চট্টগ্রাম বন্দরে শুল্কমুক্ত (বন্ড) সুবিধায় প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার আমদানির ঘোষণা দিয়ে আনা উচ্চশুল্কের বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৬০ লাখ শলাকা সিগারেটের একটি চালান আটক করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা ভন্ডুল করে দিয়েছেন কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটি থেকে ঘোষিত আমদানি পণ্য খালাসের সময় সিগারেটগুলো জব্দ করা হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আমদানি চালানে মোট ৩০০ কার্টন ছিল। প্রতিটি কার্টনের ভেতরে আরও দুটি লুকায়িত কার্টন ছিল। সেখানে মূলত সিগারেট ছিল। এসব সিগারেটের মধ্যে ইজি, মন্ড ও অরিস ব্র্যান্ডের প্রতিটি ২০ লাখ করে মোট ৬০ লাখ শলাকা পাওয়া যায়। এর ওজন প্রায় ৩ মেট্রিক টন এবং বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে চার কোটি টাকা।
কাস্টমসের এআইআর শাখার সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম জানান, আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া এলাকার ভার্সেটাইল অটাইঅর লিমিটেড চীন থেকে দুই লাখ ৪১ হাজার ৫০০ পিস হ্যাঙ্গারের ঘোষণা দিয়ে এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। গত ২৮ মে চীনের সাংহাই বন্দর থেকে এমভি এলিয়ন জাহাজে কন্টেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। আমাদানিকারকের মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের জয়িতা ট্রেড করপোরেশন কন্টেইনারটি খালাসের জন্য গত ১ জুন কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। শুল্কায়ন শেষে বৃহস্পতিবার বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ডে কন্টেইনার থেকে কাভার্ড ভ্যানে কার্টনগুলো খালাস শুরু হয়।
পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাস্টমসের এআইআর টিম গিয়ে খালাস বন্ধের নির্দেশ দেয়। এরপর কন্টেইনার নামিয়ে কায়িক পরীক্ষা করা হয়। সেখানে প্রতিটি কার্টনের ভেতরে লুকানো আরও দু’টি করে কার্টন পাওয়া যায়। সেই কার্টনগুলোর প্রতিটির গায়ে গাজীপুরের তুরাগ গার্মেন্টস অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলস লিমিটেড নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্টিকার লাগানো আছে। সেই কার্টনগুলো খুলে সিগারেট পাওয়া যায়।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, হ্যাঙ্গার আমদানির ঘোষণা দেওয়া হলেও কোনো হ্যাঙ্গারই কার্টনে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়ত তুরাগ গার্মেন্টসের নামে কোনো আমদানির ঘোষণা ছিল না। হ্যাঙ্গার শুল্কমুক্ত আমদানি পণ্য। আর বিদেশি সিগারেট শর্তযুক্ত উচ্চশুল্কের আমদানি পণ্য। ঘোষণা দিয়ে এই বিদেশি সিগারেট আমদানি করলে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা শুল্ক নির্ধারণ হত। সেটা ফাঁকি দেওয়ার জন্যই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এই জালিয়াতি করেছে বলেও জানান তারা। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন