পবিত্র কোরআনে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুমিনদেরকে বারবার বলেছেন ধৈর্য ও সবর অবলম্বন করতে। চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করেছেন, ইন্নাল্লাহা মাআস সাবিরীন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। (সূরা বাকারা : আয়াত ১৫৩)। আমাদের সমাজে অসংখ্য নজির আছে যে, একবেলা ভাত খেয়ে, একটি কাপড় পরে, সামান্য ছাদের নিচে মাথা গুঁজে কোটি নারী ইজ্জত সম্মান, পর্দা, পবিত্রতা নিয়ে জীবনযাপন করেন।
ধর্মপ্রাণ তরুণীরা কঠোর সাধনার মাধ্যমে খেয়ে না খেয়ে সততা পবিত্রতা ও উচ্চ আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে এ সমাজে যুগ যুগ ধরে মাথা উঁচু করে টিকে আছে। তারা ঈমান এনেছে, নামাজ পড়ে, হালাল খায় আর দরদী মন নিয়ে সৎকর্ম করে। সর্বোপরি এরা ধৈর্যশীল। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, পুরুষ ও নারীদের মধ্য থেকে যে সব ঈমানদার নেক আমল করবে তাদের আমি উত্তম বিনিময় দান করব। (সুরা নাহল : আয়াত ৯৭)।
ইসলামে ধৈর্য তিন প্রকার। এক. ধৈর্য ধরে আল্লাহর ইবাদত ও সৎকাজে লেগে থাকা। দুই. আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজ, অন্যায় অশ্লীলতা পাপাচার থেকে ধৈর্যের সাথে বিরত থাকা। তিন. জ্বরা, ব্যাধি, মৃত্যু, অভাব ও বিপদে ধৈর্য ধারণ করা। ধৈর্য ধরা খুবই কঠিন কাজ। শয়তান ও কুপ্রবৃত্তির আহ্বানকে অস্বীকার করে নিজেকে নেকির পথে ন্যায়ের পথে ধৈর্যের পথে মজবুত রাখা একটি জীবনব্যাপী যুদ্ধের নাম।
জীবনের যাত্রা পথে দুঃখ কষ্ট বরণ করা কিন্তু তবুও লোভ লালসা দুর্নীতি ও পাপাচারের পথে না যাওয়া- এক বিশাল মাপের ধৈর্য। এজন্যই বলা হয়, সবুরে মেওয়া ফলে। ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয়। অধৈর্য বা অস্থিরতা মানুষকে ধ্বংস বিব্রত ও লজ্জিত করে। বলা হয়, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু। লোভে পড়ে বেঘোরে ঈমানহারা মৃত্যু জাহান্নামের কারণ হয়।
মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ জেনেছে যে, স্বামী সউদী প্রবাসী। স্ত্রী নিশ্চয়ই বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি অভাবি নন। সুন্দরী এ মহিলা নিজে আরো বেশি সম্পদ ও ভোগ বিলাসের লোভে দেহ ব্যবসায় নামেন। বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন ক্ষমতাসীন লোকের সাথে। এর পর নেটওয়ার্ক বড় করতে থাকেন। হয়ে যান চরিত্রহীনাদের সর্দারনি। পাপাচারি পুরুষের লালসার উস্কানি ও যোগানদাতা। অমানুষ হয়ে পড়েন এ নারী। নিজের পেটের দুই প্রিয়দর্শিনী নিষ্পাপ সন্তানকেও তার ক্লায়েন্টদের কাছে যেতে বাধ্য করেন। লোভ তাকে অন্ধ করে দেয়।
স্বামীর আয় ও নিজের ধৈর্যের পরিবেশ তার পছন্দ হয়নি। তিনি লোভ লালসা ও কামনার দুষ্টচক্রে জড়িয়ে পড়েন। দীনের আহ্বানে, ধর্মীয় মনমানসিকতায়, তালিম ও ইবাদত-বন্দেগির পরিবেশে তিনি নিজেকে আটকে রাখেননি। যেসব ব্যবস্থায় তার চারপাশের কোটি নারী সুন্দর নিরাপদ পবিত্র ও আত্মসম্মানের জীবন যাপন করছেন, ধৈর্য তাদের জান্নাতের পথ দেখাচ্ছে।
সম্প্রতি নিজ মেয়ের হাতে খুন হওয়া এমন এক নারী আজ কবরে রয়েছেন। গণমাধ্যম ও পুলিশসূত্রে জানা গেছে, একসময় এ নারীর বন্ধু নামক লম্পট পুরুষ তার মেয়ের সাথে সম্পর্ক করে এবং তাদের বিয়ে হয়। উশৃঙ্খল লোভী ও পাপাচারীদের যেমন বন্ধুত্ব, পাপ, পুণ্য, বিয়ে, ব্যাভিচার, স্ত্রী, কন্যা, শাশুড়ি বলতে কোনো কিছুরই পার্থক্য থাকে না। শয়তানের পূর্ণ গিরেফতে চলে গিয়ে তারা নিজেরাও শয়তানী চরিত্রের হয়ে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন