মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আমরা কতটুকু ঈমানদার হতে পেরেছি-১

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

সমগ্র বিশ্বে মুসলমানরা আজ ভয়ানক সঙ্কটের জালে আটকে পড়েছে। কোথাও তাদের আশ্রয় নেয়ার জায়গা নেই। সবক’টি মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর একের পর এক বিপদের ঘনঘটা বিস্তার লাভ করছে। সমগ্র বিশ্বে মুসলমানরাই বেশি অপদস্ত ও অসহায়ত্বের শিকার। অপরদিকে কাফের মুশরিকরা সারা বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মুসলমানদের ওপর বিভিন্নভাবে ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। অথচ কোরআনে কারীমের বিভিন্ন জায়গায় মুমিনের সাহায্য- সহযোগিতা ও বিজয়ের সুস্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে।

সূরা রুমে ঘোষণা করা হয়েছে : মুমিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব। ‘সূরা হজ্জে এসেছে ‘আল্লাহ মুমিনদের রক্ষা করেন’। সূরা আনফালে ঘোষণা করা হয়েছে : ‘আল্লাহ মুমিনদের সঙ্গে আছেন।’ সূরা নিসায় আছে, ‘আল্লাহ কখনোই মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফিরদের জন্য কোনো পথ রাখেবেন না।’ সূরা মুনাফিকুনে আছে, ‘শক্তি তো আল্লাহর আর তার রাসূল ও মুমিনদের।’ এসব আয়াত দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহতায়ালা মুমিনদের গায়েবিভাবে সাহায্য করবেন। আমরা দেখি বর্তমান বিশে^র মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি অপদস্ত ও লাঞ্ছনার শিকার।

মুসলমানদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে কাফের, মুশরিক ও নাস্তিকরা একে একে মুসলিম রাষ্ট্রগুলো দখল করেছে। তাদের নগ্ন আগ্রাসনের শিকার হয়েছে। আফগানিস্তান আর ইরাক হারিয়েছে তেল সম্পদের মূল্যবান ভাণ্ডার। এসব দেশের শিক্ষা সংস্কৃতি জিম্মি হয়ে আছে ইহুদি খ্রিষ্টানদের হাতে। ইহুদি খ্রিষ্টানদের ইসলাম বিদ্বেষ এতটা চরমে পৌঁছেছে যে, তারা মহা নবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে, চলচ্চিত্র নির্মাণ করে রাসূল (সা.)-এর পবিত্র চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করার ধৃষ্টতাও দেখাচ্ছে। প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো জনপদ কোনো না কোনো মজলুম মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে।

আজ ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বর হামলা চলছে। এ অত্যাচার আগেও হয়েছে বার বার। অর্ধ শতাব্দীকাল পর ইসরাইলের হিংস্র অভিযানের সব ভয়াবহতা সইতে হচ্ছে নিরীহ শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষকে। তারা জানেন না কার কাছে গেলে এর প্রতিকার পাবেন। দেশে দেশে জনগণ এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানালেও এতে কর্ণপাত করার যেন কেউ নেই। গাজা উপত্যকায় প্রতি ঘণ্টায় গড়ে একজন করে মানুষ ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারালেও শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো নিশ্চুপ। ইসরাইলি হামলায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে গাজায় ইসরাইলি সামরিক হামলায় ২২ দিনে এক হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ১৯৮৮ সালে ইসরাইল লেবাননে হামলা চালিয়ে ১৭ হাজার মানুষ হত্যা করে, যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু। তারা ওই সময় ব্যবহার করে নিষিদ্ধ সাদা ফসফরাস।

এর আগে লেবাননের কানায় জাতিসংঘ শরণার্থী শিবিরে হামলা চালায় ইসরাইল। ওই হামলায় তিন হাজারের বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়। ২০০৬ সালে লেবাননের কানায় জাতিসংঘ শিবির হামলা চালিয়ে ৮০০ আশ্রিতের মধ্যে ১০৬ জনকে হত্যা করা হয়। ২০০২ সালে ফিলিস্তিনের জেনিন ও নাবলুসের শরণার্থী শিবিরে হামলা চালায় ইসরাইল। ওই হামলায় ৩ হাজারের বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়। ২০০৬ সালে লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধে ইসরাইলের হাতে নিহত হয় কয়েক হাজার মানুষ। যার এক-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু। এসব মজলুম মানুষের আহাজারি শোনার কেউ নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
M Mahbub Rahman ৩ জুন, ২০২১, ৫:২৭ এএম says : 0
বিশ্বের প্রায় সব অমুসলিম দেশেই মুসলমানেরা নানা ভাবে চাপের মুখে। কোথাও কোথাও সরাসরি হত্যা-নির্যাতনের শিকার। মুসলমানেরা এখন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কয়েক বছর আগেও যেসব ভারতীয় মুসলিম সাংবাদিক বন্ধু সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশের নাগরিক হতে পেরে গর্ববোধ করতেন এখন তারাও বলছেন ‘খুব চাপ অনুভব করছি’।
Total Reply(0)
মেঘদূত পারভেজ ৩ জুন, ২০২১, ৫:২৭ এএম says : 0
ইউরোপেও মুসলমানদের চাপে রাখতে সরকারি-বেসরকারি নানা পদক্ষেপ লক্ষণীয়। মুসলিম নারীদের জন্য ফরজ বিধান হিজাবকে আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করার প্রবণতা শুরু হয়েছে ইউরোপের দেশগুলোতে।
Total Reply(0)
কামরুল ইসলাম ৩ জুন, ২০২১, ৫:২৮ এএম says : 0
মুসলমানদের সতর্ক থাকতে হবে তারা নিজেরাই যেন নিজেদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের ক্ষেত্র প্রস্তুত না করেন
Total Reply(0)
মুক্তিকামী জনতা ৩ জুন, ২০২১, ৫:২৯ এএম says : 0
ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী দলগুলো ক্ষমতায় আসার পর সেখানে মুসলিম বিদ্বেষ বেড়েছে। জোর করে ধর্মান্তরকরণ করেছে অনেক মুসলমানকে। মুসলমানদের কীর্তিগুলো মুছে ফেলা হচ্ছে।
Total Reply(0)
দেওয়ান মাহদী ৩ জুন, ২০২১, ৫:২৯ এএম says : 0
মুসলমানদের দ্বারা মুসলমানের ক্ষতির পরিমাণও কম নয়, বরং ব্যাপক। লিবিয়া, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে কয়েক বছরের ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে। জাতিসংঘ চেষ্টা করেও তা বন্ধ করতে পারছে না। এসব যুদ্ধে এ পর্যন্ত কয়েক লাখ নিরীহ ও নিরস্ত্র মুসলমান নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। বাড়ি-ঘর ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়েছে কয়েক কোটি নিরীহ মুসলমান
Total Reply(0)
কুদ্দুস তালুকদার ৩ জুন, ২০২১, ৫:৩০ এএম says : 0
এক গবেষণা প্রতিবেদন মতে, বিশ্বের মোট সম্পদের ৬০% আছে মুসলিম দেশে। উপরন্তু মুসলমানদের জন্মহার সর্বাধিক। তাই ২০৭০ সালের মধ্যে মুসলমানরা সর্ববৃহৎ জাতিতে পরিণত হবে বলে এক গবেষণা রিপোর্টে প্রকাশ।
Total Reply(0)
Md basit ৩ জুন, ২০২১, ৫:৪৮ এএম says : 0
দুঃখের পর সুখ , শুধু সময়ের বেপার
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন