শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

স্বামী মা বাবা ও বোনকে খুন করল যে নারী-২

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৬ এএম, ২৯ জুন, ২০২১

মিডিয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য মতে, যৌনতার পাশবিকতার চোখে মা ও মেয়েকে সমানভাবে দেখার ফলে সবাই মিলে খুন করে ফেলে ওই মায়ের বন্ধু ও মেয়ের স্বামীকে। চরিত্রহীন প্রভাবশালী ও বিত্তবান পুরুষ সমাজে কিশোরী তরুণী নারী সরবরাহকারী এই লম্পটকে। যারা হত্যা করে বলে মামলা হয় তারা সে ধৈর্যহারা লোভী ও তার মাধ্যমে দেহ ব্যবসায় যুক্ত এবং দুনিয়ার পাপ পঙ্কিলতা কলুষতায় তিতি বিরক্ত পরিবার, বিশেষ করে এই খুনী কন্যা। এ ভাবেই কন্যাটি একবার স্বামী খুনের দায়ে জেল খাটে।

দ্বিতীয়বার আরেক লোককে বিয়ে করে এবং বাবা মায়ের কাছে সম্পত্তি দাবি করে। ধারণা করা হয় ছোট বয়সে মা তাকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করিয়ে যে অর্থ সম্পদ জড়ো করেন, তার বড় ভাগটি নগদে পাওয়ার জন্যই এ জেলখাটা মেয়ে বারবার ঝগড়াঝাটি করতেন। সর্বশেষ সে হয়তো বাবা মার ওপর চাপ দিতেই কথা তুলে দেয় যে, তার বর্তমান স্বামীর সাথে তার ছোট বোনের পরকীয়া আছে। মা চক্রান্ত করে তার সংসার ভাঙছে। আর এ কাজটির সাথে বাবাও জড়িত। উল্লেখ্য যে, ছোট বোনকেও তো তাদের মা অর্থবিত্তের লোভে দেহব্যবসায় লাগাতেন।

আমাদের বাংলাদেশে এমন ধর্ম, সমাজ ও মানবতাবিরোধী ঘৃন্য জীবনাচার কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়, হতে পারে না। অনুতাপ, অনুশোচনা, আত্মজাগরণ থেকে কিংবা নিজের জীবন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার দুঃখ কষ্ট ও খেদে এই বড় মেয়েটি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে, হাত পা মুখ বেধে নিজের বাবা মা ও ছোট বোনটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। স্বামী সন্তানকেও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে রাখে। তাদেরকে সে হত্যা করেনি। নিজেও আত্মহত্যা করেনি। ঠাণ্ডা মাথায় নিজেই আবার পুলিশকে ফোন করে বলে, তিনজনকে খুন করেছি। আপনারা তাড়াতাড়ি আসুন। দেরি করলে বাকি সবাইকে খুন করব। পুলিশ এসে এ আত্মস্বীকৃত খুনী নারীকে গ্রেফতার করে। যিনি আগে তার প্রথম স্বামীকে হত্যার দায়ে বহু বছর জেল খেটেছেন।

বাংলাদেশের রাজধানীতে এমন ঘটনা কী ইঙ্গিত দেয়। আমাদের সমাজ ধ্বংসের পথে কত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বলে ধারণা হয়। রাষ্ট্রীয় আইনে বর্ণিত সবগুলো অপরাধ শাস্তিযোগ্য হলেও নির্বিঘ্নে বছরের পর বছর এখানে পরকীয়া, দেহব্যবসা, নারী সাপ্লাই, নারী শিশু নির্যাতন, অযাচার, বেহায়াপনা, অসামাজিকতা, নোংরামি আরামছে চলেছে। গণমাধ্যম, পুলিশ প্রশাসন, সমাজ ইত্যাদি কেউই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। শেষ পর্যন্ত লোভ, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা, জিঘাংসা, মনোবৈকল্যের মিশ্র ও জটিল প্রতিক্রিয়া তিনটি পরিবারকে মৃত্যু, ধ্বংস ও মর্মান্তিক নিয়তি উপহার দিলো।

বলতে দ্বিধা নেই যে, একমাত্র ইসলামী আইন বিচার ও অনুশাসনই পারত এ ধরনের সমস্যাকবলিত ভাগ্যাহত পরিবারগুলোকে প্রথম দিন থেকেই সুন্দর ও সফল জীবন উপহার দিতে। কিন্তু লোভ লালসা উচ্চাভিলাষ অনৈতিক ভোগ বিলাস যখন মানুষকে অন্ধ ও অধীর বানিয়ে ফেলে, তখন তাদের আর ধর্মের কথা শোনার সময় বা রুচি থাকে না। ফলে দুনিয়াতে তারা আকছার দুঃখ বেদনা হতাশা ও অশান্তির আগুনে জ্বলে পুড়ে মান সম্মান সুখ শান্তি এবং জীবন পর্যন্ত হারায়।

কোনো কারণে আল্লাহ বিশেষ ক্ষমার ব্যবস্থা না করলে এমন লোকেদের আখেরাত বরবাদের কথা তো বলাই বাহুল্য। আর ইসলামী আইন, শাসন, বিচার ও সমাজ ব্যবস্থার কথা তো বেদীন সমাজে বলাও এখন অপরাধ। অথচ এসব সমস্যা ও পরিণতি নিয়ন্ত্রণ এবং দুরীকরণে ইসলামী জীবন ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। কারণ, ইসলাম মানবজাতির মনস্তত্ত্ব অনুযায়ী শিক্ষা প্র্যাকটিস মোটিভেশন থেকে শুরু করে সমস্যার শিকড় পর্যন্ত আধ্যাত্মিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিচারিক দিকের সমন্বয়ে বাস্তব ও সযত্ন সমাধান দিয়ে থাকে। দুনিয়ার আর কোনো পলিসি বা সিস্টেম এসব সমস্যার সমন্বিত সমাধান দিতে কোনোদিনই সক্ষম নয়।

বিশ্বব্যাপি অপরাধ জগতে এখন সীমাতিক্রম চলছে। সভ্য অসভ্য কোনো জনপদই নিরাপদ নয়। অন্যায় অনাচার জুলুম পাপাচার অশ্লীলতা বেহায়াপনা মাদক সন্ত্রাস ইত্যাদিতে মানবজাতি ধ্বংসের দ্বরাপ্রান্তে উপনীত হলেও সমাধানের পথে আসতে তারা উদার নয়। ইসলামী মূল্যবোধ, মোটিভেশন, আইন, বিচার, শাসন ও দীনি তত্ত্বাবধানকে তারা গ্রহণ করতে নারাজ। শয়তান তাদের অন্তকরণে মোহর মেরে দিয়েছে। তাদের চোখে পর্দা, কানে তালা, মুখে কুলুপ, চিন্তা চেতনা ও বোধে প্রতিবন্ধিতা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Shunno Manob ২৯ জুন, ২০২১, ৪:৪৯ এএম says : 0
৩ খুনের আসামি ৪ দিন রিমান্ড আর গাড়ি পোড়ানোর মামলায় ২১ দিনের রিমান্ড
Total Reply(0)
Titu Barua ২৯ জুন, ২০২১, ৪:৪৯ এএম says : 0
কোন মানুষ বিনা কারণে এমন করতে পারেনা নিশ্চই তিক্তাতার শেষসীমা অতিক্রম হয়ে গিয়েছিল।
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম ২৯ জুন, ২০২১, ৪:৫০ এএম says : 0
নিশ্চয়ই এই অপরাধের পিছনে,বিরাট কোনো কষ্ট লুকিয়ে আছে। িইসলামের বিধিনিষেদ মানলে এই অবস্থা হতো না।
Total Reply(0)
দেওয়ান মাহদী ২৯ জুন, ২০২১, ৪:৫০ এএম says : 0
ইসলামের আদর্শ ও মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুতির কারণেই তরুণ ও যুব সমাজ নৈতিক অবক্ষয়ের চোরাবালিতে হারিয়ে যাচ্ছে
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম ২৯ জুন, ২০২১, ৪:৫০ এএম says : 0
নৈতিক অবক্ষয় পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে অশান্তি ডেকে আনে। আমাদের সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের যে মহামারি চলেছে, তা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো আল্লাহর দেওয়া জীবনবিধান ইসলাম।
Total Reply(0)
হিমালয় হিমু ২৯ জুন, ২০২১, ৪:৫১ এএম says : 0
রাগের কারণে পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়, বিভিন্ন গোষ্ঠী ও শ্রেণীর মধ্যে সঙ্ঘাত হয়। বেশির ভাগ লোকই রাগী। অনেকে রাগী হওয়া ভালো মনে করেন। অথচ আল্লাহ তায়ালা রাগ হজম করতে বলেছেন, নিয়ন্ত্রণ করতে বলেছেন। রাগ করা ভালো হলে আল্লাহ তা বলতেন না।
Total Reply(0)
Joy ২৯ জুন, ২০২১, ৫:২৩ এএম says : 0
Shomajta to kharap hobei. Karon awami government holo Hindu premi ebong muslim biddeshi. Awami government er Islamic Katha, niom, ain Kanon bondho korte use pore legeche.
Total Reply(0)
Belal ২৯ জুন, ২০২১, ১১:৫৮ এএম says : 0
৩ খুনের আসামি ৪ দিন রিমান্ড আর গাড়ি পোড়ানোর মামলায় ২১ দিনের রিমান্ড
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন