বনী ইসরাইলের বারটি গোত্রসহ মুসা (আ.) লোহিত সাগর পেরিয়ে ফিলিস্তিনের দিকে রওয়ানা দেন। এই বারোটি গোত্র ছিল ইয়াকুব (আ.)-এর বার ছেলের বংশধর। পরে তারা শাম বা সিরিয়ায় বসবাস করেন। একটা সময়ে তাদেরকে ফিলিস্তিনে ঢোকার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তখনকার সময়ে ফিলিস্তিনে আমালিকা নামের এক শক্তিশালী গোত্র শাসন করত, যারা ছিল শক্তিশালী আদ জাতির বংশধর। মুসা (আ.) বনি ইসরাইলকে বললেন আমালিকাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ফিলিস্তিনে ঢুকতে হবে। তখন বনু ইসরাইল বলল, তুমি আর তোমার আল্লাহ গিয়ে যুদ্ধ করো। আমরা এখানেই বসে থাকব। এই বেয়াদবির শাস্তি স্বরূপ তারা মিশর ও শামের মধ্যবর্তী তীহ নামক প্রান্তরে চল্লিশ বছর উ™£ান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়ায়।
এই তীহ ময়দানে থাকাকালীন একটা সময়ে মুসা (আ.) খিজির নামের এক অত্যন্ত জ্ঞানী ব্যক্তির সাক্ষাত লাভ করেন যার বিস্তারিত সুরা কাহফে আছে। মুসা ও হারুন (আ.) তীহ ময়দানেই ইন্তেকাল করেন। পরে মুসা (আ.) এর ভাগিনা ও শাগরেদ ইউশা ইবনে নুন (আ.) বনী ইসরাইলের নবী হন। তার সময়ে আমালিকাদের হটিয়ে ফিলিস্তিনে প্রবেশ করে বনী ইসরাইল। কিন্তু এক সময়ে বনী ইসরাইল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আবার আমালিকারা ক্ষমতায় আসে। এরপর বহু যুগ অতিক্রান্ত হয় এবং বনি ইসরাইল আবার নির্যাতিত নিগৃহীত হয়।
একটা সময় শ্যামুয়েল নবীর যুগ আসে। তখন বনি ইসরাইল তাকে একজন সেনাপতির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলে। আল্লাহ তাদের জন্য তালুতকে বাদশাহ নির্বাচন করেন। সেসময় আমালিকার বাদশাহ ছিল জালুত। তালুতের সেনাবাহিনিতে একজন যুবক ছিলেন যার নাম ছিল দাউদ। তিনিই নবী দাউদ (আ.)। দাউদ (আ.) জালুতকে হত্যা করেন। তালুতের সময় বনি ইসরাইল দুই ভাগে ভাগ হয়।
দাউদ (আ.)-এর উনিশ ছেলের মধ্যে একজন ছিলেন সুলায়মান (আ.)। মাত্র তের বছরে তিনি শাসক হন এবং তখন বায়তুল মুকাদ্দাস পুননির্মাণ করেন। শাম ও ইরাকের বিশাল রাজ্যের মালিক ছিলেন তিনি। সুলায়মান (আ.) এর মৃত্যুর পরও জিনরা বায়তুল মুকাদ্দাসের কাজ অব্যাহত রাখে। কারণ, তিনি যে ইন্তেকাল করেছেন তা জিনরা বুঝতে পারেনি।
সুলায়মান (আ.)-এর পরে আসেন যাকারিয়া (আ.) ও তার পুত্র ইয়াহইয়া (আ.)। উভয়ই বায়তুল মুকাদ্দাসের অধিবাসী ছিলেন। যাকারিয়া (আ.)-এর ভাগনি মারিয়াম (আ.)। তার পুত্র ইসা (আ.) পরে বনী ইসরাইলের নবী হন। যাকারিয়া ও ইয়াহইয়া (আ.)-কে শামের এক বাদশাহ হত্যা করে।
বনী ইসরাইলের অপর নাম ইহুদী। ইহুদিরা বহু নবীকে হত্যা করে। ঈসা (আ.)-এর সাথে বেশ শত্রুতা করে। পরবর্তিতে হত্যার ষড়যন্ত্র করে কিন্তু মহান আল্লাহ ঈসা (আ.)-কে নিজের কাছে তুলে নেন। এটি ২০২০ বছর আগের কথা। হযরত ঈসা (আ.)-এর ৫০০ বছর পর আমাদের প্রিয়নবী (সা.) মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন