বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ইসলামের প্রথম মোয়াজ্জিনের শেষ আজান

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২১, ১২:০৩ এএম

মক্কার তপ্ত মরুতে কাফেরদের নির্যাতনকালে যার কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছিল ‘আহাদ আহাদ একম একম’ তার নাম বেলাল ইবনে রিবাহ। তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম মোওয়াজ্জিন এবং তাঁর সর্বশেষ আজান উচ্চারিত হয়েছিল খলিফা হজরত উমর (রা.) কর্তৃক জেরুজালেম (বায়তুল মোকাদ্দাস) বিজয়ের পর ‘মসজিদে আকসায়’। মুসলমানদের এ প্রথম কেবলা আজ ইসরাইলি ইহুদিদের তাÐবলীলার শিকার। সেখানের আজান ধ্বনি-প্রতিধ্বনিত হতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ইসলামের সূচনাকালে মক্কার কাফের মোশরেকদের হাতে যে সব নওমুসলিম কৃতদাস হিসেবে বন্দি অবস্থায় অকথ্য নির্যাতন ভোগ করছিলেন, তাদের মধ্যে বেলাল (রা.) ছিলেন অন্যতম। তাঁর মাতা হাম্মামা (রা.)ও একই সঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) হজরত বেলাল (রা.)-কে মুক্ত করেছিলেন।
হিজরতের পর আজান প্রথা চালু হলে রসূলুল্লাহ (সা.) হজরত বেলাল (রা.)-কে প্রথম আজান দিতে নির্দেশ প্রদান করেন এবং তিনিই প্রথম আজানের ঘোষণা প্রচার করেন ‘আছ ছালাতু জামে আতুন’ বাক্য উচ্চারণ করে। অর্থাৎ নামাজের জন্য সকলে সমবেত হও। আজানের প্রচলিত বাক্যগুলো ওহীর মাধ্যমে চালু হওয়ার পর হজরত বেলাল (রা.)-কে ইসলামের প্রথম মোওয়াজ্জিন নিযুক্ত করেন রসূলুল্লাহ (সা.)। তিনি ছিলেন বলিষ্ঠ ও সুললীত কণ্ঠের অধিকারী। বিভিন্ন সময় রসূলুল্লাহ (সা.) এর আরো তিন জন মোওয়াজ্জিন নিয়োজিত থাকতেন। বেলাল (রা.) এর মর্যাদা ছিল তাদের সকলের ঊর্ধ্বে। হুজুর (সা.) এর জীবদ্দশায় তিনি মোওয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। কথিত আছে যে, রসূলুল্লাহ (সা.) এর ওফাতের পর হজরত বেলাল (রা.) এতই মর্মাহত হয়েছিলেন যে, তিনি আজান দেয়া ছেড়ে দেন এবং মদীনা ত্যাগ করে দামেস্কে গিয়ে বসবাস করতে থাকেন এবং হিজরি ২০ সালে সেখানে ইন্তেকাল করেন।

হিজরি ১৬ সালের কথা, জেরুজালেম প্রথমবারের মতো মুসলমানদের অধিকারে এসে যায়। খলিফা হজরত উমর (রা.) সেখানে পৌঁছেন। বিজয়ের পর সেখানে কয়েকদিন অবস্থান করেন। একদিন নামাজের সময় তিনি বেলাল (রা.)-কে আজান দিতে বলেন। বেলাল (রা.) বললেন: ‘আমি সংকল্প করেছিলাম যে, রসূলুল্লাহ (সা.) এর পর আমি আর কারো জন্য আজান দেব না। কিন্তু আজ এবং একমাত্র আজ আপনার নির্দেশ পালন করব’। এই বলে তিনি আজান দিতে শুরু করেন। এ সময় উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম সকলের রসূলুল্লাহ (সা.)-এর মোবারক যুগ স্মরণ হয়ে যায় এবং তাদের মধ্যে দারুণ আবেগের সৃষ্টি হয়। আবু ওবায়দা (রা.) এবং মোআজ ইবনে জাবাল (রা.) কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে পড়েন। হজরত উমর (রা.) বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং দীর্ঘক্ষণ তার এ অবস্থা বিদ্যমান ছিল।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
মনিরুল ইসলাম ২৬ জুন, ২০২১, ১:১০ এএম says : 0
দ্বীনের জন্য ত্যাগ স্বীকার, শারীরিক-মানসিক, নির্যাতন সহ্য করা এবং মৃত্য নিশ্চিত জেনে ও সামনে এগিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। তবে এদের মাঝে হজরত বেলাল রা: অন্যতম। কারণ, ইসলাম গ্রহণের কারণে তাকে যে কঠিন অগ্নি পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছিল, অন্য কাউকে এমন বিপদের সম্মুখীন হতে হয়নি।
Total Reply(0)
তানিম আশরাফ ২৬ জুন, ২০২১, ১:১০ এএম says : 0
প্রাথমিক যুগে অমানবিক নির্যাতন সহ্য করে ও এক আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন হযরত বেলাল (রা.)
Total Reply(0)
তারেক আজিজ ২৬ জুন, ২০২১, ১:১১ এএম says : 0
আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনার অপরাধে বেলাল রা:কে যখন এভাবে গলায় রশি বেঁধে নেয়া হতো, এই কষ্ট তার কাছে খুব মজাদার লাগত। তিনি তখন ঈমানের প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করতেন আর জান্নাতি সঙ্গীত গাইতেন আহাদ, আহাদ। আল্লাহ এক-অদ্বিতীয়। তিনিই আমার রব। তিনিই আমার সব। অবিরাম চলতে থাকত তার মুখের এই সুমধুর সুর।
Total Reply(0)
কুদ্দুস তালুকদার ২৬ জুন, ২০২১, ১:১২ এএম says : 0
আল্লাহ তায়ালা তাঁকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন।
Total Reply(0)
গাজী ফজলুল করিম ২৬ জুন, ২০২১, ১:১৪ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতো ঈমান ও ইসলামের ব্যাপারে অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)
Safiullah ২৬ জুন, ২০২১, ৬:১৮ এএম says : 0
Allah hazrat Belal radiallah k jannater su_uccu makam Dan korun r tar ucilay ummate mohmmadi k hedayete kamila Dan kore jannatider shathe list vukto korun. Amin.
Total Reply(0)
মো:+শফিউর+রহমান ২৬ জুন, ২০২১, ১০:০৮ এএম says : 0
আমাদের প্রিয় নবীজির প্রিয় সাহাবি ছিলেন বিলাল (র:) । পৃথীবির সৃষ্টি কর্তার হুকুম তাহারাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করে ছিলেন । আমরা শয়তানের দোশর হয়ে দুনিয়াতে দাপট নিয়ে নিজের বাহাদুরি দেখাইতেছি অথছ বুজতে পারতেছিনা চোখ বুজলে সব অন্ধকার । কিন্তু সাহাবিরা মহান আল্লাহর ভয়ে আল্লাহর দেনে মগ্ন থাকতেন তাহার বিতর হয়রত বিলাল (র:) একজন ছিলেন । আমরা মহান আল্লাহর কছে পানা চচ্ছি যেন তাদের পথ অনুশরন করে চলতে পারি ।
Total Reply(0)
Md Monir Bhuiyan ২৬ জুন, ২০২১, ১১:১৩ এএম says : 0
ইসলামের ইতিহাস ও ঘটনাবলী উপস্থাপনায় দৈনিক ইনকিলাব একটা প্রসংশনীয় প্রত্রিকা।
Total Reply(0)
কে,এম বদিউজ্জামান ২৮ জুন, ২০২১, ৬:৩৩ পিএম says : 0
হযরত বিলাল রা এর সাথে জান্নাত দান করুন
Total Reply(0)
কে,এম বদিউজ্জামান ২৮ জুন, ২০২১, ৬:৩৩ পিএম says : 0
হযরত বিলাল রা এর সাথে জান্নাত দান করুন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন