শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

পদ্মার পানিতে তলিয়ে গেছে ফসল

মোজাম্মেল হক, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২১, ১২:০৪ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ২৫ জুন, ২০২১

হঠাৎ করে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের পাকা আউশ ধানসহ কৃষি ফসল ডুবে গেছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ট্রলার ভাড়া ও শ্রমিকের চড়া মজুরি যোগাড় করতে না পেরে অনেক কৃষকই উত্তাল পদ্মার ওপার গিয়ে ডুবে যাওয়া ফসল সংগ্রহ করতে পারছেন না।
গতকাল দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় সরেজমিন গেলে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষক এ তথ্য জানান। তারা জানান, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চর বিশ্বনাথপুর, বেথুরী, ধোপাগাথী, উত্তর দৌলতদিয়া, বনভাবৈল, কুশাহাটা, বেতকাসহ বিভিন্ন চরে শতশত বিঘা জমিতে কৃষকরা এ ফসলের আবাদ করেন। দৌলতদিয়া নতুনপাড়া এলাকার কৃষক জিয়া মোল্লা জানান, তিনি পদ্মার ওপার উত্তর ধোপাগাথী চরে ৩ বিঘা বাদাম, ১৫ বিঘা আউশ ধান এবং ২০ বিঘা জমিতে তিলের আবাদ করেছেন। এতে তার প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এর বেশিরভাগ টাকা সুদে নেয়া। বাদাম এবং কিছু তিল তোলা সম্ভব হয়েছে। আউশ ধানও পেকে গেছে। এর মধ্যেই হঠাৎ পানি বেড়ে গিয়ে ক্ষেতে কোমর পানি হয়ে গেছে। শ্রমিক নিয়ে গিয়ে যতটা সম্ভব কাটার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাতে মনে হয় শ্রমিকের বেতন ও ট্রলার ভাড়ার টাকাই উঠবে না। মজিদ শেখের পাড়ার বিধবা সাজেদা বেগম জানান, তার নিজের কোনো জমি নেই। বার্ষিক লিজ নিয়ে ৩ বিঘা জমিতে বাদাম ও আউশধানের আবাদ করেছেন। ৫ মন বাদাম তুলতে পেরেছি। কিন্তু ধানগুলো ডুবে গেছে। বরকত সরদার পাড়ার কৃষক শওকত মোল্লা জানান, কয়েক বছর পর চরে তাদের অনেক জমি জেগে উঠেছে। ধান-দেনা নিয়ে এবার ৪৮ বিঘা আউশ ধান, ১২ বিঘা বাদাম ও ২৪ বিঘা জমিতে তিলের আবাদ করেছি। সাথে ১০ বিঘা জমিতে বাঙি ও ঝিঙের আবাদ করেছি। কিন্তু এবার প্রচন্ড খড়া ও হঠাৎ পানি বেড়ে ফসল ডুবে যাওয়ায় তার অনেক লোকসান হবে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা অভিযোগ করেন, চরে কোন সময় কোন ফসল করলে বা কিভাবে চাষাবাদ করলে তারা লাভবান হবেন সে বিষয়ে তারা কৃষি বিভাগের কোনো সহায়তা পান না। গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নে ৩ জন করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার জায়গায় আছেন মাত্র ১ জন করে। অফিসেও লোকবলের সঙ্কট রয়েছে। ফলে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যঘাত ঘটছে। চরে ডুবে যাওয়া ফসলের বিষয়ে তারা এখনো কোনো খোঁজখবর নিতে পারেননি। তবে, দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে প্রণোদনার জন্য ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট পাঠানো হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন