকে উচিত শিক্ষা দেওয়া ঈমানি দায়ীত্ব ও এখনি সময়ের দাবি।
Total Reply(0)
বদরুল সজিব ১ জুন, ২০২১, ৬:৪১ এএম says : 0
মুসলমানের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসা ও পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিনের আলোচনা পবিত্র কোরআনে নানাভাবে উদ্ধৃত হয়েছে।
Total Reply(0)
গাজী এম.এস. ১ জুন, ২০২১, ৬:৪২ এএম says : 0
পবিত্র কোরআনে মসজিদুল আকসা ও তাঁর আশপাশের অঞ্চলকে বরকতময় ভূমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
Total Reply(0)
মোঃ নাজমুল ইসলাম ১ জুন, ২০২১, ৬:৪২ এএম says : 0
আল্লাহর নবী সোলায়মান (আ.)-কে আল্লাহ পৃথিবীতে বিশেষ রাজত্ব প্রদান করেছিলেন। তাঁর হাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের। আল্লাহ যেমনটি বলেন, ‘এবং সোলায়মানের বশীভূত করে দিয়েছিলাম উদ্দাম বায়ুকে; তা তার আদেশক্রমে প্রবাহিত হতো সে দেশের দিকে, যেখানে আমি কল্যাণ রেখেছি এবং প্রত্যেক বিষয় সম্পর্কে আমিই সম্যক অবগত।’ (সুরা আম্বিয়াহ, আয়াত : ৮১) ঐতিহাসিকদের মতে, সোলায়মান (আ.) ফিলিস্তিনের শাসক ছিলেন।
Total Reply(0)
নূরুজ্জামান নূর ১ জুন, ২০২১, ৬:৪৩ এএম says : 0
আলকুদস তথা ফিলিস্তিন আল্লাহর নির্বাচিত পবিত্র ভূমি। আল্লাহ অসংখ্য নবী-রাসুলের আবাসস্থল হিসেবে এ ভূমিকে নির্বাচিত করেছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার সম্প্রদায়, আল্লাহ তোমাদের জন্য যে পবিত্র ভূমি নির্দিষ্ট করেছেন তাতে তোমরা প্রবেশ করো এবং পিছুপা হয়ো না। হলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সুরা মায়িদাহ, আয়াত : ২১)
Total Reply(0)
মেঘদূত পারভেজ ১ জুন, ২০২১, ৬:৪৩ এএম says : 0
আল্লাহ ফিলিস্তিন ও তাঁর নিকটবর্তী অঞ্চলে অসংখ্য নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন এবং একাধিক নবী এই পবিত্র ভূমিতে আশ্রয় লাভ করেছিলেন।
Total Reply(0)
সাইফ আহমেদ ১ জুন, ২০২১, ৬:৪৪ এএম says : 1
যুগ যুগ ধরে ফিলিস্তিন অসহায় ও নিরাশ্রয় মানুষের আশ্রয় ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বর্তমানে ইসরায়েলের যেসব অধিবাসী আদি ফিলিস্তিনিদের অবৈধভাবে উচ্ছেদ করছে তারাও ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে ফিলিস্তিনে আশ্রয় নিয়েছিল।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন