শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুবিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন ভিত্তিক সিদ্ধান্ত অমান্য করায় অর্থ পরিচালককে অব্যাহতি!

কুবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০২১, ৯:২৯ পিএম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন উপর ভিত্তিকে করে বিশ্ববিদ্যালয়েরর অর্থ কমিটির (এফসি) সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি এমন একটি সুপারিশ সভার কার্যবিবরণীতে লিপিবদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অর্থ ও হিসাব দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এবং অর্থ কমিটির সদস্য সচিব কামাল উদ্দীন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। ৪৬তম অর্থ কমিটির সভায় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মোবাইল ও ইন্টারনেট ভাতা সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্তের আলোকে ১ম থেকে ৪র্থ গ্রেড পর্যন্ত সুপারিশ করা হলেও কার্যবিবরণীতে ৫ম গ্রেড যুক্ত করা হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে একাধিকবার নিষেধ করা হলেও তিনি নির্দেশ অমান্য করেন। এ ঘটনায় এ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দিয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (০১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের অব্যাহতি প্রদান এবং তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।


অর্থ কমিটির একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের একটি প্রজ্ঞাপনের আলোকে গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ৪৬তম অর্থ কমিটির সভায় ১ম গ্রেড থেকে ৪র্থ গ্রেড পর্যন্ত সকল শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ভাতা বাবদ ১৫০০ টাকা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সভার কার্যবিবরণীতে এ কর্মকর্তা ৫ম গ্রেডকেও ১০০০ টাকা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত যুক্ত করে দেন এবং ডিসেম্বর মাস থেকে এ সুপারিশ বাস্তবায়ন করেন। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে এলে পুরো প্রক্রিয়াটিই বন্ধ রাখার জন্য মৌখিকভাবে এ কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু একাধিকবার নির্দেশনা দেয়া হলেও তিনি তা না মেনে ভাতা দেয়া অব্যাহত রাখেন। এ ঘটনায় এ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এছাড়া ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খানকে আহবায়ক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. জি. এম. মনিরুজ্জামানকে সদস্য সচিব করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান।

অর্থ কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, সভায় ৫ম গ্রেডকে ভাতা দেয়ার বিষয়ে কোন আলোচনাই হয়নি। কারণ অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন সেখানে দুটি শর্তে ভাতা দেয়া বিষয়ে বলা হয়। এর একটি পদ অনুযায়ী ১ম থেকে ৪র্থ গ্রেড সবাই ভাতা পাবেন। আর প্রাধিকারভুক্ত শিক্ষক কর্মকর্তারা পাবেন। পরে সভায় ১ম থেকে ৪র্থ গ্রেড পর্যন্ত ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু কোন প্রকার বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা ঐ কর্মকর্তা কার্যবিবরণীতে যুক্ত করে বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া উচিৎ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক. ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এফসি’র সভায় সিদ্ধান্ত হয়নি এমন বিষয় কার্যবিবরণীতে আসার বিষয়টি নজরে এলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ভাতা দেয়ার বিষয়টি কার্যকর না করে ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সে নির্দেশনা না মানায় অর্থ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালককে পদ হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ট্রেজারার মহোদয় অর্থ ও হিসাব দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালককে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মোবাইল ও ইন্টারনেট ভাতা সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দিলে তিনি তা কার্যকর করেননি। এই কারণে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে এবং তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কামাল উদ্দীন ভূঁইয়ার সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি এ প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন